রাজীব চৌধুরী ও আবির দত্ত, মুর্শিদাবাদ: এখনও থমথমে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad Waqf Protest) সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ান, সুতি। রাস্তায় টহল দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। রয়েছে পুলিশও। তবু আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না। অশান্তি ঠেকাতে নিজেরাই বাঁশের ব্যারিকেড তৈরি করেছেন বাসিন্দারা। আস্থা ফেরাতে শান্তি কমিটি তৈরি করে মিছিল, পথসভার আয়োজন করছে নাগরিক সমাজ।
কয়েকটা দিন পেরিয়ে গেছে। তবে তাণ্ডবের ছবিটা ভুলতে পারছেন না ধুলিয়ানের বাসিন্দারা। চোখের সামনে যেভাবে ভাঙচুর হয়েছে, লুঠপাট চলেছে, আগুন লাগানো হয়েছে, তাতে আতঙ্কিত স্থানীয়রা। পুলিশের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না। তাই ধুলিয়ানের রতনপুর গ্রামের বাসিন্দারাই তৈরি করেছেন বাঁশের ব্যারিকেড। ওই এলাকার বাসিন্দা আলি খান বলেন, “আমরা এখানে সবাই শান্ত আছি, ভাল আছি, নিজেদের সেফটির জন্য রাখা ছিল এটা (বাঁশ)। সকালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেছে,তার জন্য বাঁশগুলো সব খোলা হয়েছে। যদি বাইরের কোনও লোক এসে আবার অ্যাটাক করে, বিকল্পভাবে ওই জন্য রাখা হয়েছে ওটা (বাঁশ), সেফটির জন্য।”
কোথাও গ্রামে ঢোকার রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। গ্রামে গ্রামে তৈরি করা হয়েছে শান্তি কমিটি। নতুন করে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়া আটকাতে কমিটির সদস্যরা কখনও পথসভা করছেন। কখনও গ্রামবাসীদের নিয়ে মিছিল করছেন। পেশায় প্রধান শিক্ষক ও শান্তি কমিটির সদস্য রতনকুমার দাস বলেন, “আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছি যে, আপনারা অযথা কেউ আতঙ্কিত হবেন না। গুজব কেউ ছড়াবেন না এবং গুজবে কান দেবেন না। কেউ যদি গুজব ছড়ায়, তাহলে সেই ব্যক্তিকে শনাক্ত করুন এবং প্রশাসনের হাতে তাকে তুলে দিন। আপনারা নিঃসন্দেহে কোনও ভয় না করে বাড়িতে থাকুন। তবে সচেতন থাকুন, কান খোলা রাখুন, চোখ খোলা রাখুন যে, কেউ গুজব ছড়াচ্ছে কি না।”
একদিকে, মুর্শিদাবাদে সাধারণ মানুষকে ভরসা জুগিয়ে গ্রাম না ছাড়ার কথা বলা হচ্ছে। অন্যদিকে, নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে নবাবের জেলাকে। মুর্শিদাবাদের হিংসা নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য় করেছেন এই জেলারই প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর মুখে। প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাফতি বলছেন, “মুর্শিদাবাদের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে মুর্শিদাবাদের উত্তর প্রান্তে এই দাঙ্গা এমনি এমনি ছড়িয়ে পড়ছে না। নির্বাচনী অঙ্ক বড় খতরনাক!” মুর্শিদাবাদের এই পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলছেন, “রবীন্দ্র সঙ্গীত, ঢাকের আওয়াজ,নজরুল গীতি শোনা যাবে না নববর্ষে আর। বম্ব-বন্দুকের আওয়াজই শোনা যাবে।”
আরও দেখুন