জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ফের কেঁপে উঠল ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত মায়ানমারের মাটি। ফের ভূমিকম্প আঘাত হানল সেখানে। আজ, রবিবার, ১৩ এপ্রিল, স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে ভূমিকম্প আঘাত হানে।
এবার কোথায় হয় এই ভূকম্প?
মায়ানমারের মান্দালয় অঞ্চলের চাইংয়ের কাছে আজকের এই ভূমিকম্প আঘাত করেছে। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৬। এই কম্পনটির গভীরতা ছিল মাটি থেকে ৩৫ কিলোমিটার গভীরে।
প্রসঙ্গত, মার্চ মাসের শেষের দিকে মায়ানমারে দু’টি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর মান্দালয় থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পের এপিসেন্টার। ওই ভূমিকম্পে মায়ানমারে এখনও পর্যন্ত সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে, আহত প্রায় ৫ হাজার। এখনও নিখোঁজ অনেকেই। ভয়াবহ একটি ছবি। সারা পৃথিবীই এই ছবিতে শঙ্কিত, মর্মাহত। সবচেয়ে বড় কথা, ভয়ংকর এই ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছিল পার্শ্ববর্তী থাইল্যান্ডেও। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে একটি নির্মীয়মাণ ৩০ তলা ভবন ভেঙে পড়ে। সেখানেও বহু মানুষের মৃত্যু হয়। মায়ানমার-ব্যাংককের এই মার্চের ভূমিকম্প সাম্প্রতিক কালের অন্যতম ভয়ংকর ভূমিকম্প হিসেবে চিহ্নিত। রিখটার স্কেলে যথাক্রমে ৭.৭ ও ৬.৪ মাত্রার কম্পন ঘটে এখানে।
আরও পড়ুন: Horoscope Today: কর্কটের প্রেম, সিংহের আত্মশক্তি, মীনের চ্যালেঞ্জ! জেনে নিন, আজ কেমন কাটবে আপনার দিন…
আরও পড়ুন: Gajon Sannyasi Accident: চড়কসন্ন্যাসী হয়েছিল নবমশ্রেণির পড়ুয়া! গাজনের ‘ঝাঁপ’ থেকে হঠাৎই নীচে পড়ে গেল সে…উফ্…
এই ভূমিকম্পের ক্ষতির বহরের মধ্যে ইদানীং একটি প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছিল। ব্যাংককে কেন মাত্র একটি বহুতলই ধসে পড়ল? ব্যাংককে ভূমিকম্পের সময়কার একটি ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ভবনগুলি অস্বাভাবিকভাবে দুলছিল। একটি বাড়ির ছাদের সুইমিং পুল থেকে জল ছিটকে নীচে পড়তেও দেখা গিয়েছে। ব্যাংককের চাতুচাক জেলায় অবস্থিত ব্যাংককের অডিট বিভাগের জেনারেলের নির্মাণাধীন কার্যালয় ভবনটি ভেঙে পড়ার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের এক সিনিয়র লেকচারারের মতে, ২০০৯ সালের আগ পর্যন্ত ব্যাংককে ভূমিকম্পপ্রতিরোধী ভবন নির্মাণের কোনো নিরাপত্তা-মানদণ্ড ছিল না। এর অর্থ, পুরনো ভবনগুলি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার আশঙ্কা।
ব্যাংককে যে ভবনটি ধসে পড়েছে, সেটি নতুন– নির্মাণাধীন ছিল। সেই হিসেবে এটি নতুন মানদণ্ড মেনেই তৈরি হওয়ার কথা ছিল। তাহলে তো এটির ভেঙে পড়ার কোনও কারণই ছিল না! কেন ভাঙল?
বলা হচ্ছে, ভবনটির ধসের অন্যতম কারণ হতে পারে ব্যাংককের নরম মাটি। এই ধরনের মাটি ভূমিকম্পের কম্পনকে তিন থেকে চার গুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাছাড়া, কংক্রিট ও রডের মান এবং ভবনের কাঠামোগত কিছু অনিয়মও এই ভেঙে পড়ার কারণ হতে পারে। ভিডিয়োটি বিশ্লেষণ করে ভবনটির নির্মাণগত ত্রুটি ধরা পড়েছে। দেখা গিয়েছে, সরু সমান্তরাল স্ল্যাব পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে বাড়িটিতে। এই নির্মাণ-পদ্ধতিতে ফ্লোরগুলি সরাসরি স্তম্ভের উপর রাখা হয়, কোনো বিম, যাকে গার্ডার বলা হয়, ব্যবহার করা হয়নি। ভূমিকম্প-প্রবণ এলাকায় এই পদ্ধতি কিন্তু এখন আর সুপারিশ করা হয় না। কারণ এটি যথেষ্ট মজবুত ও স্থিতিশীল নয়।
কিন্তু বাড়িটি ভেঙে পড়ার পর থেকেই তদন্তে অন্য ব্যাপার বেরিয়ে এসেছে। ওই ভবনের কর্তৃপক্ষ নির্মাণকারী সংস্থাদের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে এই মর্মে যে, তারা ওই ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত কোনও তথ্যাদিই আপাতত দুর্ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করে সরাতে পারবেন না। কেন, তারা কি এমন কিছু করছিল? হ্যাঁ, সেটাই খবর। চারটি চিনা কোম্পানি এই ভবনের নির্মাণকাজে জড়িত ছিল। এইরকম অন্তত ৩০টি ডকুমেন্ট নাকি পাওয়াও গিয়েছে! তাহলে, এই বাড়ি ভেঙে পড়ার পিছনে রহস্য খুঁজলে তা কি চিনের কলঙ্কই বাড়াবে?
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)