কলকাতা: আর জি কর কাণ্ডে এখনও রাস্তায় জুনিয়র ডাক্তাররা। বার বার তাঁদের সঙ্গে বৈঠক ভেস্তে গিয়েছে নবান্নের। এবার আর চিঠি চালাচালিতে গেলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বরং সটান ধর্নাস্থলে পৌঁছে গেলেন তিনি। জুনিয়র ডাক্তারদের মাঝে দাঁড়িয়ে এদিন তাঁদের কাজে ফিরতে আহ্বান জানান মমতা। জানিয়ে দেন, তাঁর উপর আস্থা রাখলে, অবিচার হবে না। (Mamata Banerjee)
লাইভ সম্প্রচারের দাবিকে ঘিরেই জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে নবান্নের বৈঠক ভেস্তে গিয়েছিল। এদিন সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষী রেখে সকলের মাঝে গিয়ে দাঁড়ান মমতা। তাঁকে দেখে ‘বিচার চাই’ স্লোগান আরও জোর পেলেও, ধৈর্য হারাননি। বরং নিজেকে আন্দোলনকারীদের সমব্যথী এবং সমসাথী বলে উল্লেখ করেন। এদিন ধর্নাস্থল থেকে মমতার কিছু মন্তব্য নজর কাড়ল সকলের। (Junior Doctors Protest)
- “আমার পোস্টটা বড় কথা নয়, মানুষের পোস্টই বড় কথা। আপনাদের আন্দোলনকে কুর্নিশ জানাই। কাল সারারাত ঝড়ৃজল হয়েছে। আপনারা কষ্ট পেয়েছেন। আমিও সারারাত ঘুমাতে পারিনি। আজ ৩৩-৩৪ দিন। আমিও রাতের পর রাত ঘুমাইনি। যেভাবে বসে রয়েছেন আপনারা, আমারও কষ্ট হচ্ছে। আপনারা রাস্তায় থাকলে আমাকেও পাহারাদার হিসেবে জেগে থাকতে হয়। এত ঝড়বৃষ্টি, দুর্যোগের মধ্যে আপনারা অনেক কষ্ট পেয়েছেন।”
- “আমিও চাই তিলোত্তমার বিচার হোক। সিবিআই-কে অনুরোধ করব, তাড়াতাড়ি বিচার হোক। ফাঁসি হোক তিন মাসের মধ্যে। আপনাদের এই প্ল্যাটফর্ম থেকে অনুরোধ করছি।”
- “আমাকে একটু সময় দিন। আপনারা আমাদের ঘরের ভাইবোন। আপনাদের পরিবার পরিজন রয়েছেন। অনেক রোগীও মারা যাচ্ছেন। আপনারা কাজে যোগ দিন। আপনাদের প্রতি আমি কোনও অবিচার করব না। হাসপাতালের উন্নতি, পরিকাঠামোর কাজ শুরু করে দিয়েছি এবং করব। আমার উপর আস্থা রাখুন।”
- “সব মেডিক্যাল কলেজ, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দিলাম। নতুন কমিটি গড়ব। অধ্যক্ষদের চেয়ারম্যান করব, জুনিয়র ডাক্তাররাও সদস্য হবেন, সিনিয়র ডাক্তারও থাকবেন, নার্সও থাকবেন, একজন জনপ্রতিনিধি এবং পুলিশ থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
- “আমার উপর ভরসা থাকলে, দোষীরা শাস্তি পাবেন। দোষীরা কেউ আমার শত্রু বা বন্ধু নন। আপনারা যাদের আমার বন্ধু ভাবছেন, আমি তাদের চিনি না। আমাদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্যে আসেন তাঁরা। চূড়ান্ত হয়ে আসে আমার কাছে। মাত্র একমাস যাঁরা এসেছেন, তাঁদের কেউ যদি খুন, দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকেন, সাধ্যমতো ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।”
- “আপনারা কাজে ফিরুন। আমি কোনও পদক্ষেপ করব না। আমরা উত্তরপ্রদেশ পুলিশ নই, ওরা এসমা করে। আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন। কোনও ডাক্তার, কারও বিরুদ্ধে পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমরা। আপনারা অনেক কাজ করেন। আপনাদের আমাদের প্রয়োজন। আপনারা ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিন। আমি যখন সহযোদ্ধা হিসেবে আপনাদের ধর্নামঞ্চে এসেছি, ভরসা রাখলে, আস্তে আস্তে আমি সব করে দেব। একদিনে সব হয় না, আমাকে একটু সময় দিন।”
- “দুর্নীতির কিছু, কোনও টেন্ডার আজ পর্যন্ত আমার কাছে আসেনি। রোগী কল্যাণ সমিতি কী কাজ করে, আমি জানি না। আমার আওতায় পড়ে না। আপনাদের অভিযোগ থাকলে অবশ্যই পদক্ষেপ করব। বিনা কারণে কাউকে সাজা দেওয়া যায় না। তদন্তে প্রমাণিত হলে অবশ্যই সাজা দেব। মনে রাখবেন সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। ১৭ তারিখেও শুনানি আছে। আমি চাই না, কোনও ক্ষতি হোক আপনাদের। আমি মুখ্যমন্ত্রী নই, আপনাদের দিদি হিসেবে বলতে এসেছি।”
আরও দেখুন