কলকাতা: হাসপাতালে টানা ডিউটির মাঝে নেই রেস্টরুম। এমনকি জামাকাপড় বদলানোর জায়গা নেই ! এখানেই শেষ নয়, মেল ওয়ার্ডে ভিজিট করতে হয় নিরাপত্তাহীনভাবে, এদিন মহিলা চিকিৎসক ‘খুনের’ ঘটনার পর ভুরিভুরি অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে।
প্রতিবাদীদের একজন বলেন, ‘আমাদের দাবি যেনও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। কারণ যিনি ধর্ষিত হয়েছেন, ঘটনাটি ঘটেছে রাতের বেলায়। এটা কী করে হয় যে, একটা হাসপাতালে কোনও নিরাপত্তা নেই যে, রাতের বেলায় একজন মহিলা চিকিৎসক ধর্ষিত হয়ে ও খুন হয়ে পড়ে আছে। পরের দিন সকালে ওনার দেহ উদ্ধার হয়েছে।আমাদের যতক্ষণ না নিরাপত্তা বাড়ানো হবে, ততক্ষণ আমরা প্রতিবাদ চালাতে থাকব।’
এদিন কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসককে খুনের প্রতিবাদে কলকাতা ও জেলায় জেলায় চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের বিক্ষোভ। আরজি কর ছাড়াও কলকাতা মেডিক্যাল, ন্যাশনাল মেডিক্যাল, এসএসকেএম, শিশুমঙ্গলে প্রতিবাদে চিকিৎসক, স্বাস্থকর্মীরা। আরজিকরে প্রতিবাদে নামলেন সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা। ক্ষোভ যুক্তিসঙ্গত, তবে পরিষেবা বজায় রাখুন, আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর।
আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজে কর্তব্য়রত মহিলা চিকিৎসককে খুন। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে মিলেছে যৌন নির্যাতনের চিহ্ন। গোপনাঙ্গের পাশাপাশি সারা শরীরে মিলল অসংখ্য় আঘাতের ক্ষত। আর জি করের মতো সরকারি মেডিক্য়াল কলেজে, চাঞ্চল্য়কর এই ঘটনা তোলপাড় ফেলে দিয়েছে গোটা শহরে। ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে সরব হয়েছে মৃত চিকিৎসকের পরিবারও।মৃত মহিলা চিকিৎসকের বাবা বলেন, খুন করা হয়েছে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। অর্ধনগ্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
MBBS পাস করার করার পর RG কর মেডিক্যাল কলেজ-হাসপাতালে চেষ্ট মেডিসিন নিয়ে স্নাতকোত্তরের দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছিলেন বছর একত্রিশের মহিলা চিকিৎসক। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে ‘On Call’-এ ছিলেন মহিলা চিকিৎসক। রাত দুটো নাগাদ তাঁর ডিউটি শেষ হয়। তারপরে জুনিয়রদের সঙ্গে ডিনার সারেন। সূত্রের খবর, এরপর জরুরি বিভাগের চারতলায় ‘চেষ্ট ডিপার্টমেন্টে’র সেমিনার হলে বিশ্রামের জন্য ঢুকে যান। শুক্রবার সকালে সেই সেমিনার হল থেকেই উদ্ধার হয় তাঁর মৃতদেহ।
আরও পড়ুন, রণক্ষেত্র RG Kar, ঘুষি মেরে, চুলের মুঠি ধরে আন্দোলনকারীদের বের করল পুলিশ
সূত্র মারফত খবর, আর জি কর হাসপাতালে অবাধ যাতায়াত ছিল ধৃত সঞ্জয় রায়ের। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার ইয়ার ফোনের সূত্র ধরে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। সূত্র মারফত আরও খবর, ‘সিসিটিভি-তে দেখা যায় গলায় ইয়ার ফোন ঝুলিয়ে সেমিনার রুমে ঢুকছে সঞ্জয়, ৩০ মিনিট পর সেমিনার রুম থেকে ইয়ার ফোন ছাড়াই বেরোয় সঞ্জয়। অনলাইনে আনানো খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিতে যান চিকিৎসক। সিসিটিভি-তে ৪ জনের গতিবিধি লক্ষ্য করা যায়। সবাইকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় সঞ্জয়ের কথায় অসঙ্গতি ধরা পড়ে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও দেখুন