<p><strong>উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা :</strong> ৯ অগস্ট থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি, ৬ মাস পূর্ণ আর জি কর কাণ্ডের। আজ অভয়ার জন্মদিন। জন্মদিনে মেয়ের মৃত্যুর বিচার চেয়ে পথে নামছেন অভয়ার মা-বাবা। মেয়ের মৃত্যুর বিচার চেয়ে মিছিলে হাঁটবে নিহত চিকিৎসকের পরিবার। দুপুর ৩টেয় কলেজ স্ট্রিট থেকে আর জি কর পর্যন্ত মিছিলের ডাক অভয়া মঞ্চের। বিকেল ৫টায় বিচারের দাবিতে আর জি কর মেডিক্যালে মূল অনুষ্ঠান। </p>
<p>জন্মদিনে মেয়ের মৃত্যুর বিচার চেয়ে পথে নামছে অভয়ার পরিবার। ‘মেয়েকে ধর্ষণ-খুনের বিচার না মেলা পর্যন্ত লড়াই চলবে’, মেয়ের জন্মদিনে অঙ্গীকার সন্তানহারা মা-বাবার। ‘আগের লড়াইটা ছিল, মেয়ের স্বপ্ন পূরণের, ওকে ডাক্তার বানানোর। এখন লড়াই করছি, মেয়ের ধর্ষণ-খুনের বিচারের জন্য। আর জি কর মেডিক্যালে সুযোগ পাওয়ায় খুব খুশি হয়েছিল অভয়া। এখন আর জি কর নামটা শুনলে আতঙ্ক লাগে। ওই আর জি কর ঘাতক আর জি কর। কল্যাণীতে গাইনোকোলজিতে ভর্তি করেছিলাম। ওর বিশেষ পছন্দ ছিল না। এখন মনে হয়, আর জি করে ভর্তি না করলে মেয়েটা বেঁচে থাকত। আন্দোলন যতদূর নিয়ে যেতে হয় যাব, বিচার ছিনিয়ে আনবই’, মেয়ের জন্মদিনে শপথ সন্তানহারা মা-বারার। </p>
<p>আজ ৯ ফেব্রুয়ারি, অভয়ার জন্মদিন। সব ঠিক থাকলে ৩১ পেরিয়ে ৩২- এ পা দিতেন তরুণী চিকিৎসক। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে তা হয়নি। আগের বছরগুলোয় অভয়া কীভাবে কাটাতেন নিজের জন্মদিন?</p>
<p>আর জি করে নিহত পড়ুয়া চিকিৎসকের মা জানিয়েছেন, এক বছর বয়সে ধুমধাম করে পালন করা হয়েছিল তাঁর জন্মদিন। বাড়ির নিয়ম অনুসারে অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠান না হওয়ায় অভয়ার এক বছরের জন্মদিনেই হয়েছিল যাবতীয় আয়োজন। তারপরের বছর গুলোয় অত ধুমধাম না হলেও বাড়িতে ঘরোয়া ভাবে পালন হত মেয়ের জন্মদিন। অভয়ার ঠাকুমার আশীর্বাদ করতেন ধারন, দুর্বা দিয়ে। মায়ের হাতের গুড়ের পায়েস ছিল অভয়ার বড় পছন্দের। ধরা গলায় তাঁর মা বলেছেন, ‘আমার হাতের পায়েস খেতে খুব ভালবাসত। ওই পায়েস আর কোনওদিনই বানাবো না।’ মেয়ের জন্মদিন নিয়ে উৎসাহ থাকত তাঁর বাবারও। বারবার জিজ্ঞেস করতেন মেয়ে কখন বাড়ি ফিরবেন। জন্মদিনের দিন দিনের বেলায় বাইরে থাকলেও রাতে বাড়িতেই থাকতেন তিনি। মা-বাবা কিনে আনতেন নতুন জামা। অনেকেই কেক নিয়ে আসতেন। তবে বাবার আনা কেকই ছিল অভয়ার কাছে সবচেয়ে স্পেশাল। অভয়া বলতেন, বাবার আনা কেক তিনি একাই খাবেন, কাউকে যেন না দেওয়া হয়। </p>
<p>এই প্রথম জন্মদিনে সন্তান নেই। রূঢ় বাস্তব হল আর কোনওদিনই থাকবেন না। এ যন্ত্রণা আজীবন বয়ে বেড়াতে হবে অভয়ার মা-বাবাকে। তাঁরা বলছেন, ‘যতদিন বাঁচব, যতবার জন্মদিন আসবে, ও আর থাকবে না আমাদের সঙ্গে। ও গাছ ভালবাসত। প্রতি বছরই ওর জন্মদিনে গাছ লাগাই। এবারও এনেছি। ও বলেছিল সব রঙের বোগেনভেলিয়া আছে। কমলা রঙের নেই। ওটাই এনেছি। ওর জন্মদিনের দিন লাগাবো। কিন্তু ও তো আর দেখতে আসবে না।’ </p>
Source link
‘আমার হাতের গুড়ের পায়েস খেতে খুব ভালবাসত, ওই পায়েস আর কোনওদিনই বানাতে পারব না’
