বিষাক্ত স্যালাইনের সঙ্গে অক্সিটোসিন-বিপত্তিতেই চরম পরিণতি প্রসূতির ? বিস্ফোরক রিপোর্ট
কলকাতা : বিষাক্ত স্যালাইনের সঙ্গে অক্সিটোসিন-বিপত্তিতেই প্রসূতির মৃত্যু ? মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্যালাইনকাণ্ডে সাড়ে ৫ পাতার বিস্ফোরক রিপোর্ট জমা পড়ল স্বাস্থ্য ভবনে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘অক্সিটোসিনের অতিরিক্ত ব্যবহারেই প্রসূতিদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। প্রোটোকল না মেনে ৫ রোগীকে অক্সিটোসিনের হাই ডোজ দেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত ১০ ইউনিটের বদলে সবাইকে ১৫-২৫ ইউনিট অক্সিটোসিন দেওয়া হয়েছিল। অক্সিটোসিনের ডোজ বেশি হয়ে যাওয়ায় রোগীদের রক্তচাপ কমে যায়।’
প্রসবের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত রুখতে অক্সিটোসিন দেওয়া হয়। রক্তপাতের আগে বা রক্তপাত বন্ধের জন্য অক্সিটোসিন দেওয়া যেতে পারে। দুই ক্ষেত্রে অক্সিটোসিনের দু’রকম ডোজ দেওয়া হয়। কিন্তু, রিপোর্টে উল্লেখ, মেদিনীপুরে সব প্রসূতিরই অতিরিক্ত রক্তপাত হয়নি। একজনের রক্তপাত বেশি হয়েছে বলে টিকিটে লেখা ছিল। বাকি রোগীদের ক্ষেত্রে এরকম কোন নোট ছিল না। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই অক্সিটোসিনের বেশি ব্যবহার হয়েছে।’ রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইনে গলদ ছিল বলেও উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।
আরও বলা হয়েছে, ‘ঘটনার দিন রাতে গাইনি বিভাগে ডিউটিতে ছিলেন এক সিনিয়র RMO। সিসিটিভি-তে ওই RMO-কে ওটিতে ঢুকতে দেখা যায় । যদিও অপারেশন টেবিলের সামনে ছিলেন না ওই RMO। PGT-দের দিয়ে অপারেশন করানো হয়েছে।’
সন্তান প্রসবের পরই, মৃত্য়ুর কোলে ঢলে পড়েছেন এক প্রসূতি। তিনজন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে। তার মধ্য়ে দু’জন ভেন্টিলেশনে। পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্য়ালের তৈরি রিঙ্গার ল্য়াকটেট ব্য়বহারের ফলেই এই পরিণতি বলে অভিযোগ। এই প্রেক্ষাপটে আবার রোগীর পরিবারের থেকে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কিন্তু, এতগুলো মানুষকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলল কারা ? কারা এই ঘটনার জন্য় দায়ী? এনিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এদিকে ‘বিষাক্ত’ স্যালাইনে ৩ প্রসূতির শারীরিক অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক। SSKM হাসপাতাল সূত্রে খবর, সংক্রমণের কারণে তাঁদের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে গেছে। ফুসফুস ও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঠিক মতো কাজ করছে না। ৩ জনের চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল বোর্ডে স্নায়ুরোগ, হৃদরোগ, পালমোনোলজি, মাইক্রো বায়োলজি, বায়ো কেমিস্ট্রি বিভাগকেও যুক্ত করা হয়েছে। ৩ প্রসূতির চিকিৎসার দায়িত্বে এখন ১৩ জনের মেডিক্যাল বোর্ড। রবিবার রাত থেকে SSKM-এ ITU-তে ভর্তি রয়েছেন নাসরিন খাতুন, ক্রিটিক্যাল কেয়ারে রয়েছেন মাম্পি সিংহ ও মিনারা বিবি। নাসরিন ও মাম্পি ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। প্রস্রাব বন্ধ থাকায় গতকাল এই দুই প্রসূতির ডায়ালিসিস হয়েছে।
আরও দেখুন