কেন আমৃত্যু কারাদণ্ড ? যা বললেন বিচারক…
কলকাতা : আর জি করে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় কী সাজা হবে সঞ্জয় রায়ের ? তার দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ। শেষমেশ তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শোনাল আদালত। ‘এই ঘটনাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে মনে করছেন না’। এদিন সাজা শোনানোর সময় এমনই মন্তব্য করেন শিয়ালদা আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস। এই পরিস্থিতিতে সঞ্জয়কে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এর পাশাপাশি নিহতের পরিবারকে ১৭ লক্ষ টাকা সহায়তা দেওয়ার জন্য় বলা হয়েছে রাজ্য সরকারকে। তার কারণ, হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় ধর্ষণ ও খুন হয়েছেন ওই চিকিৎসক।
সঞ্জয় রায়ের কঠোরতম শাস্তি চেয়ে কোর্টে সিবিআইয়ের আইনজীবী সওয়াল করেন, ‘সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হোক, যাতে বিচারব্যবস্থার প্রতি সমাজের আস্থা থাকে।’ অন্যদিকে, সঞ্জয় রায়ের পক্ষে আইনজীবী সওয়াল করেন, ‘মৃত্যুদণ্ডের বিকল্প কিছু আছে কি না, তা সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক হোক।’ সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর পৌনে ৩টে নাগাদ নির্দেশ দেওয়ার কথা বলেছিলেন বিচারক। সেইমতো নির্ধারিত সময়ে সাজা ঘোষণা করেন তিনি। তবে, সঞ্জয়ের মৃত্যুদণ্ড হতে পারে বলে অনেকেই মনে করেছিলেন। কিন্তু, তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। যদিও সিবিআই ও নির্যাতিতার আইনজীবীর তরফে, তার সর্বোচ্চ সাজার দাবি করা হয়েছিল এদিন। বিচারকের বক্তব্য, সামনে যে তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, তার ভিত্তিতে তিনি এই ঘটনাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে মনে করছেন না। এদিকে এই সাজা ঘোষণা পর নিহতের পরিবারের তরফে আইনজীবী, সিবিআইয়ের তদন্ত-প্রক্রিয়া এবং সিবিআই যে তথ্যপ্রমাণ পেশ করেছে, তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। অর্থাৎ, সিবিআই ঠিকভাবে তদন্ত করেনি বলে তাঁর অভিযোগ।
এদিন বিচারক সাজা ঘোষণার সময় নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথাও বলেন। এনিয়ে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন তিনি। কারণ, ওই চিকিৎসককে কর্তব্যরত অবস্থায় ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে। যদিও সেই সময় আদালতে উপস্থিত নিহতের বাবা-মা হাতজোড় করে বলেন, ‘আমরা কখনো ক্ষতিপূরণ চাইনি।’ তখন বিচারক তাঁদের বলেন, ‘আইনের মধ্যে যেটা রয়েছে, আমি সেটাই করছি। আমি বলছি না যে, আপনারা ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন।’
উল্লেখ্য, আর জি কর-কাণ্ডে ৩টি ধারায় দোষী সাব্যস্ত হয় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। BNS 64 ধারা (ধর্ষণ): দোষী সাব্যস্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। BNS 66 ধারা (ধর্ষণের সময় এমন আঘাত করা, যার জেরে মৃত্য়ু হতে পারে) এবং BNS 103 (1) (খুন) ধারায়ও দোষী সাব্যস্ত।
আরও দেখুন