কলকাতা : স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নাস্থলের আশপাশে বসানো হল সিসি ক্যামেরা । জুনিয়র চিকিৎসকদের ধর্নাস্থলের আশপাশে বসানো হল ১৪টি সিসি ক্যামেরা।
ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানা থেকে বেনফিশ মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন প্রান্ত মুড়ে ফেলা হয় নজরদারি ক্যামেরায়।
মুখ্য়মন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক ঘিরে বৃহস্পতিবার রাত অবধি চরম স্নায়ুযুদ্ধ চলে। শেষ অবধি রাজ্য় সরকার লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবি মেনে না নেওয়ায় বৈঠকে রাজি হননি জুনিয়র ডাক্তাররা। নবান্ন সভাঘরের দোরগোড়া থেকে, বৈঠক না করেই ফিরে আসেন তাঁরা। তার ২৪ ঘণ্টা পরই, শুক্রবার দুই ব্য়ক্তির ফোনে কথোপকথনের অডিও (সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ) পোস্ট করেন কুণাল ঘোষ। সেখানেও নবান্নর বৈঠকের প্রসঙ্গ শোনা গেছে।
কুণাল বলেন, “ভয়ঙ্কর চক্রান্তের অভিযোগ আসছে। বলা ভাল, একটা ভয়ঙ্কর চক্রান্ত ফাঁস হচ্ছে। সেটি হচ্ছে, গতকাল যখন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে, যখন মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক সংক্রান্ত যে প্রক্রিয়াগুলি চলছিল, সেই সময় যখন তারপরে…যখন বৈঠকটি যে কোনও কারণেই হোক হল না…যখন জুনিয়র ডাক্তাররা প্রেস কনফারেন্স করছিলেন…সেই সময় দু’টো-তিনটে শিবির একটা ভয়ঙ্কর প্লট…রাজ্য সরকারকে, তৃণমূল কংগ্রেসকে, মুখ্যমন্ত্রীকে বিড়ম্বনায় ফেলতে হবে। হামলা করতে হবে জুনিয়র ডাক্তারদের সল্টলেকের ধর্নামঞ্চের উপর। কলকাতার ছেলে নয়, বাইরের ছেলেদের এনে হামলা করে দিতে হবে। যাতে গোটা দায়টা সরকারের ঘাড়ে চাপে। কারণ, বৈঠকটি কাল হয়নি। জুনিয়র ডাক্তাররা ফিরে আসছেন। এই সময়ে যদি মারা যায়, হামলা করা যায় তাহলে এর পুরো দায়টা রাজ্য সরকারের উপর চাপবে। এই ভয়ঙ্কর প্লট যাঁরা করেছেন, তাঁদের মধ্যে বামপন্থী একটি যুব সংগঠন আছে এবং অতি বাম সংগঠন বলে পরিচিত একটি সংগঠনের একজন এরমধ্যে রয়েছেন। ঘটনাস্থলে বিজেপির যুবনেতাদের একটা অবাধ যাতায়াত তৈরি হয়েছে। ঠিক কী কথোপকথন… ওদের শিবির সূত্রেই এই খবরগুলো বেরিয়ে চলে আসছে। তারাও দিয়ে দিচ্ছেন। সবাই যে এই গন্ডগোল-চক্রান্ত চাইছেন তা নয়। ভয়ঙ্কর…নির্দিষ্টভাবে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলার কথা বলা হচ্ছে।” অডিও ক্লিপটি শোনান কুণাল (সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ)। সেখানে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘সাহেব অর্ডার করেছেন উড়িয়ে দেওয়ার জন্য।’ অন্যজন তার উত্তরে বলেন, ‘অর্ডার করলে করে দে।’
এই অডিও ক্লিপ সামনে এনে জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নাস্থলে বহিরাগত প্রবেশ বন্ধের দাবি করেন কুণাল ঘোষ। এরপরেই সক্রিয় হয় বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট। তাদের তরফে বলা হয়, এনিয়ে পুলিশ অফিসাররা স্বতঃপ্রণোদিতভাবে একটি FIR রুজু করছেন। এই এফআইআর অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনারেটের তরফে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থানস্থলে সিসি টিভি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলা হয়। সিনিয়র অফিসারদের মোতায়েন বাড়ানো হচ্ছে। তারপরই এই প্রক্রিয়া শুরু করে দেয় পুলিশ। সেইমতো বসেও গেছে সিসি টিভি ক্যামেরা।
এদিকে অডিও ক্লিপের উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট। তাদের তরফে বলা হচ্ছে, দক্ষিণ কলকাতার গড়ফা থানার হালতু গার্ডেন রোড এলাকা থেকে সঞ্জীব দাস নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে সন্ধের পর নিয়ে এসে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করে কমিশনারেটের পুলিশ আধিকারিকরা। এরপরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশের স্ক্যানারে আরও কয়েকজন রয়েছেন। তাঁদের গতিবিধি লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
আরও দেখুন