জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ২০২১ সালের ৭ অগস্ট, ২০২৪ সালের ৯ অগস্ট, টোকিয়ো টু প্য়ারিস মাঝে ঠিক ৩ বছর ২ দিন। ফের এক ‘অগস্ট বিপ্লব’ নীরজ চোপড়ার (Neeraj Chopra)। তবে এবার আর সোনা নয়, ৮৯.৪৫ মিটার দূরে জ্য়াভলিন ছুড়ে নীরজকে সন্তুষ্ট থাকতে হল রুপোতেই। ভাগ্য় একেবারেই নীরজের সঙ্গে ছিল না। নাহলে গতবারের চ্য়াম্পিয়ন নির্ধারিত কোটার ছ’টি থ্রোয়ের মধ্য়ে পাঁচটিই ফাউল করে বসেন! সঙ্গ দেয়নি তাঁর চেনা জ্য়াভলিনও। আর নীরজকে সোনা খোয়াতে হয়েছে তাঁর বন্ধুপ্রতিম পাকিস্তানি প্রতিদ্বন্দ্বী আরশাদ নাদিমের (Arshad Nadeem) কাছে। ৯২.৭ মিটার ছুড়ে ও অলিম্পিক্স রেকর্ড করে আরশাদ সোনাটা কেড়ে নিলেন নীরজের থেকে। এরকম একটি থ্রোয়ের পর নীরজ কেন, বিশ্বের আর কোনও জ্য়াভলিন থ্রোয়ারের পক্ষেই সম্ভব হয়নি, আরশাদকে আর টপকে যাওয়ার।
আরও পড়ুন: ইতিহাস লিখে নীরজের সোনা নিলেন আরশাদ! অলিম্পিক্স ফাইনালে বিশ্ব দেখল ভারত-পাক দাপট
ভাই বলেই নীরজকে সম্বোধন করেন আরশাদ নাদিম, একেবারে গুরুর মতো দেখেন। দু’ জনের পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সম্মানও বহু বছরের| সেই ২০১৮ থেকে নীরজ-আরশাদের বর্শা নিয়ে ট্র্যাকে লড়াই। এশিয়াড থেকে শুরু করে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ হয়ে অলিম্পিক্স। অবশেষে এত বছর ধাওয়া করে গুরুকে মাত! অবিশ্বাস্য থ্রোয়ে আরশাদের ইতিহাস। ওয়াঘার দুই পারের দুই দেশের চিরশত্রুতা! এক প্রবল বৈরিতা। এই সকল শব্দবন্ধের কোনও জায়গাই নেই সরোজ চোপড়ার মধ্য়ে। তিনি যে মা। মায়েদের পৃথিবীতে সবাই সন্তান। নীরজ রুপো জেতার পর, সংবাদসংস্থা পিটিআই-এর প্রতিনিধি যখন নীরজের পানিপথের বাড়িতে গিয়ে, তাঁর মায়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তখন নীরজের মা বলেন, ‘নীরজ রুপো পাওয়ায় আমরা খুব খুশি হয়েছি। যে সোনা পেয়েছে সে-ও তো আমাদের ছেলে। সবাই অ্যাথলিট। সকলে কঠোর পরিশ্রম করেছে। নীরজও ভালো খেলেছে। নীরজ এবং নাদিমের মধ্য়ে কোনও ফারাক নেই। আমরা সোনা-রুপো দুই পেয়েছি।’
এই ভিডিয়ো রাতারাতি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। দুই দেশের নেটাগরিকদেরই চোখ ভিজেছে যা শুনে। কোথাও যেন সরোজ নীরবে সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে রাখলেন, বুঝিয়ে দিলেন যে দুই দেশ জুড়েই আছে। শুধু রাজনীতি ও ভৌগলিক কাঁটাতারে তা বিভক্ত। শুধুই কী সরোজ, নীরজের প্রসঙ্গে আরশাদের মা বলেছিলেন, ‘নীরজও তো আমার ছেলের মতো। ও নাদিমের বন্ধু ও ভাই। জেতা-হারা খেলার অঙ্গ। ঈশ্বরের আশীর্বাদ ওর সঙ্গে থাকুক। ও আরও পদক জিতুক। নীরজ-আরশাদ ভাইয়ের মতো। আমিও নীরজের জন্য় প্রার্থনা করেছি।’জ্য়াভলিন ফাইনালের পর সাংবাদিক বৈঠকে এসেছিলেন নীরজ-আরশাদ। নীরজ বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানে জ্য়াভেলিন জনপ্রিয় নয়। আমি জানি আরশাদ কী কঠোর পরিশ্রম নাই করেছে। এটা ওর জন্য় যেমন বিরাট খবর তেমনই পাকিস্তানের মানুষের জন্য়ও। আজ রাতের ও যোগ্য় বিজয়ী। আমরা দু’জনেই দেশকে গর্বিত করেছি।’ অলিম্পিক্স ফাইনাল দেখেছে এশিয়ার দুই দেশের দাপট। যে খেলায় ইউরোপিয়ানদের একচেটিয়া আধিপত্য় থাকে, সেখানে এশিয়ার দুই দেশ দেখিয়ে দিল। প্রাক্তন পাক কিংবদন্তি শোয়েব আখতারও মোহিত নীরজের মায়ের এই কথায়। তিনিও তাঁর এক্স হ্য়ান্ডেলে নীরজের মায়ের বার্তা শেয়ার করে মুগ্ধতা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: জলেই জ্বলছে আগুন…তাঁর রূপের ছটায় বাকিদের মাথা নষ্ট, শেষে ‘গ্রাম’ ছাড়া সুন্দরী!
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)