জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: রমজান মাসে মাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাস হল লাইলাতুল কদর। আজকের রাতই হল সেই লাইলাতুল কদর বা শবে কদর। শব অর্থাত্ রাত। মুসলিমরা এই রাতের জন্য সারাবছর অপেক্ষা করে থাকেন। বলা হয়ে থাকে এই রাতটি হল রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের(ক্ষমা) রাত। অর্থাত্ এই রাতে সাফল্য, ক্ষমা ও উত্কর্ষের জন্য প্রার্থনা পূর্ণ করেন।
দিনের রসুল হজরত মহম্মদ(স) যে ৫টি রাতকে গুরুত্বপূর্ণ বলেছেন তার মধ্যে শবে কদর অন্যতম। এই রাতকে সর্বাধিক মর্যাদার অধিকারী বলেছেন। ইসলাম বিশেষজ্ঞরা বলেন, নবির(স) অছিলায় এই রাতে মানুষজনের প্রার্থনা পূর্ণ হয়। তারা পরিশুদ্ধ,পবিত্র এবং পাপমুক্ত হন। তাই শবে কদরকে অনেক ওপরে রাখা হয়। পাশাপাশি এও বলা হয় রামজানের ২০টি রোজার পর প্রতি বিজোড় রাতকে শবে কদর হিসেবে বিবেচনা করে প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে। তবে ২৭তম রোজা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন-ছাব্বিশের মহাসংগ্রাম; ৪৮ দেশের লড়াইয়ে চূড়ান্ত ৭, বাকিদের বিশ্বকাপে এন্টি কীভাবে?
পবিত্র কোরআনে এই রাতের গুরুত্ব বর্ণনা করে একটি সুরা অবতীর্ণ করা হয়েছে। আর তাতে বলা হয়েছে ‘লায়লাতুল ক্বাদরি খায়রুম মিন আলফি শাহর’ অর্থাৎ কদর রাত হাজার মাসের চেয়েও অনেক শ্রেষ্ঠ এবং উত্তম। এই রাতে নামাজ পড়া, কোরআন পাঠ করা , জিকির করা, মোরাকাবা, দোয়া-দরুদ, মিলাদ-কিয়াম, ইস্তেগফার, কবর জিয়ারত, দান-খয়রাত ইত্যাদি নফল ইবাদতে সারারাত অর্থাৎ মাগরিবের পর থেকে ফজর পর্যন্ত লিপ্ত থাকলে এক হাজার মাস বা ৮৩ বছর ৪ মাস ইবাদতের শওয়াব পাওয়া যায়। ফলে এই রাতে দেখা যায় মসজিদে মসজিদে মানুষ প্রার্থনা করছেন। ভোর রাতে ঘরে ফিরছেন।
এই রাতে আগত এক বছরের জন্য সুখ-দুঃখ, ভালো-মন্দ, আয়-ব্যয়, জীবন-জীবিকা ইত্যাদি নির্ধারণ করা হয় এবং তা সংশ্লিষ্ট ফেরেশতাদের হাতে সোপর্দ করা হয়। এ রাতে হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম অন্যান্য ফেরেশতাদের নিয়ে জমিনে নেমে আসেন। পবিত্র কোরআন শরীফের অবতরণ এ রাতেই হয়েছিল বিধায় এ রাতকে ‘লায়লাতুল কদর’ বা ‘মহিমান্বিত রজনী’ বলা হয়।
আরও পড়ুন-‘১২ বছর ধরে চলছে পরকীয়া! আমাকে গাড়ি চাপা দিয়ে মারতে যায়’, বিস্ফোরক দাবি স্বামীর! রহস্য গোয়ালিয়রে…
ইসলামে যে কয়টি হাদিসকে প্রমাণ্য বলে মনে করা হয় তার মধ্যে একটি হল বুখারি শরিফ। তবে পবিত্র হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী এই রাতে ব্যভিচারী, মদ্যপায়ী, সুদখোর, ঘুষখোর, গণক, অপরের কুৎসা রটনাকারী, হিংসুক, মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান ইত্যাদি লোকদের দোয়া কবুল হয় না। এ জন্যে যাদের এরকম দোষ রয়েছে, তারা এই রাত আসার আগেই সব খারাপ কাজ ত্য়াগ করে প্রার্থনা করা উচিত। নবি(স) নিজে বলেছেন, শবে কদরে জিব্রাঈল (আল্লাহর দ্রুত) একদল ফেরেশতা-সহ এ পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন এবং ইবাদাতে লিপ্ত বান্দাদের প্রতি করুণা বর্ষণ করেন।’ তাই এই রাতের গুরুত্ব অপরিসীম। ফলে অধিকাংশ মুসলিম এই রাতের প্রার্থনা হাতছাড়া করতে চান না।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)