NOW READING:
জ্বর নিয়ে ভর্তি হাসপাতালে, বর্ষার শুরুতেই ডেঙ্গিতে মৃত্যু দমদমের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর !
June 21, 2025

জ্বর নিয়ে ভর্তি হাসপাতালে, বর্ষার শুরুতেই ডেঙ্গিতে মৃত্যু দমদমের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর !

জ্বর নিয়ে ভর্তি হাসপাতালে, বর্ষার শুরুতেই ডেঙ্গিতে মৃত্যু দমদমের  সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর !
Listen to this article


সমীরণ পাল ও জয়ন্ত পাল, কলকাতা: বর্ষার শুরুতেই রাজ্যে ডেঙ্গির বলি ছাত্রী। দমদমে ডেঙ্গি আক্রান্ত মৃত্যু হয়েছে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর। মৃত ওই ছাত্রী দমদম পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। গত ১৯ জুন জ্বর নিয়ে ভর্তি তপসিয়ার জোডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল সে। মৃতার ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখ রয়েছে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কথা।

আরও পড়ুন, বেঙ্গালুরু থেকে পাটনা নামল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান, কোথায় গেল লাগেজ ? ক্ষোভে ফেটে পড়লেন যাত্রীরা ! 

শনিবার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর। মৃত নাবালিকা দমদম পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সেখানে ব্যাপক মশার উৎপাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নাবালিকার প্রতিবেশী থেকে বিরোধী দল সকলেই। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান।দমদমে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর।

এখনও ভালভাবে বর্ষার বৃষ্টি শুরু হয়নি। মাঝে মাঝে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হচ্ছে। তারমধ্যেই শহর ও শহরতলিতে থাবা বসাতে শুরু করেছে ডেঙ্গি। শনিবার ১৩ বছরের সারনী বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাণ কেড়ে নিল ডেঙ্গি। ডেঙ্গিতে মৃতের মা গীতিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জ্বর হয়েছিল ৯, ১০ তারিখে। দু’দিন ঘরে ওষুধ খাইয়েছি, যখন কমেনি… সোমবার বাড়িতে লোক ডেকে ডেঙ্গির টেস্ট করেছি। রিপোর্ট দিয়েছে ডেঙ্গি পজিটিভ, মঙ্গলবার সন্ধেবেলা শ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছে…ডাক্তারকে ফোন করি। ডাক্তার বললেন হাসপাতালে ভর্তি করুন। 

 পরিবারের দাবি, জ্বর বাড়তে থাকায় প্রথমে স্থানীয় মিউনিসিপ্যালিটির হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে নাবালিকাকে নিয়ে যাওয়া হয় নাগেরবাজারের ILS হাসপাতালে। সেখানে নাবালিকার চিকিৎসার পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকায় তাকে স্থানান্তরিত করা হয় তপসিয়ার জোডিয়াক হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা জানান নাবালিকার ফুসফুসের অবস্থা খুব খারাপ। তপসিয়ার হাসপাতালে শনিবার ভোরে মৃত্যু হয় নাবালিকার। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে ডেথ সার্টিফিকেটে।

ডেঙ্গিতে মৃতের মা গীতিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,’ওরা এক্সরে করে দেখছে মেয়ের ফুসফুসে পুরো জমা জল ভরা। কালকে বলল পাইপ ঢুকিয়ে জল বের করতে হবে। ওরা পাইপ থেকে জল বের করেছে। ভোর পৌনে ছটায় বলছে আপনারা আসুন… আমার দেওর আর আমার জা গিয়ে দেখছে ও আর নড়ছে না।’ মৃত নাবালিকা দমদম পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সেখানে ব্যাপক মশার উৎপাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার প্রতিবেশীরা।

 দমদম পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মীনা দাস বলেন, ‘এখান মশার কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয় না, ব্লিচিং পাউডার যেটা দেওয়া হয়, সেটাও ঠিক মতো দেওয়া হয় না। তেল ছড়ানো হয় না, পরিষ্কারও করা হয় না। কিছু করা হয় এখানে। মশা তো আছেই এখানে। প্রায় লোকে মরে। দমদম পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বলেন, ‘মশা আছে খুবই। পরিষ্কার যে একেবারে হয় না তা নয়, পরিষ্কার হয় কিন্তু মশাটা কমছে না।’ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান   হরেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘আমাদের এখানে কোনও লার্ভা নেই… পাইনি। জ্বর হওয়ার কিছুদিন আগে ও (নাবালিকা) ঘুরতে গেছিল দিঘায় এবং দক্ষিণ বারাসাতের দিকে ঘুরতে গেছিল। কোথা থেকে জ্বর হয়েছে সেটা বুঝতে পারছে না। আমরা এখানে কোনও লার্ভা পাইনি। আশেপাশের বাড়িতে জ্বর কারও হয়েছে, সেরকমও পাইনি।’ 

 উত্তর ২৪ পরগনা বিজেপি জেলা সহ সভাপতি  স্বপন রায় বলেন, ‘শুধু কাটমানি খেলে হবে, মানুষের পরিষেবা বলে কিচ্ছু নেই দমদমে। এত বাজে অবস্থা…এখন তো সবে শুরু হল দেখুন না, আর কটা দিন বৃষ্টি হোক, মানুষ পালিয়ে কুল কিনারা পাবে না। ওখানে ড্রেন অবস্থা দেখুন, বাড়ির ছাদে গিয়ে দেখে আসুন, এত বাজে অবস্থা, ওখানকার মানুষ বলছে, এখানে কোনও পরিষেবা নেই।’ পাড়ার সকলের প্রিয় ছিল সারনী। হাশিখুশি মেয়েটার আচমকা এই পরিণতি ভাবতেই পারছেন না পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়রা। নাবালিকার মৃত্যুতে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া।



Source link