জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আবারও বিস্ফোরক তসলিমা নাসরিন। ধর্মে ধর্মে বিভেদ, হানাহানি, ধর্মান্ধতা, উগ্র জাতীয়তাবাদ, যখনই মাথা চাড়া দিয়েছে, লেখিকা-কবি তসলিমা নাসরিনের কলম বারবার গর্জে উঠেছে। এর আগেও তিনি বহুবার, কলম ধরেছেন উগ্র ধর্মান্ধতা নিয়ে। বাংলাদেশের বহু ঘটনার বিরুদ্ধে তিনি বারবার সোচ্চার হয়েছেন। তিনি নারী নিপীড়ন এবং ইসলাম ধর্মের সমালোচনা নিয়ে লেখার জন্যই পরিচিত। তার রচনা ও ভাষণের মাধ্যমে লিঙ্গসমতা, মুক্তচিন্তা, নাস্তিক্যবাদ এবং ধর্মবিরোধী মতবাদ প্রচার করায় ইসলামপন্থীদের রোষানলে পড়েন ও তাদের নিকট হতে হত্যার হুমকি পেতে থাকায় ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ ত্যাগ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করতে বাধ্য হন।
আরও পড়ুন- ফেরার কথা ছিল বৃহস্পতিতে, মঙ্গলেই জঙ্গি-হানা ছিনিয়ে নিল বিতানকে…
এবার কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বাইসারনে জঙ্গি হামলার বিরুদ্ধে তিনি সমাজ মাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন-
‘ইসলাম যতদিন বেঁচে থাকবে, ততদিন সন্ত্রাস বেঁচে থাকবে।
ইসলাম যতদিন বেঁচে থাকবে, ততদিন অমুসলিমদের কোনও নিরাপত্তা থাকবে না, মুক্তচিন্তক এবং যুক্তিবাদীদের কোনও নিরাপত্তা থাকবে না, নারীর কোনও নিরাপত্তা থাকবে না।
ইসলাম যতদিন বেঁচে থাকবে, ফুল শুকিয়ে যেতে থাকবে, শিশুরা মরে যেতে থাকবে, বৃষ্টির মতো ঝরে পড়তে থাকবে লক্ষ লক্ষ মৃত পায়রা,
ইসলামের গর্ভ থেকে জন্ম নিতে থাকবে ঘৃণা, জন্ম নিতে থাকবে কুৎসিত দানব।
ইসলাম যতদিন বেঁচে থাকবে, ততদিন সভ্য হবে না কোনও রাজ্য, কোনও রাষ্ট্র, সভ্য হবে না পৃথিবী’
তিনি আরও লিখেছেন-
‘যে ধর্ম মানবিক নয়, সে ধর্মকে হয় মানবিক করো, নয়তো সে ধর্মকে ত্যাগ করো।
মিথ্যের ওপর দাঁড়িয়ে আছে ধর্মগুলো। এক ফুঁয়ে উড়ে যেতে পারে সব। কিন্তু অজ্ঞতা আর অশিক্ষার মাটি এমন কামড়ে ধরে আছে ধর্মের শেকড় যে ধর্মগুলোকে উপড়ে ফেলা সহজ হচ্ছে না।
যুগে যুগে মানবিক হয় মানুষ। যত সে বর্বরতা থেকে মুক্ত হয়, সে তার ধর্মকেও বর্বরতা থেকে মুক্ত করে।
একটি ধর্মেরই বিবর্তন থমকে আছে। একটি ধর্মেই জঙ্গিবাদ সমর্থন পায়, একটি ধর্মই একবিংশ শতাব্দিতে সন্ত্রাসী লেলিয়ে মানবতাকে আবর্জনার স্তূপে ছুড়ে দেয়, মানবাধিকারকে হত্যা করে, নারীর অধিকারকে কবর দিয়ে দেয়।
যে ধর্ম মানবিক নয়, সে ধর্মকে হয় মানবিক করো, নয়তো সে ধর্মকে ত্যাগ করো।’
উল্লেখ্য মঙ্গলবার কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বাইসারনে জঙ্গি হামলায় নিহত কলকাতার বৈষ্ণবঘাটার বাসিন্দা বিতান অধিকারী। ৪০ বছর বয়সী বিতান অধিকারী আমেরিকার ফ্লোরিডায় কর্মরত। দেশে ফিরে স্ত্রী এবং পুত্র সন্তানকে নিয়ে কাশ্মীর ঘুরতে গিয়েছিলেন। আর সেখানেই ঘটলো এত বড় একটি দুর্ঘটনা। পর্যটকদের ভিড়ে মিশে থাকা জঙ্গিদের গুলিতে আহত হয়েছেন ১২ জন। ২৬ জনের মৃত্যু আশঙ্কা করা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে কমপক্ষে ১০ জন জঙ্গি সেনাবাহিনীর পোশাক পরে এসে বেছে বেছে গুলি চালায়। যে কাশ্মীরে এত নিরাপত্তার বাড়াবাড়ি বলে শোনা যায় সেখানে কী ভাবে এমন হামলা চালানো সম্ভব হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। জানা যাচ্ছে পাকিস্তানের কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী ওই হামলার পেছনে রয়েছে। তবে তার থেকেও বড় বিষয় হল পর্যটকদের নাম জিজ্ঞাসা করে, তাদের ধর্ম পরিচয় যাচাই করে গুলি করা হয়েছে। এমনটাই বলছেন এক মহিলা পর্যটক। জঙ্গিরা তাঁর স্বামীকে গুলি করে মেরেছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)