কলকাতা: আর জি করকাণ্ডের (RG Kar News) তদন্তে, প্রথম দিন থেকে যে তথ্য়প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে, তার কী হবে? সিবিআই যথাযথভাবে নজর দেবে তো? বিষয়টি বিশবাঁও জলে চলে যাবে না তো? গতকাল দোষী সঞ্জয় রায়ের আমৃত্য়ু কারাদণ্ডের নির্দেশের পর বিভিন্ন মহলে উঠছে এই প্রশ্ন।
তথ্য়প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ: আর জি কর মেডিক্য়ালে, তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের মামলায় সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্য়স্ত করে আমৃত্য়ু যাবজ্জীবনের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। কিন্তু প্রথম দিন থেকে যে অভিযোগ উঠছে, অর্থাৎ তথ্য়প্রমাণ লোপাটের, তার কী হবে? তথ্য় প্রমাণ লোপাটের দিকটিতে সিবিআই যথাযথভাবে নজর দেবে? তথ্য় প্রমাণ লোপাটের বিষয়টি বিশবাঁও জলে চলে যাবে না তো? আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে সিবিআই গ্রেফতার করেছিল, তথ্য়প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে। কিন্তু শেষ অবধি সিবিআই গ্রেফতারের ৯০ দিনের মধ্য়ে চার্জশিট দিতে না পারায়, দুজনেই জামিন পেয়ে যান। নিহত তরুণী চিকিৎসকের পরিবারের আইনজীবী অমর্ত্য় দে বলেন, “তদন্ত যাঁরা করেছেন, তদন্তকারী সংস্থা, তাদের কিছু পার্টেতে ঘাটতি থেকে গেছে। আরও কিছু ব্য়ক্তির জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত ছিল। আরও কিছু তথ্য় সংগ্রহ করা উচিত ছিল। যেটা এলে আজকে হয়তো জায়গাটা অন্য়রকম হত। এখানে বলে রাখি, সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট ওরা (CBI) কিন্তু এখনও দিতে পারেনি।”
প্রশ্ন উঠছে, সিবিআই কবে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেবে? তাতে তথ্য়প্রমাণ লোপাটের অভিযোগের বিষয়টির ওপর কি গুরুত্ব দেওয়া হবে? নির্দিষ্টভাবে কে বা কারা তথ্য়প্রমাণ লোপাটের সঙ্গে যুক্ত তার উল্লেখ কি সিবিআই করবে? চিকিৎসক তাপস প্রামাণিক বলেন, “সঞ্জয় রায় একা ক্রিমিনাল নয় এই কেসে। এই কেসে একাধিক ক্রিমিনাল জড়িত যেটা DNA অ্য়ানালিসিস রিপোর্ট বলছে এবং CCTV-তেও বেশ কিছু অসঙ্গতি দেখা গেছে এবং ক্রাইম সিন ওটা নয়, ক্রাইম সিন কোনটা, সেটাকেও CBI-কে খুঁজে বের করতে হবে।” চিকিৎসক উৎপল বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলছেন, “প্রত্য়ক্ষ, অপ্রত্য়ক্ষভাবে জড়িত তথ্য়প্রমাণ লোপাটের সঙ্গে যারা যুক্ত, বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যারা যুক্ত এবং একাধিক ব্য়ক্তি যে যুক্ত রয়েছেন এটা আজকে আর আমাদের কথা নয়, সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স রিসার্চ ল্যাবরেটরি তাদের রিপোর্ট হচ্ছে যে একাধিক ব্য়ক্তির ওখানে থাকার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।”
২৫ সেপ্টেম্বর, শিয়ালদা কোর্টে নথি পেশ করে CBI দাবি করেছিল, হেফাজতে থাকাকালীন দু’জনকে (সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার OC) জেরা করে বেশ কিছু তথ্য় উঠে এসেছে। যার থেকে মনে হচ্ছে টালা থানায় বসে এই মামলা সংক্রান্ত (চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুন) বেশ কিছু ভুয়ো নথি তৈরি হয়েছে কিংবা নথি পাল্টানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির তরফে আদালতে আরও দাবি করা হয়েছিল তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের মধ্যে কথা হয়েছিল। দুজনের মধ্যে কোনও যোগসাজশ থাকতে পারে। আর জি কর-কাণ্ডে বৃহত্তর চক্রান্ত থাকতে পারে। কিন্তু আদালতে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের দাবি তুললেও, পরে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্য়ে এ নিয়ে চার্জশিটই পেশ করেনি সিবিআই। এখন প্রশ্ন সিবিআই কবে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেবে, আর তাতে কী থাকবে?
আরও পড়ুন: RG Kar News: বারবার ফাঁসানোর অভিযোগ, কেন কারও নাম নিল না সঞ্জয়? উঠছে প্রশ্ন
আরও দেখুন