কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: মানুষ ভোট দিয়েছে মানেই ‘টেকেন ফর গ্র্যান্টেড’ ভাবা উচিত নয়। আর জি কর-কাণ্ডের আবহে এভাবেই রাজ্য সরকারকে সতর্ক করলেন অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্য়ায়। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্য়ালয়ের গণকনভেনশনে মাউথ অরগ্য়ান বাজিয়ে, ছবি এঁকে বুধবার প্রতিবাদ জানান সনাতন দিন্দা-সৃজিত মুখোপাধ্য়ায়রা। উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার, অভিজিৎ চৌধুরী থেকে হাওড়ার স্কুলের
প্রধান শিক্ষিকা মোনালিসা মাইতি। সেখানেই এমন মন্তব্য় করেন পরমব্রত। (Parambrata Chatterjee)
রোদ-জল-ঝড়ের মধ্য়েই চল্লিশ দিন ধরে চলছে জুনিয়ক চিকিৎসকদের আন্দোলন। এই আবহেই প্রেসিডেন্স বিশ্ববিদ্য়ালয়ে আয়োজিত কনভেনশন থেকে তৃণমূলের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন পরমব্রত। সেখানে তিনি বলেন, “বার বার আপনাদের মানুষ বেছে নিয়েছেন অন্য একটি দলের থেকে একটু বেটার ভেবে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আপনারা সেটাকে টেকেন ফর গ্রান্টেড করে নেবেন বছরের পর বছর ধরে। বিজেপি-কে ঠেকানোর জন্য, অতি দক্ষিণপন্থী রাজনীতিকে ঠেকানোর জন্য লেসার ইভিল তত্ত্বে অন্য একটি দলকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। গত এক-দেড় মাস ধরে যে আন্দোলন চলছে, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, কাউকে টেকেন ফর গ্রান্টেড করে ফেলা উচিত নয়। শাসকদল যেই হোক না কেন, প্রশাসনে যেই থাকুক না কেন, অ্যাকাউন্টেবল হতে হবে।” (RG Kar Case)
অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “জানানো হল যে, একমাস হয়ে গিয়েছে। যথেষ্ট হয়েছে। অন্য কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকতে বলা হল। অথচ এই উৎসবের তলে তলে অনেক কিছু চলতে থাকে। অন্তঃসার শূন্য হয়ে যাচ্ছে একটা রাজ্য। একমাস হয়ে গিয়েছে যদি এই লজিকে যাই, তাহলে ২১ জুলাই পালনের কি আছে? সেও তো অনেক আগে হয়েছে!”
বুধবারের গণ কনভেনশনে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার এবং অভিজিৎ চৌধুরীও। হাওড়ার তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যাভবনের প্রধান শিক্ষিকা মোনালিসা মাইতি অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের পথে নামার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনিও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “পরস্পরকে চিনি না আমরা। কিন্তু এই যে রাস্তায় নেমে আসা, এই গণজোয়ার, পীড়িতের লড়াইয়ের সঙ্গে নিজেদের যে মিলিয়ে দিতে পারছি, এর ফল থাকবে।”
আর জি কর কাণ্ডে ইতিমধ্য়েই অভিনেতা-অভিনেত্রী-পরিচালক-নাট্য় ব্য়ক্তিত্ব সবাই পথে নেমেছেন। যদিও তারকাদের পথে নামা নিয়ে কটাক্ষ করেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর কথায়, “টলিউডের বি গ্রেড, সি গ্রেড সব শিল্পী, যাঁরা নায়িকা পর্যন্ত হননি, তাঁরা বিবৃতি দিচ্ছেন। কী যায় আসে? এঁরা তারকা নয়, এঁরা স্টারলেট। স্টার এবং স্টারলেটের মধ্যে পার্থক্য নিশ্চয়ই জানা আছে! দীপিকা পাড়ুকোন, আলিয়া ভট্ট তারকা। কে কবে একটা সিনেমা করেছিলেন, তাঁরা স্টার নন। দুইয়ের মধ্যে তফাত আছে। এঁদের মাস ফলোয়িং নেই। শ্রেয়া ঘোষাল কিছু করেননি। অরিজিৎ আমার প্রিয় গায়ক। কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে ইমম্যাচিওর, তাই এসব গান গেয়েছে।” বুধবার মাউথ অরগ্য়ান বাজিয়ে ছবি এঁকে প্রতিবাদ জানান সনাতন দিন্দা-সৃজিত মুখোপাধ্য়ায়রাও।
আরও দেখুন