সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: গতবছর কলকাতা পুরসভা এলাকায় তৃণমূলের যুবনেতাকে সপাটে চড় মারতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের কাউন্সিলরকে। এমনই দৃশ্য প্রকাশ্যে এসেছিল বালুরঘাটেও। মহিলা বিজেপি কর্মীকে চড় কষিয়েছিলেন মহিলা তৃণমূল কর্মী বলে উঠেছিল অভিযোগ। আর বছর ঘুরতেই ফের তেমনই দৃশ্য ফিরল রাজ্যের মাটিতে। এবার উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটিতে স্কুটার চালক এক তরুণীকে সপাটে চড় কষালেন তৃণমূল কাউন্সিলর। গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করে সোশ্যাল পোস্টে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ।
আরও পড়ুন, অনুব্রতকে ‘ব্যাগ গোছাতে’ বললেন শুভেন্দু, বোলপুরের মাটিতে দাঁড়িয়েই ‘৬ বছরের জন্য জেলে’ পাঠানোর হুঁশিয়ারি !
ঘটনাটি ঘটে মহোৎসবতলা ঘাট এলাকায়। সেইসময় স্কুটারে একজন আরোহীকে সঙ্গে নিয়ে ওই তরুণী যাচ্ছিলেন। রাস্তার মধ্যে স্কুটার চালক তরুণীর সঙ্গে প্রথমে বচসা বাঁধে পানিহাটির কাউন্সিলরের। অভিযোগ, এরপরেই দেখতে দেখতে মারমুখী হয়ে ওঠেন ওই তৃণমূল কাউন্সিলর। এরপরেই প্রকাশ্য রাস্তায়, ওই তরুণীকে কথা কাটাকাটির মধ্যেই সপাটে চড় মারেন তৃণমূল কাউন্সিলর শ্রাবন্তী রায়। যদিও ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে জবাবে পাল্টা মার তরুণীরও।
মাটিতে ফেলে, দুজনের মধ্যে চুলের মুঠি ধরে চলে মারপিঠ। দুজনের মধ্যে যখন এই সংঘর্ষ চলছে, সেই মুহূর্তে ওই স্থানে বেশ কয়েকজন পুলিশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়, ভাইরাল ভিডিওতে। কিন্তু তাঁরা নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকতে দেখা যায়। তার কিছুটা পরেই, ঘটনাস্থলে আসে খড়দা থানার পুলিশ। পুলিশ এসে দুই পক্ষের এই গন্ডোগোল থামায়। ইতিমধ্যেই এবিপি আনন্দ-র কাছে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর শ্রাবন্তী রায়।
তৃণমূল কাউন্সিলর শ্রাবন্তী রায়: গাড়ি চালাচ্ছিল।..অশ্লীল ভাষায়-অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করছিল। যেই চাবিটা নিতে আসে, আমি তখন তাঁকে ধাক্কা দিই, পায়ে লাগে। তারপরেই সে আমাকে মারতে উদ্ধত হয়।
এবিপি আনন্দ: কিন্তু আপনাকে ভিডিওতে চড় মারতে দেখা গিয়েছে..
তৃণমূল কাউন্সিলর শ্রাবন্তী রায়: তার আগে ওতো গাড়ির চাবিটা নিয়ে নিচ্ছিল..
এবিপি আনন্দ: আপনাকে যে চুলের মঠি ধরে মারল, আপনি কি খড়দা থানায় কোনও অভিযোগ জানিয়েছেন ?
তৃণমূল কাউন্সিলর শ্রাবন্তী রায়: খড়দা থানা ওখানে উপস্থিত ছিল। আমি আলাদা করে অভিযোগ জানানোর প্রয়োজন হয়নি।
ঘটনার পর পানিহাটি পুরসভার উপ-পুরপ্রধান সুভাষ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, আমার মতে এটা উচিত হয়নি। সুতরাং চেয়ারম্যান এর একটা তদন্ত করবে । এনকোয়ারি করে জানা যাবে আসল দোষী কে, কে অপরাধ করেছে ?! সহকর্মী তো খারাপ লাগে। এই ঘটনায় তীব্র কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ। তিনি বলেন, দেখুন কেমন জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করেছি আমরা। মানুষ কিন্তু রুখে দাঁড়াচ্ছে এই ছবিটাই তাঁর প্রমাণ। আপনি কাউন্সিলর বলে চোখ রাঙাবেন,আর মানুষ আপনাকে ছেড়ে দেবে, সেই দিন আর নেই।এই ছবিটা ছত্রে ছত্রে সেই কথা বলছে। ঠিক এরকম করেই সব মা-বোনেরা রুখে দাঁড়ান। এদের আর ভারতবর্ষের মানচিত্রে খুজে পাবেন না।