বিটন চক্রবর্তী, হলদিয়া : অধীর রঞ্জন চৌধুরীর প্রাক্তন ব্যক্তিগত সচিবকে গ্রেফতার করল হলদিয়ার সুতাহাটা থানার পুলিশ। ধৃতের নাম প্রদীপ্ত রাজপণ্ডিত। তিনি আমলা পরিচয়ে সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
কী কী অভিযোগ ?
দিল্লিতে থাকতেন প্রদীপ্ত রাজপণ্ডিত। তাঁর দেশের বাড়ি হলদিয়ার সুতাহাটা থানার চৈতন্যপুর এলাকায়। সেই বাড়িতেই গতকাল তাঁর একটি পারিবারিক অনুষ্ঠান ছিল। পুলিশ জানতে পারে, আমলা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সরকারি আধিকারিককে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেন। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ তাঁকে প্রথমে ডেকে পাঠায়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
পুলিশের দাবি, তিনি সদর্থক উত্তর দিতে পারেননি। সেইজন্য পুলিশ তাঁকে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার করে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা, প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভঙ্গ করার অভিযোগ নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি যে গাড়িটি চড়তেন সেটি নীল বাতির হুটার লাগানো গাড়ি। পুলিশের বক্তব্য, মোটর ভেহিক্যালস অ্যাক্টও তিনি লঙ্ঘন করেছেন। ফলে, এই সমস্ত ধারায় তাঁকে অভিযুক্ত হিসাবে দেখানো হয়েছে এবং তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ তাঁকে হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী বলেন, আমি বরাবর কী করেছি, চেনা-পরিচয়ের বাইরে…এলাকায় বা পার্লামেন্টের সঙ্গে যাঁর সম্পর্ক আছে সেরকম মানুষকে খুঁজে তাঁদের আমি কাজ দিয়েছি। এরকম আমার তিন থেকে চার জন ব্যক্তিগত সচিব হয়েছেন। একজন মারা গেছেন, একজন অন্য পেশায় চলে গেছেন। এই যে ছেলেটি বলছেন তিনি আমাদের বাংলার ছেলে। দিল্লিতে মানুষ হয়েছেন। দিল্লিতে বড় হয়েছেন। তাঁর বাবা এসে আমাকে বলেন, আপনি বাংলার এমপি। আমরা গরিব বাঙালি পরিবার। আমাদের ঘরে একটা ছেলে পড়াশোনা করেছে। আপনি কি তাঁকে কাজে রাখতে ইচ্ছুক ? আপনি যদি নেন সংসারটা বেঁচে যায়। আমি তাঁকে কাজে নিয়েছি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি আমার সঙ্গে কাজ করেছেন এবং তাঁর কাজে আমি সন্তুষ্ট ছিলাম। তাই, তাঁকে আমি রেখেছিলাম।
রাজ্য রাজনীতিক অন্যতম বর্ষীয়ান মুখ অধীর চৌধুরী। তিনি দীর্ঘদিন সাংসদ থেকেছেন। কিন্তু, গত লোকসভা ভোটে তিনি বহরমপুর কেন্দ্র থেকে হেরে যান। এরপরই তিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদও ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। তাঁর পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হন শুভঙ্কর সরকার। গত লোকসভা ভোটে আসন সমঝোতা নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে বাংলায় একা লড়ার ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার এই ঘোষণায় স্বাভাবিকভাবেই উত্তাল হয়েছিল জাতীয় রাজনীতি। অধীর চৌধুরীকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছিল।
আরও দেখুন
+ There are no comments
Add yours