ব্রতদ্বীপ ভট্টাচার্য, আশাবুল হোসেন ও শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা : শনিবার আর জি কর-কাণ্ডের রায় ঘোষণা। তার আগে এখনও উত্তর মেলেনি একাধিক প্রশ্নের। গত বছরের ১৪ অগাস্ট আর জি করে ভাঙচুর চালিয়েছিল কারা ? কাদের নির্দেশে ? তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করাই কি হামলাকারীদের উদ্দেশ্য ছিল ? ঠিক একইভাবে তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধারের পর, তড়িঘড়ি ৪ তলার সেমিনার রুমের উল্টোদিকের ঘরের দেওয়াল ভাঙার নির্দেশ কে এবং কী কারণে দিয়েছিল, সেই প্রশ্নেরও উত্তর পাওয়া যায়নি এখনও।
রাত পোহালেই আর জি কর মেডিক্য়ালের ধর্ষণ-খুন কাণ্ডের রায় দেবেন শিয়ালদা আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস। তার আগে এখনও অবধি অনেকেই যে প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইছেন তা হল…
1. ধর্ষণ-খুন কাণ্ডে কি ধৃত সঞ্জয় রায় একা জড়িত?
2. তথ্য় প্রমাণ লোপাট কি হয়েছিল?
3. ১৪ অগাস্ট আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজে কেন ভাঙচুর চালানো হয়েছিল?
4. তথ্য় প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্য়ে সেমিনার রুমে যাওয়ার জন্য়ই কি হামলা চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা?
5. কারা পাঠিয়েছিল তাদের?
6. তথ্য় প্রমাণ লোপাট হলে কাদের লাভ?
তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের প্রতিবাদে মহিলাদের রাত দখলের দিনই আর জি কর মেডিক্যালে তাণ্ডব চালায় একদল দুষ্কৃতী। পুলিশের সামনেই জরুরি বিভাগ থেকে শুরু করে নার্সিং স্টেশন, মেডিসিন স্টোর, HDU, ENT বিভাগ-সহ ১৮টি জায়গা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। তথ্য়প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্য়ে দুবৃর্ত্তদের গন্তব্য় কি ছিল সেমিনার রুম ? এই প্রশ্ন আরও জোরাল হয় একটি ভাইরাল ভিডিও থেকে ! যাতে তাণ্ডবকারীদের বলতে শোনা যায়, ওতে মার… ওতে ওতে…এই সেমিনার হলে চল, সেমিনার হলে চল…।
এ প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মিডিয়াতে দেখিয়েছে, ছোট ছোট ট্রাকে করে কারা এসেছে। বেলগাছিয়া তো মূলত লিড করেছে। তারসঙ্গে কামারহাটি থেকে শুরু করে বহু জায়গা থেকে ছোট ছোট গাড়ি করে কয়েক হাজার লোক জড়ো করা হয়েছিল । সব পরিচিত তৃণমূল কংগ্রেসের লোক। সিপি সেখানে রাত ১২টা পৌঁছান। রাত ২টো ৪০ মিনিটে পৌঁছে যান এবং ফেস-টাইম কলে মুখ্যমন্ত্রীকে বলে যান, অপারেশন ইজ ওভার। অর্থাৎ, নমুনা সব নষ্ট করে দিলাম।”
অন্যদিকে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “যা যা হয়েছে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। তার উপর দাঁড়িয়ে তদন্ত হচ্ছে। সিবিআই তদন্ত, তাঁরা চেয়েছিলেন। বিরোধীদের তো আনন্দ হয়েছিল, সিবিআই তদন্ত হওয়ায়। তখন তো অনেক রকম কথা শুনলাম। সিবিআই তদন্ত খতিয়ে দেখেছে।”
এর সঙ্গে আরও এক বিতর্কের সূত্রপাত হয়। যে সেমিনার রুমে চিকিৎসককের দেহ মিলেছে, ঠিক তার উল্টোদিকের ঘরের দেওয়াল ভেঙে ফেলা হয়। অভিযোগ ওঠে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের ! পরে তড়িঘড়ি সেই সংস্কার বন্ধের নির্দেশ দেয় সিবিআই।
জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার বলেন, “কী এমন সন্দীপ ঘোষের দায় পড়ল যে হঠাৎ করে ওইদিনই কেন দেওয়াল ভাঙা হয়েছিল। তথ্যপ্রমাণ লোপাট হোক বা না হোক, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা তো হয়েছেই। সেটায় তারা সফল হয়েছে কি না সেটা তদন্তকারী সংস্থা বলবে। চেষ্টাটা তো আমরা সবাই চোখে দেখতে পেয়েছে।”
দেওয়াল ভাঙার বিষয়টি ওঠে সুপ্রিম কোর্টেও। কিন্তু, এই ভাঙার নেপথ্য়ে কি তথ্য় প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা ? হয়ে থাকলে কারা এটা করাচ্ছিল ? বহু প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা। উত্তর কি কোনওদিন পাওয়া যাবে ? না কি রহস্য়ের ঘেরাটোপেই থেকে যাবে সব কিছু ?
আরও দেখুন
+ There are no comments
Add yours