জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: প্রায় দীর্ঘ এক বছর পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরলেন জাতীয় দলের মেগাস্টার মহম্মদ শামি (Mohammed Shami)। গত বুধবার বাংলার হয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন বোলিং মহাতারকা। ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামে, বাংলা-মধ্যপ্রদেশ রঞ্জি ম্যাচের হাত ধরে শামি, ৩৬০ দিন পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরেছিলেন। গতকাল ১০ ওভার বল করে ৩৪ রান দিয়ে কোনও উইকেট পাননি তিনি। শুরু হয়ে গিয়েছিল বিস্তর সমালোচনা। কিন্তু বাংলা-মধ্যপ্রদেশ রঞ্জি ম্যাচের দ্বিতীয় দিনই শামি বুঝিয়ে দিলেন তিনি কোন ধাতুতে গড়া! এদিন ১৯ ওভার বল করে ৫৪ রান দিয়ে এক-দুই নয়, চার উইকেট তুলে উড়িয়ে দিলেন মধ্যপ্রদেশকে।
আরও পড়ুন: ভয়ংকর ভরাডুবির পরই আতঙ্কের অস্ট্রেলিয়া, ডনের দেশে এবার স্বয়ং ‘ঈশ্বর’ আসছেন বাঁচাতে?
টস জিতে অনুষ্টুপ মজুমদারের দল প্রথমে ব্য়াট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আরিয়ান পাণ্ডে ও কুলওয়ান্ত খেজোরলিয়ার জোড়া ফলায় বাংলার প্রথম ৫ উইকেট চলে গিয়েছিল মাত্র ৭৯ রানে! আরিয়ান-কুলওয়ান্ত দু’জনেই এদিন চার উইকেট করে নিয়েছেন। শাহবাজ আহমেদ (৯২) ও অনুষ্টুপ (৪৪) যদি ব্য়াট হাতে দাঁড়াতে না পারতেন, তাহলে বাংলার অবস্থা খুবই শোচনীয় হত। বাংলা শেষপর্যন্ত ২২৮ রান তুলতে সমর্থ হয়। জবাবে শুভম শর্মার মধ্যপ্রদেশ প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৬৭ রানে গুটিয়ে গেল।
গতকালের ১০৩ রানের সঙ্গে ৯ উইকেটের পুঁজি নিয়ে দ্বিতীয় দিন মাঠে নেমেছিল মধ্যপ্রদেশ। কিন্তু ৬৪ রানের মধ্য়ে দলের বাকি ৯ উইকেট চলে গেল। মধ্যপ্রদেশের হয়ে শুভ্রাংশু সেনাপতি (৪৭) ও রজত পতিদার (৪১) যা রান করার করেছেন। এদিন শামির চার উইকেটের সঙ্গেই বল হাতে ছাপ রেখেছেন সুরজ সিন্ধু জয়সওয়াল ও শামির ভাই মহম্মদ কাইফ। তাঁরা পেয়েছেন দুই উইকেট করে। রোহিত কুমার নিয়েছেন এক উইকেট। এক বছর পর মাঠে ফিরেই যে শামি দারুণ কিছু করবেন, এমন প্রত্যাশা হয়তো কারোরই ছিল না। তবে তিনি গতকাল ভালো বল করেছেন। ফর্মে ফিরেছেন। এদিন শামি কেমন বল করেন সেদিকেই চোখ ছিল সকলের। আর শামি যা করার করে দিলেন!
বাংলা দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছে। তবে ১৭০ রান তুলতে গিয়েই চলে গিয়েছে ৫ উইকেট। টপ অর্ডারে দুই সুদীপ রানের দেখা পেয়েছেন। ঘরামি ও চট্টোপাধ্য়ায় ৪০ রানের ইনিংস খেলেছেন। যদিও চারে নেমে অনুষ্টুপ মাত্র ১৯ রানে আউট হয়ে যান। দিনের শেষে ঋত্ত্বিক চট্টোপাধ্য়ায় (৩৩) ও ঋদ্ধিমান সাহা (২১) রানে অপরাজিত আছেন। বাংলা এখনই ২৩১ রানের লিড নিয়ে ফেলেছে মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে।
২০২৩ সালের জুনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল শেষ বার হাতে লাল বল তুলে নিয়েছিলেন শামি। পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপের পর এই প্রথম মাঠে নামলেন শামি। দীর্ঘদিন গোড়ালির চোটে ভোগা শামিকে গত মার্চের মাঝামঝি সময়ে বিদেশে গিয়ে অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছিল। কাজে দেয়নি ইঞ্জেকশনও। চোট-আঘাত সারিয়ে ৩৩ বছরের উত্তরপ্রদেশের ক্রিকেটার নেটে বল হাতে নেমেও পড়েছিলেন। বোলিং শুরু করে দিয়েছিলেন তারকা পেসার। কিন্তু সেরে ওঠার পরে ফের বোল্ডার চলে আসে! জানা যায় শামির চোট আবার মাথাচাড়া দিয়েছিল। তাঁর হাঁটু ফুলে যায়! শামি এনসিএ-তে রিহ্য়াব শুরু করে ক্রিকেটে ফিরলেন।
শামির জন্য রঞ্জি ট্রফি অত্য়ান্ত গুরুত্বপূর্ণ। অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর ইতিহাস দুর্দান্ত। ২০২৮-১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ভারতের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের নেপথ্য়ে তাঁর অবদান আজও ভক্তদের স্মৃতিতে তাজা। রঞ্জি ট্রফিতে সফল প্রত্যাবর্তন করতে পারলেই শামি উড়ে যাবেন অস্ট্রেলিয়ায়। অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম এবং দ্বিতীয় টেস্টের মাঝে ১০ দিনের ব্যবধান থাকবে। দ্বিতীয় টেস্টের আগেই শামি ঢুকে পড়তে পারেন ক্য়াঙারুর দেশে। শামির প্রত্যাবর্তন ভারতের পেস আক্রমণ ভাগে বাড়তি অক্সিজেন দেবে, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। বুমরা-সিরাজের সঙ্গে তিনি জুড়ে গেলেই খেলা ঘুরে যাবে। ফলে রঞ্জিই হতে চলেছে শামির ফেরার মঞ্চ। যেখানে প্রমাণ করতে পারলেই কেল্লাফতে।
আরও পড়ুন: তিলক ভার্মার সেঞ্চুরিতে কেন দেওয়ালে মাথা ঠুকছে ভারতের চিরশত্রু পাকিস্তান?
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)