জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: পহেলগাঁও-কাণ্ড (Pahalgam Terror Attack) নতুন করে আলোচনায় উঠে এল। তদন্তে বেরিয়ে এল হাড়হিম তথ্য। কী? সেটা হল, ঘটনার দিনে, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের (Terror Attack on Tourists at Pahalgam) বৈসরনে যখন শুরু হয়ে গিয়েছে জঙ্গিদের অপারেশন, তখন আতঙ্কে অনেকেই যে যেদিকে পারছিলেন পালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু আশ্চর্য হল, কোনও কোনও ট্যুরিস্টই আবার পলায়মান ট্যুরিস্টদের পালাতে না দিয়ে অনেকটা তাঁদের তাড়িয়ে-তাড়িয়ে টেনে টেনে জঙ্গিদের বন্দুকের নলের সামনে নিয়ে আসছিল। ট্যুরিস্টরাই কেন এরকম করছিল?
ভিড়ে মিশে জঙ্গি
না, পরে প্রকাশ্যে আসে অবিশ্বাস্য তথ্য। তারা মোটেই ট্যুরিস্ট নয়। বরং ট্যুরিস্টের পোশাকে জঙ্গিই। ভিড়ের মধ্যে মিশে গিয়েছিল তারা। কেননা, অপরাশেন শুরু হয়ে গেলে লোকজন যে দৌড়াদৌড়ি করে পালাতে চেষ্টা করবেন, সেটা খুব স্বাভাবিক। আর তখনই তাদের আটকে দিয়ে বরং অপরাশেনের কেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে– এরকম একটা প্ল্যানই ছিল তাদের।
আরও পড়ুন: Madhyamik Result 2025: অবিশ্বাস্য সাফল্য! মাধ্যমিকে ৯৩ শতাংশ! পরীক্ষার দিন বাড়িতে শ্রাদ্ধ, বাবা সারাদিন খোলা আকাশের নীচে বসে-বসে…
আরও পড়ুন: Pahalgam Terror Attack: পহেলগাঁও-কাণ্ডে নয়া মোড়? ‘কেন সেদিন দোকান খোলেননি?’ গোয়েন্দার ঠান্ডা প্রশ্নের মুখে পড়ে দোকানদার বললেন…
বৈসরনে সেদিন প্রথম গুলির শব্দ শোনা যেতেই ভয়ংকর কিছু ঘটছে আঁচ করে লোকজন পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে লুকিয়ে পড়তে ছুটছিলেন। আর তখনই তাঁদের বন্দুকের রেঞ্জের সামনে নিয়ে আসার ‘জরুরি’ কাজটি করছিল দুই ট্যুরিস্ট-রূপী জঙ্গিই। সেদিন সেই অপারেশনে ২৫ জন ট্যুরিস্ট এবং একজন ঘোড়াচালক মারা গিয়েছিলেন।
প্রথম অ্যাটাকটা শুরু হয় দুটি কি তিনটি পয়েন্ট থেকে। বৈসরনে ঢোকা বা বেরনোর রাস্তার মোটামুটি ৫০ মিটারের মধ্যেই ঘটে এটা। প্রথমে অপারেশনটা শুরু করে ৪-৫ জন। ক্রমে দেখা যায়, গোটা এলাকাটাই জঙ্গিরা সব দিক থেকেই ঘিরে ফেলেছে।
বন্ধ দোকান
এদিকে গোয়েন্দাদের নজরে এসেছে, যে, একজন দোকানদার ১৫ দিন আগে তাঁর দোকান খুলেছিলেন, কিন্তু ঘটনার দিন তিনি দোকান খোলেননি। ন্যাশনাল ইনভেস্টেগেশন এজেন্সি বা এনআইএ-এর সদস্যরা বিষয়টির তদন্তে নেমেছেন। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহামলায় ২৬ জনের মৃত্যু ঘটেছিল। ঘটনার পরে শুধু কাশ্মীরে নয়, সারা দেশে সাড়া পড়ে যায়। ক্রমে বিষয়টি আন্তর্জাতিক উদ্বেগের বিষয়ও হয়। এনআইএ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনার তদন্তে নেমে পড়ে। তদন্ত করতে নেমে তারা ১০০ স্থানীয় বাসিন্দাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সেটা করতে গিয়েই ওই বিশেষ একটি দোকানের বন্ধ থাকার খবর পায় তারা। তখনই তারা বিষয়টি নিয়ে একটু অন্য ভাবে তদন্ত শুরু করে দেন। লোকটিকে ট্রেস করা গিয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। দেখা হচ্ছে, তাঁর ইন্টারনেট প্রোটোকল ডিটেইলস– যদি কোথাও কোনও তথ্য থেকে থাকে।
১০০ জনের তালিকা
এনআইএ একটি তালিকা বানিয়েছে। সেই তালিকা মূলত স্থানীয়দের। প্রকারান্তরে সেই তালিকাটা সন্দেহভাজনদেরও। গোয়েন্দারা দেখছেন, অভিশপ্ত সেই দিনে অকুস্থলে বা অকুস্থলের নিকটস্থ এলাকায় কাদের কাদের উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা ছিল, কারা কারা ছিল এবং কারা ছিলেন না। সেই কাজের সূত্রেই ১০০ জনের নামের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। কারা কারা আছেন সেই তালিকায়? ঘোড়া বা খচ্চরের মালিকেরা, দোকানদারেরা, ফোটোগ্রাফাররা, এবং বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসে যুক্ত লোকজন। এঁদের থেকে বিভিন্ন রকম তথ্য সংগ্রহ করছেন গোয়েন্দারা। আর এভাবেই আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছে পহেলগাঁও কাণ্ডের তদন্ত।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)