‘শরীর খারাপ, অবস্থা খারাপ, হয়ত সুইসাইড’! বারবার বয়ান বদলে হাসপাতাল থেকে ফোন, ভাইরাল অডিও

Estimated read time 1 min read
Listen to this article


কলকাতা: আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় নয় নয় করে তিন সপ্তাহ পার। সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায় ছাড়া আর কেউ গ্রেফতার হননি এখনও পর্যন্ত। সেই আবহেই হাসপাতালের তরফে নির্যাতিতার পরিবারের কাছে যে ফোন গিয়েছিল, সেই কথোপকথনের অডিও ক্লিপ সামনে এল। এবিপি আনন্দ ওই অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি। (RG Kar Case Viral Audio)

গত ৯ অগাস্ট সকালে নির্যাতিতার পরিবারের কাছে পর পর তিন বার ফোন যায়। আর তিন বারই ফোনে তিন রকম দাবি করা হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। যে ক্লিপ সামনে এসেছে তাতে, প্রথম বলা হয়, মেয়ের শরীর খারাপ। দ্বিতীয় বার বলা হয়, দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছতে। তৃতীয় বার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানানো হয়। (RG Kar Case)

যে অডিও ক্লিপটি ভাইরাল হয়েছে, তাতে এক মহিলার কণ্ঠ শোনা যায়। কথোপকথনটি এমন-

মহিলা কণ্ঠ: হ্যালো… বলছেন?

নির্যাতিতার বাবা: কে বলছেন?

মহিলা কণ্ঠ: আর জি কর হাসপাতাল থেকে বলছিলাম। 

নির্যাতিতার বাবা: কী হয়েছে?

মহিলা কণ্ঠ: ওর একটু শরীরটা খারাপ হয়েছে। আপনারা কি একটু আসতে পারবেন ইমিডিয়েট?

নির্যাতিতার বাবা: কী হয়েছে সেটা বলবেন তো?

মহিলা কণ্ঠ: সেটা তো ডাক্তার বলবেন আপনারা এলে। আমরা আপনার নম্বরটা জোগাড় করে জানালাম। বাড়ির লোক হিসেবে আপনারা তাড়াতাড়ি আসুন।

নির্যাতিতার বাবা: কী হয়েছে সেটা বলো না তুমি।

মহিলা কণ্ঠ: পেশেন্টের শরীরটা খারাপ, ভর্তি হয়েছে হাসপাতালে। বাকিটা আপনারা এলে ডাক্তার বলবে।

নির্যাতিতার মা: ওর কি জ্বর হয়েছে?

মহিলা কণ্ঠ: আপনারা একটু আসুন, জলদি আসুন, যত তাড়াতাড়ি পারবেন।

নির্যাতিতার বাবা: কেন অবস্থা খারাপ নাকি?

মহিলা কণ্ঠ: খুব অবস্থা খারাপ। একটু তাড়াতাড়ি চলে আসুন।

প্রথম বার ফোনে যে কথা হয়, তাতে মহিলা কণ্ঠ নিজের পরিচয় দেননি। তবে দ্বিতীয় ক্লিপে ওই মহিলা কণ্ঠ নিজের পরিচয় দেন অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার হিসেবে। দ্বিতীয় ক্লিপের কথোপকথন এমন-

নির্যাতিতার বাবা: কী হয়েছে, সেটা বল না একটু?

মহিলা কণ্ঠ: ওঁর অবস্থা খুবই খারাপ। আপনি যত তাড়াতাড়ি পারবেন, চলে আসুন।

নির্যাতিতার বাবা: আপনি কে বলছেন বলুন তো?

মহিলা কণ্ঠ: আমি অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার বলছি, ডাক্তার বলছি না।

নির্যাতিতার বাবা: ডাক্তার নেই ওখানে কেউ?

মহিলা কণ্ঠ: আপনার মেয়েকে আমরা ইমার্জেন্সিতে এনেছি। আপনারা এসে যোগাযোগ করুন।

নির্যাতিতার মা: ওর কী হয়েছে? ও তো ডিউটিতে ছিল?

মহিলা কণ্ঠ: আপনারা জলদি চলে আসুন, যত তাড়াতাড়ি পারবেন।

এর পর তৃতীয় ক্লিপে কিন্তু বয়ান পুরো পাল্টে গিয়েছে। মেয়ে অসুস্থ নন, আত্মহত্যা করেছেন বলে জানানো হয় ফোনে। 

মহিলা কণ্ঠ: শুনুন, আপনাকে তখন বার বার বলছিলাম। আপনার মেয়ে, উনি সুইসাইড করেছেন হয়ত। মারা গিয়েছেন। পুলিশ রয়েছে। আমরা হাসপাতালে সবার সামনেই রয়েছি, ফোন করছি। আপনারা যত তাড়াতাড়ি পারবেন চলে আসুন।

আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর থেকে দিন যত এগোচ্ছে, ততই যেন ঘোরাল হচ্ছে রহস্য। এই ফোন কলের কথা আগেই জানিয়েছিলেন নির্যাতিতার পরিবার। এমনকি নির্যাতিতার পরিবারকে এত বড় খবর জানানোর সময় ন্যূনতম সংবেদনশীলতাও দেখানো হয়নি বলে অভিযোগ। এ নিয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সব্যসাচী মিত্র বলেন, ঠইংরেজিতে এমন দুঃসংবাদ দেওয়াকে ‘ব্রেকিং ব্যাড নিউজ’ বলা হয়। এক্ষেত্রে কোনও রকম ট্রেনিংই তো শুনতে পেলাম না! যে কণ্ঠস্বর বলছেন, তিনি খুব তাড়াহুড়ো করছেন। ওঁকে উৎকণ্ঠিতও, গলার স্বর থেকে বোঝা যাচ্ছে। ফোনটা যে তড়িঘড়ি করা, অতি সামান্য তথ্য দিয়ে দ্রুত কথা শেষ করতে চাইছেন, বোঝা যাচ্ছে সেটাও।  এটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। সহানুভূতির সঙ্গে কথা বলতে হয়। সাধারণত ফোনে দুঃসংবাদ দেওয়া উচিত নয়। এই যে বলা, আপনার সুইসাইড করেছে হয়ত, এটা যাঁকে বলা হচ্ছে, তিনি আরও উদভ্রান্ত হয়ে পড়বেন। সহানুভূতি বলে যা আছে, তা এই কথোপকথনে কোথাও নেই। দুঃসংবাদ দেওয়ার প্রোটোকল আছে, ট্রেনিং হয়, ভিতর থেকেও আসতে হয়। এখানে কোনও কিছুই পেলাম না।”



Source link

JagoronBarta http://www.jagoronbarta.com

জাগরণ বার্তা হল একটি অগ্রণী অনলাইন সংবাদ পোর্টাল যা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে নিরপেক্ষ, সঠিক এবং সময়োপযোগী সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিবেদিত। আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা বাংলার প্রকৃত কণ্ঠস্বরকে প্রতিফলিত করে এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours