কলকাতা: চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনার দিন আর জি কর (RG Kar News) মেডিক্যালের সেমিনার হলে কী করছিলেন চিকিৎসক সুশান্ত রায়? এই প্রশ্ন ঘিরে উঠে এসেছে নানান সম্ভাবনার কথা। তৈরি হয়েছে বিতর্ক। আর এই আবহেই সেমিনার রুমে নিজের উপস্থিতি ঘিরে অবস্থান স্পষ্ট করলেন সুশান্ত রায়। বললেন, তিনি শুধুমাত্র ওই হলের পিছন দিকে ১০-১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিচ্ছু ছুঁয়েও দেখেননি। আর তার পরই গিয়েছিলেন আর জি কর মেডিক্যালের অধ্যক্ষের ঘরে।
সেমিনার হলে কী করছিলেন? স্বাস্থ্য দফতরে চালু শব্দ ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র তিনিই নাকি ‘মাথা’। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সহ সভাপতি, উত্তরবঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের প্রাক্তন OSD। সেই সুশান্ত রায়ই এবার নিজেই স্বীকার করে নিলেন, আর জি কর মেডিক্য়ালে তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধারের দিন, তিনি সেমিনার হলে ছিলেন। কিন্তু, এখানেই প্রশ্ন উঠেছে ‘প্লেস অফ অকারেন্সে’ কী করছিলেন সুশান্ত রায়? তিনি আর জি মেডিক্য়ালের সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত নন। তাঁর বাড়ি জলপাইগুড়িতে। তাহলে ঠিক ওইদিনই তিনি আর জি কর মেডিক্য়ালে এলেন কেন? যে সেমিনার হলে মৃতদেহ উদ্ধার হয়, সেখানেই বা গেলেন কেন? এইসব প্রশ্ন ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। সুশান্ত রায়ের সদস্যপদও খারিজ করে IMA-র রাজ্য শাখা। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। এই বিতর্ক নিয়েই এবার মুখ খুললেন তিনি। স্বীকার করলেন দেহ উদ্ধারের দিন সেমিনার রুমে তিনি গিয়েছিলেন। সুশান্ত রায় বলেন, “ওখানে প্রচুর পুলিশ আধিকারিকরা ছিলেন, অনেক চিকিৎসকরাও মনে হয় ছিলেন, আমরা একদম পিছন দিকে যেখানে…হলঘরটা অনেক লম্বা ছিল। আমরা একদম পিছনে জাস্ট দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিছুই টাচ করিনি আমরা। ১০-১২ মিনিট, ১০-১৫ মিনিট ওখানে থেকে, ওখান থেকে নীচে নেমে তারপর প্রিন্সিপ্যালের ঘরে গিয়েছিলাম। ওখানে কর্ডন করা ছিল। কর্ডনের ভিতরে আমরা ছিলাম না।”
চিকিৎসক শ্যামাপ্রসাদ দাস উত্তরবঙ্গ মেডিক্য়াল কলেজ থেকে পাস করার কয়েক বছর পর,এখান থেকেই এমবিবিএস পাস করেন সুশান্ত রায়ও। বরাবরই এস পি দাসের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তিনি। আর তাঁদের হাত ধরেই না কি উত্তরবঙ্গ লবির রমরমা। অভিযোগ এই উত্তরবঙ্গ লবিই সরকারি স্বাস্থ্য়ব্য়বস্থাকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। সুশান্ত রায়ের পৈতৃক বাড়ি কলকাতায় ঢাকুরিয়াতে। তিনি থাকেন জলপাইগুড়িতে। জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন সুশান্ত রায়। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে তাঁর দাপট বাড়তে থাকে। করোনার সময় স্বাস্ত্য দফতরের উত্তরবঙ্গের ওএসডি নিয়োগ করা হয়েছিল তাঁকে। চিকিৎসকের কথায়, “পশ্চিমবাংলায় চিকিৎসা করতে গেলে যেকোনও চিকিৎসকের মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশন জরুরি। আমরা দেখেছিলাম, সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম গিয়েছিলাম বিকেলবেলার দিকে। যখন আমাদের কাউন্সিলের একজনের এভাবে মৃত্যু হয়েছে, এবং আমরা দেখিনি এই জিনিস। সেই সময় অনন্তপক্ষে মেডিক্যাল কাউন্সিলের একটা টিম যাক, গিয়ে ওখানে যারা আধিকারিকরা আছে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলুক। যা যা করার, ন্যায়সঙ্গতভাবে যেন সেই সেই গুলো করা হয়।”
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: ‘থ্রেট কালচার’ এবং ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র প্রভাব, কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের
আরও দেখুন