NOW READING:
‘এবারের মহাকুম্ভ ১৪৪ বছর পর নয়’, বললেন মমতা, একই কথা বলেছিলেন শঙ্করাচার্য
February 25, 2025

‘এবারের মহাকুম্ভ ১৪৪ বছর পর নয়’, বললেন মমতা, একই কথা বলেছিলেন শঙ্করাচার্য

‘এবারের মহাকুম্ভ ১৪৪ বছর পর নয়’, বললেন মমতা, একই কথা বলেছিলেন শঙ্করাচার্য
Listen to this article


কলকাতা: পর পর দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় মহাকুম্ভকে ‘মৃত্যুকুম্ভ’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই মন্তব্যে বিতর্ক হতে সময় লাগেনি। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বিজেপি-র প্রায় সকলেই তীব্র আক্রমণ করেন তাঁকে। সেই নিয়ে এবার মুখ খুললেন মমতা। জানালেন, তিনি পুণ্যার্থীদের অসম্মান করেননি। তাঁর মন্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। পাশাপাশি, ১৪৪ বছর পর মহাকুম্ভ বলে যে প্রচার হচ্ছে, তার সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুললেন মমতা। সম্প্রতি একই কথা শোনা যায় শঙ্করাচার্যের মুখেও। (Mamata Banerjee)

মঙ্গলবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা। সেখানে দীঘার জগন্নাথ ধামের প্রসঙ্গে মমতা জানান, হিডকোকে দায়িত্ব দিয়েছে তাঁর সরকার। প্রত্যেককে আসার জগন্নাথ ধাম দর্শনে আহ্বান জানাচ্ছেন তিনি। কিন্তু এব্যাপারে ‘হাইপ’ তুলতে চান না। ক্ষমতার বাইরে গিয়ে প্রচার করতে চায় না তাঁর সরকার। আর এ প্রসঙ্গেই উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে আয়োজিত কুম্ভমেলার প্রসঙ্গ টানেন তিনি। (Mahakumbh 2025)

মমতা বলেন, “আমি যতদূর জানি, ১২ বছর অন্তর মহাকুম্ভ হয়। আমি যতদূর জানি, পুরীর মন্দিরের নিমকাঠের মূর্তিরও ১২ বছর অন্তর পাল্টানো হয়। এক এক জায়গায় এক এক রকম নিয়ম।  কিন্তু যাঁরা বলছেন ১৪৪ বছর কুম্ভ হচ্ছে এটা ঠিক নয়। একতরফা প্রচার হচ্ছে। যদি ভুল থাকে সংশোধন করে দেবেন। কিন্তু আমি যতদূর জানি, গঙ্গাসাগরে প্রতিবছর পুণ্যস্নান হয় সংক্রান্তিতে। ১৪৪ বছর পর কুম্ভ হচ্ছে বা ১৪৪ বছর আগে কুম্ভ হয়েছিল, আমি এব্যাপারে অজ্ঞ। বিশিষ্ট যাঁরা আছেন, তাঁদের অনুরোধ, আপনারা গবেষণা করে আমাদের সঠিক তথ্যটা জানান।”

মমতা আরও বলেন, “অনেক জায়গায় মানুষ মারা গিয়েছেন। পদপিষ্ট হয়েছন অনেকে। যাঁরা স্নান করছেন, তাঁদের নিয়ে কিছু বলিনি আমি। তাঁদের প্রতি পূর্ণ সম্মান আছে। কে কোথায় যাবেন, কী খাবেন, কী করবেন, এটা যাঁর যাঁর নিজস্ব ব্যাপার। কিন্তু বহু মানুষ স্বজন হারিয়েছেন। আমি যদি বিয়েবাড়ির আয়োজন করি, বাড়তি খাবারের ব্যবস্থা রাখতে হয়। ৪০০ লোক ডাকলে, ব্যবস্থা করতে হয় ৫০০ লোকের। এটাই পরিকল্পনা, ব্যবস্থাপনা। ধর্মের ক্ষেত্রেও কত ক্ষমতা, কত মানুষ আসতে পারেন, কী ভাবে পৌঁছতে পারবেন, সেগুলো নিয়ে পরিকল্পনা করতে হয়। আমার কথা বিকৃত করা হয়েছে, কুকথা-অকথা বলা হয়েছে। আপনারা যা বলছেন, তা অসত্য, সম্পূর্ণ মিথ্যা। জীবনে কোনও ধর্মকে অসম্মান করিনি আমি। গঙ্গাসাগরের সময় পাঁচ-ছ’দিন ঘুমাই না আমরা। দুর্গাপুজোর সময় কার্নিভাল পর্যন্ত নজরদারি চলে।”

মমতা এদিন জানান, দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। কিন্তু পরিকল্পনা না থাকার দরুণ কিছু ঘটলে, সেক্ষেত্রে দোষ বর্তায়। কারণ মানুষকে ভুগতে হয়। যোগী তাঁকে যেভাবে আক্রমণ করেন, সেই প্রসঙ্গে মমতার বক্তব্য, “যোগীর কাছে আবেদন, আপনি আমাকে গালাগালি দিলেও আমার গায়ে লাগবে না। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আপনাকে সম্মান জানিয়েই বলছি, যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের ময়নাতদন্তের, মৃত্যুর শংসাপত্র দেননি। আমরা বাধ্য হয়েছি নিজেদের মতো করে করিয়ে নিতে। অন্য রাজ্যে কী হয়েছে জানি না। অনেক জায়গায় পদপিষ্ট হয়ে, দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা গিয়েছেন মানুষ। সকলকে ক্ষতিপূরণের আওতায় আনা হোক। ক্ষতিপূরণের ঘোষণা যখন করেছেন, অবিলম্বে হাতে টাকা তুলে দেওয়া হোক।”

এর আগে মমতার ‘মৃত্যুকুম্ভ’ মন্তব্যে বিতর্ক যখন তুঙ্গে, সেই সময় তাঁর সমর্থনে এগিয়ে আসেন জগৎগুরু শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী মহারাজ। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “১৪৪ বছর পর মহাকুম্ভ বলে মিথ্যে প্রচার করা হচ্ছে। ভিড় সামলানোর ক্ষেত্রে সঠিক ব্যবস্থাপনা ছিল না। মানুষের মৃত্যুর পরও সত্য আড়ালের চেষ্টা হয়, যা ঘোর অপরাধ। এমন পরিস্থিতিতে যদি কেউ কিছু বলেন, বিরোধিতার জায়গা থাকে না। ৩০০ কিলোমিটার যানজট হয়েছে। এটা যদি অব্যবস্থা না হয়, তাহলে কী? ব্যাগপত্র নিয়ে ২৫-৩০ কিলোমিটার হাঁটতে হয় মানুষকে। নর্দমার জল মিশছে নদীর জলে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ওই জল স্নানের উপুক্ত নয়। তা সত্ত্বেও কোটি কোটি মানুষকে বাধ্য করা হচ্ছে ডুব দিতে।”

আরও দেখুন





Source link