কলকাতা: আর জি কর কাণ্ডের পর হাসপাতালগুলির নিরাপত্তায় জোর দেওয়া হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের তরফেও সেই মর্মে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর সেই আবহেই রাজ্য পুলিশে ১২০০০ নিয়োগের ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। জানালেন, আগেই নিয়োগ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু নির্দেশ না আসায় এতদিন আটকে ছিল। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তাঁরা ডিউটি করবেন বলে জানিয়েছেন মমতা, যা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় যেখানে মূল অভিযুক্তই সিভিক ভলান্টিয়ার, তার পরও প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ না করিয়ে হাসপাতালের নিরাপত্তায় কেন পুলিশ মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, উঠছে প্রশ্ন। (Mamata Banerjee)
সরকারি হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা নিয়ে এদিন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন মমতা। বৈঠক শেষে হাসপাতালের নিরাপত্তায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের পাশাপাশি বেশ কিছু পদক্ষেপের ঘোষণা করেন মমতা। সেখানেই ১২০০০ পুলিশ নিয়োগের ঘোষণা করেন। মমতা বলেন, “আজ বললেই আজ নিরাপত্তা দিতে পারব না। যা আছে, আপাতত তা থেকে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে। আস্তে আস্তে, অডিট করে দেওয়া হচ্ছে। এই তো পুলিশে ১২ হাজার নিযুক্তি আটকে ছিল। এখনও অর্ডার আসেনি, সম্ভবত সোমবার আসবে। ১২০০০ সংখ্যাটা কম নয়। পুলিশে নিয়োগ করতে সময় লাগে। তাও আমি বলেছি, বেশি সময় না নিতে। ডাক্তারদের যেমন আমি অনুমোদন দিয়েছি, PGTরা পড়াশোনাও করবেন, চিকিৎসাও করবেন। তেমনই এরা পুলিশের ডিউটিও করবে, আবার ট্রেনিংও নেবে।” (Securities in Hospitals)
মমতা আরও বলেন, “তিন মাস-ছ’মাসের ট্রেনিংয়ের প্রয়োজন নেই। কারণ আমার কাছে অত ম্যানপাওয়ার নেই। তার মধ্যে পুজো আসছে। কেউ কেউ আবার কোর্টে চলে যাচ্ছেন। আমি কোর্টের কাছে আবেদন করতে পারি না। কিন্তু ১১২ ফুট প্রতিমা গড়ে যদি পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে, তার দায়িত্ব কে নেবেন?”
এই ঘোষণা ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন পুলিশ কর্তা সলিল ভট্টাচার্য বলেন, “এভাবে হয় না। পুলিশের যে প্রশিক্ষণ হয়, তা পুলিশ ট্রেনিং স্কুল বা কলেজে হয়। যারা অফিসার বা সাব ইনস্পেক্টর হিসেবে নিযুক্ত হন, তাঁদের এক বছরের প্রশিক্ষণ হয়। কনস্টেবলদের কমপক্ষে ছ’মাস ট্রেনিং দেওয়া রীতি। প্রশিক্ষণও নেবেন আবার ডিউটিও করবেন, এটা হয় না কি? তাঁদের শিক্ষার সঙ্গেই তো আপস হচ্ছে! ভুল প্রশিক্ষণ পাবে তো! প্রশিক্ষণ না হলে কী ডেলিভারি হবে?”
চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট আগেই বলেছে…যাকে ধরে সে তো সিভিক ভলান্টিয়ার! বর্ধমানের ভাতার থেকে অন্যত্র যারা আর জি কর করে দেবে বলেছে, কারা করেছে, সিভিক ভলান্টিয়ার! উনি তো সাত দিনের ট্রেনিং দিয়ে ডাক্তার করে দেন, চার দিনের ট্রেনিং দিয়ে নার্স করে দেন, তিন দিনের ট্রেনিং দিয়ে নিরাপত্তাকর্মী করে দেবেন এবার। এতে বিপদ বাড়বে আরও। কারণ অচেনা ছেলেপিলে, দলীয় ক্যাডারও ঢুকবে, যাদের ব্যাকগ্রাউন্ড চেক হবে না। তারা হাসপাতালে গিয়ে নতুন করে দালালচক্র খুলে বসবে। মহিলা চিকিৎসক, নার্সদের কাছে নতুন বিপদ হবে এরা।”
আরও দেখুন