রাস্তাঘাটে থুতু, নীল-সাদা দেওয়াল পান-গুটখার পিকে এখন খয়েরি, কড়া আইন আনতে নির্দেশ মমতার
কলকাতা: রাস্তার দুই পাশে হোক বা সেতুর দুই পাশের দেওয়াল। নীল-সাদা রং চোখে পড়ে শহরের প্রায় সর্বত্রই। এমনকি উড়ালপুলের স্তম্ভগুলিতেও রঙিন আল্পনা চোখে পড়ে। বাতিস্তম্ভগুলিও ঝকঝকে রাখতে তৎপরতার শেষ নেই। কিন্তু তার পরও শহরের সৌন্দর্যায়নে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কিছু মানুষের বদভ্যাস। পথচলতি মানুষ তো বটেই, গাড়ি থেকে মুখ বাড়িয়েও রাস্তায় থুতু ফেলেন অনেকে। নীল-সাদা, পরিষ্কার দেওয়ালও পানের পিক, গুটখার পিকে লালচে হয়ে উঠেছে। সেই নিয়ে এবার অসন্তোষ প্রকাশ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (Mamata Banerjee)
পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনকে ঘিরে এই মুহূর্তে তৎপরতা তুঙ্গে। তার আগে নবান্নে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক হয়। সেখানেই এ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। এত কষ্ট করে শহরের সৌন্দর্যায়ন চলছে, নীল-সাদা রং করে সাজানো হচ্ছে শহরকে। তার পরও কেন এভাবে শহর নোংরা করা হচ্ছে, সেই নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন তিনি। শহরের সৌন্দর্যায়নের স্বার্থে প্রয়োজনে যথোপযুক্ত আইন চালুর আনা যায় কি না, তা পর্যালোচনার নির্দেশ দিলেন। (Kolkata News)
শহর জুড়ে যেখানে সেখানে থুতু ফেলা, পান-গুটখার পিকে দেওয়া ভরিয়ে দেওয়া নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন মমতা। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে সেই নিয়ে কড়া নির্দেশ দেন তিনি। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী জানান, যেখানে সেখানে রাস্তায় থুতু ফেলছেন মানুষজন। পান-গুটখার পিক ফেলছেন। এতে শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। মমতা বলেন, “বিদ্যাসাগর সেতু দিয়ে আসছি। দেখি, পাঁচিলের উপর প্রচুর, গুটখার দাগ। থুতু ফেলেছেন মানুষ। এ নিয়ে কড়া আইন আনা যায় কি না দেখতে হবে।” বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে জানিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনে শহরে তাবড় দেশ এবং শিল্প সংস্থার প্রতিনিধিরা কলকাতায় আসছেন। শহরের সৌন্দর্যায়ন এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্য সরকার বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিয়ে দেখছি বিষয়টিকে। কিন্তু নীল-সাদা রং করা দেওয়াল থেকে সেতুর পাঁচিল, এমনকি বাতিস্তম্ভেও গুটখা, পানের পিক চোখে পড়ছে যত্রতত্র। সুন্দর করে আঁকা গ্রাফিতিগুলিও বাদ যায়নি। এবার নিজে তা চাক্ষুষ করে ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে বলে জানিয়েছেন।
৫ এবং ৫ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলন। ভুটানের রাজা জিগমে খেসর নামগেল ওয়াংচুক থেকে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি, সজ্জন জিন্দল, সঞ্জীব পুরি, জ্যোৎস্না সুরির পাশাপাশি, বিদেশি অতিথিদেরও সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা। তার আগে শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে। আর তাতেই রাস্তাঘাটে থুতু, পান-গুটখার পিক নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন মমতা। এর আগেও বার বার স্বচ্ছতা বজায় রাখার পক্ষে সওয়াল করেছে এসেছে রাজ্য। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি। তাই কড়া আইন থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছেন শহরবাসীদের অনেকেই।
আরও দেখুন