<p><strong>আবির দত্ত, কলকাতা :</strong> নারকেলডাঙার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়ে মৃত্যু হয়েছ এক ব্যক্তির। মৃতের নাম হাবিবুল্লা মোল্লা। বয়স ৫০ বছর। তিনি উত্তর ২৪ পরগনার ন্যাজাটের বাসিন্দা। কর্মসূত্রে থাকতেন নারকেলডাঙার খাল পাড়ের এই বস্তিতে। মৃতের বোন জানিয়েছেন, শনিবার রাতে দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়েছিলেন তিনি। তারপর আগুন লাগায় সেখানেই সব শেষ হয়ে গিয়েছে। প্রথমে তাঁরা হাবিবুল্লাকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পরে ঘরের মধ্যে শায়িত অবস্থায় পাওয়া যায় তাঁকে। </p>
<p>শনিবার রাত ১০টা নাগাদ নারকেলডাঙা খাল পাড়ের ঝুপড়িতে আগুন লাগে। একের পর এক সিলিন্ডার ফাটতে শুরু করে। আগুন ছড়িয়ে পড়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা পিক আপ ভ্যানে। স্থানীয়দের দাবি, ঝুপড়ির পাশে একাধিক গুদাম রয়েছে। সেখান থেকেই আগুন ছড়ায়। দমকলের ১৬টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও মাথার ওপর ছাদ হারিয়েছে বহু পরিবার। ভোরের আলো ফুটতেই ছাইয়ের গাদায় শেষ সম্বল হাতড়ে বেড়াচ্ছেন ঝুপড়ির বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, দমকল দেরিতে আসায় আগুনের গ্রাসে চলে যায় একের পর এক ঝুপড়ি। দমকলের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। </p>
<p>স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ১০ থেকে ১৫ মিনিটের রাস্তা, অথচ ১ ঘণ্টা পরে এসেছে দমকলের গাড়ি। আগে এলে এভাবে সব খোয়াতে হত না। এত ক্ষয়ক্ষতি হত না। শনিবার রাতের বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের জেরে শিশুদের নিয়ে কার্যত পথে বসতে হয়েছে ওই এলাকার ঝুপড়িবাসীদের। বেশিরভাগেরই ঘর পুড়ে গিয়েছে। ভিতরে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। কারও সাইকেল পুড়ে গিয়েছে। কারও বাড়িতে পুড়েছে বিয়ের জন্য জোগাড় করে রাখা টাকা, গয়না, শাড়ি। </p>
<p>চোখের জল বাঁধ মানছেন ক্ষতিগ্রস্তদের। ধরা গলায় অভিযোগ জানাচ্ছেন, ১০-১৫ মিনিটের রাস্তা আসতে ঘণ্টা পার হয়ে গিয়েছে। হেঁটে এলেও এত সময় লাগে না। সেখানে দমকলের গাড়ি আসতে কীভাবে এত সময় লাগল? প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা। কান্নায় ভেঙে পড়ে বাসিন্দারা বলছেন, দমকল আগে এলে হয়তো ঘরের ভিতর থেকে কিছু জিনিস বের করতে পারতেন তাঁরা। এক মহিলা জানিয়েছেন, তাঁদের সব পুড়ে গিয়েছে। এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছেন ঘর থেকে। রাত থেকে খাওয়া নেই। টাকা, গয়না – সব পুড়ে গেছে। পাশের একটা বাড়িতে আগুন লেগেছিল। সেখানে জল দিলে আগুন নিভত। সেটা দেওয়া হয়নি। দমকল বলেছে ১০ মিনিটে এসেছি। তাহলে এত ঘর পুড়ত? </p>
<p>যে গুদামে আগুন লাগে তার সামনে থাকা ম্যাটাডোর থেকে এখনও বেরোচ্ছে ধোঁয়া। অনুমান, এর মধ্যে দাহ্য বস্তু ছিল। নারকেলডাঙা খাল পাড়ের এই ধরনের কাগজের গুদাম, পিচবোর্ডের গুদাম কি আদৌ বৈধ? এখানে কি অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা ছিল? আর থাকলেও তা কি কাজ করেছিল? উঠছে প্রচুর প্রশ্ন। খাল পাড়ের এইসব গুদামে যাঁরা কাজ করতেন তাঁরাই থাকতেন রাস্তার উল্টোদিকে। তাঁদের বাড়িতেই ছড়িয়ে পড়েছে আগুন। সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, হাওয়ার গতি, ইলেকট্রিক তার- অনুমান এইসবের কারণেই আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। </p>
Source link
ছাইয়ের গাদায় শেষ সম্বলটুকুর মরিয়া খোঁজ, নারকেলডাঙায় দমকল দেরিতে আসাতেই এত ক্ষতি, অভিযোগ স্থানীয়

+ There are no comments
Add yours