আবির দত্ত, কলকাতা: দীর্ঘ হিংসা, দীর্ঘ অশান্তির পর ধীরে ধীরে ছন্দে ফেরার মরিয়া চেষ্টায় মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান (Murshidabad Chaos)। দীর্ঘ বিরতির পর, বৃহস্পতিবার, ধুলিয়ানের ঘনশ্যামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মানবতার পাঠ পড়ালেন শিক্ষকেরা। পড়ুয়া মনে কোনওভাবে হিংসার আঁচ পৌঁছতে দেবেন না বলে বদ্ধপরিকর সফিকুল-অপূর্ব স্যারেরা।
গত কয়েক দিনে ঝড় বয়ে গেছে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে। ওয়াকফ বিরোধিতার নামে সেখানে জ্বলেছে হিংসার আগুন। এই ধুলিয়ানেরই জাফরাবাদে কুপিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছিল বাবা-ছেলেকে। হিংসার সেসব ছবি চাক্ষুষ করেছিলেন স্কুলের শিক্ষকেরাও। হিংসায় অশান্ত মুর্শিদাবাদের সকুলে বৃহস্পতিবার সেই মানবতার পাঠই পড়ালেন শিক্ষকরা। ঘনশ্যামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মহম্মদ ফারুক হোসেন বলেন, “বাচ্চারা সমাজ গঠনের একটা প্রথম অঙ্গ। এদের মধ্যে যদি ওই ভয়টা কাটিয়ে আবার শিক্ষাঙ্গন আনতে পারে, তাহলে কী হবে? তাহলে, আবার যাতে আমরা সেই বার্তাটা যাতে গোটা সমাজে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যে ‘আরে বাচ্চারা যদি আসতে পারে, তাহলে আমাদের চলেফেরা করতে অসুবিধাটা কি?’ এই যে বার্তাটা, এই বার্তাটা সবার কাছে আমরা দিতে চাইছি। যে লুঠ শপিং মলে তাণ্ডব হচ্ছিল, তার পাশেই আমার বাড়ি। অমর ভগত, আমার কাকু সমতুল্য, তাঁর যে কান্না আমি যে অনুভূত করছিলাম, আমার ভিতরেও কান্না আসছিল। আমি মনে মনে ভাবছিলাম যে মনে হয় আমরা আর বাঁচব না।”
তবে স্কুলের কচিকাঁচাদের মনকে সেই হিংসার প্রভাব থেকে যতটা মুক্ত রাখা যায়, আপ্রাণ সেই চেষ্টা করছেন শিক্ষকরা। শিক্ষক অপূর্বকুমার সরকার বলেন, “আমরা ভীষণ আতঙ্কের মধ্যে ছিলাম ১১ তারিখ। বেলা ২টোর সময়, আমরা এই স্কুলেই ছিলাম। সবার সঙ্গে ফোনাফুনি হচ্ছে যে ধুলিয়ানে একটা বিশাল ব়ড় ধরনের ঘটনা ঘটেছে।” প্রধান শিক্ষক সফিকুল আলম বলেন, “আমাদের বিদ্যালয়ের তরফ থেকে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষকেরা অভিভাবকদের কাছে গিয়ে আমরা তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করছি যে পরিবেশ এখন স্বাভাবিক আছে, বাচ্চাদের পড়াশোনার ব্যাপার আছে। আপনারা বাচ্চাদের নিয়মিত স্কুলে পাঠান।”
এদিকে মালদার বৈষ্ণবনগরের পারলালপুর হাই স্কুলে ঘরছাড়াদের ত্রাণ দিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ। ত্রাণ না দিয়েই ফিরতে হয় সাধু-সন্তদের। ঘরছাড়াদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে বাধার মুখে পড়তে হয় বঙ্গীয় হিনদু সেনার প্রতিষ্ঠাতা অম্বিকানন্দ মহারাজকেও। প্রায় আড়াই ঘণ্টা টানাপোড়েনের পর ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেয় পুলিশ।
আরও দেখুন