‘BJP-র সুপারিশেই পদ্মশ্রী পেয়েছেন কার্তিক মহারাজ’ ! কুণালের আক্রমণে মুখ খুললেন শুভেন্দু ..
কলকাতা: পদ্মশ্রী পুরস্কার পাচ্ছেন ভারত সেবাশ্রমের সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজ। আর এই পদ্ম-প্রাপ্তি ঘিরেই সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। বিজেপির সুপারিশেই কার্তিক মহারাজ পদ্মশ্রী পেয়েছেন, আক্রমণ শানিয়েছেন কুণাল ঘোষ। উনি অনেক পেয়েছেন বলেই এভাবে ভাবতে পারেন, প্রতিক্রিয়া কার্তিক মহারাজের। তৃণমূলকে পাল্টা তোপ দেগেছে বিজেপি।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, কার্তিক মহারাজ একা প্রমাণ করে দিলেন যে, পদ্মশ্রীটা বিজেপির সুপারিশ। বেলডাঙা ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ প্রধান কার্তিক মহারাজ বলেন, রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র ওঁর মতো করে উনি বলবেন। ভারত সেবাশ্রমের সন্ন্যাসীর পদ্মশ্রী-প্রাপ্তিতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। রীতি মেনে প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে পদ্ম পুরস্কার ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। পদ্মশ্রী দেওয়া হচ্ছে ১১৩ জনকে, যার মধ্যে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের ৯ জন।এঁদেরই একজন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের বেলডাঙার শাখার প্রধান, কার্তিক মহারাজ।
চব্বিশের লোকসভা ভোটের মুখে, যাকে আক্রমণ করেছিলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন,’আমি একটি লোকের নাম করে বলেছিলাম, তাঁর নাম কার্তিক মহারাজ। খবর আমিও রাখি। এলাকায় এলাকায় গিয়ে ধর্মের নামে আপনি বিজেপি করে বেড়ান। আমি বলছি আপনি করুন, কিন্তু বিজেপির চিহ্নটা বুকে লাগিয়ে রেখে করুন। লুকিয়ে লুকিয়ে কেন?’ পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীকে আইনি নোটিস পাঠিয়ে জবাব দিয়েছিলেন বেলডাঙা ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রধান।’
কার্তিক মহারাজ বলেছিলেন,আমি যেহেতু ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসী, সমগ্র সন্ন্যাসী সমাজের উপর এটা একটা আঘাত। যেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, সেটাকে প্রচার হওয়া আমার বদনাম, আমার সন্ন্যাসী জীবনের একটা কলঙ্ক। সুতরাং আমি আইনি পরামর্শ নিয়ে নোটিস করা হয়েছে।’ এমনকী, বাংলাদেশে হিন্দু নিপীড়নের প্রতিবাদেও গর্জে উঠেছেন কার্তিক মহারাজ। বেলডাঙা ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রধান সেই কার্তিক মহারাজকেই এবার পদ্মশ্রী পুরস্কার দিতে চলেছে মোদি সরকার।
আর সন্ন্যাসীর পদ্ম-প্রাপ্তির নেপথ্যে পদ্ম-শিবিরের হাতই দেখছে তৃণমূল। কটাক্ষ করতে গিয়ে বলিউডের প্রাক্তন অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নির সন্ন্যাস গ্রহণের প্রসঙ্গও টেনেছেন কুণাল ঘোষ। কুণাল ঘোষ বলেন, ‘কার্তিক মহারাজ ফাটিয়ে দিয়েছেন। কার্তিক মহারাজ একা…একা প্রমাণ করে দিলেন যে, পদ্মশ্রীটা বিজেপির সুপারিশ। তাঁকে দিয়ে বিজেপি প্রমাণ করে দিল যে, সব সময় পদ্মে শ্রী থাকে না, মাঝে মাঝে পদ্ম বিশ্রীও হয়। কার্তিক মহারাজ হিন্দুত্বের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর নন। এই একটি দিয়ে বাকিদের গুণ-বৈশিষ্ট্য সবেতে জল ঢেলে বুঝিয়ে দিয়েছে, এটা বিজেপির নিজস্ব অ্যাজেন্ডা। মমতা কুলকার্নিও সন্ন্যাসী হয়েছে।’
কুণালের কটাক্ষের জবাব দিয়েছেন কার্তিক মহারাজ। কার্তিক মহারাজ বলেছিলেন, রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র, ওঁর চিন্তা, ওঁর ভাবনা, ওঁর বিদ্যা-বুদ্ধি অনুসারে যেটা বলেছেন, ওঁর মতো করে উনি বলবেন। উনি তো একটা কারাবন্দি ছিলেন, তারপর একটা রাজনৈতিক দলের হয়ে মুখপাত্র করছেন। উনি তো অনেক পেয়েছেন। ওঁর পাওয়া দিয়ে আরেকজনকে চিন্তা করছেন।’প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন,’এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে পদ্ম-পুরস্কারটাকেও। রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে। কাছের লোক পাবে। যারা RSS-এর ভাবাদর্শে, বিজেপির ভাবাদর্শে বিশ্বাস করে, তাদের জন্য পুরস্কার।’পাল্টা যুক্তি দিয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন, আজ SSC চাকরি বাতিল মামলার শুনানি, আদালতে কী তথ্য দেবে এসএসসি ? ‘যদি যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করা সম্ভব না হয়..’
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, কার্তিক মহারাজ শুধু আধ্যাত্মিক নেতা নন। ১৩টা স্কুল তৈরি করেছেন। বেলডাঙায়, মুর্শিদাবাদে সাধারণ মানুষের জন্য সরকার যে চিকিৎসা দিতে পারে না, সেই চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল তৈরি করেছেন। তাই কেবলমাত্র সনাতনী জাগরণ বা গীতা পড়ার জন্য প্রচার শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা এটা শুধু করেননি। তিনি শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে মানুষের জন্য়, সেবাদান করার জন্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন নীরবে, নিভৃতে।’ এবার পদ্মশ্রী-প্রাপ্তি নিয়েও বঙ্গে জোরকদমে শুরু হয়েছে রাজনীতির চর্চা।
আরও দেখুন