কলকাতা: রাজ্যে তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে বড় ঘোষণা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে দু’-দু’টি তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ঘোষণা করলেন তিনি। আগামী ২১ এপ্রিল নিজেহাতে সেই প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন বলে জানালেন। জিন্দলরাই শালবনিতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র করছে বলে জানিয়েছেন মমতা। এতে আগামী দিনে বিদ্যুৎ যেমন সুলভ হবে, তেমনই রাজ্যে কর্মসংস্থানও বাড়বে বলে জানিয়েছেন তিনি। (Mamata Banerjee)
বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা। সেখান থেকে তিনি জানান, বছর বছর বিশ্ব বাংলা শিল্প সম্মেলন নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন। কিন্তু এই মুহূর্তে বাংলাই শিল্প এবং শিল্পপতিদের গন্তব্য হয়ে উঠেছে। আর তারই ফলস্বরূপ শালবনিতে দু’টি তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে উঠছে। মমতা বলেন, “২১ এপ্রিল দুপুর ২টোয় শালবনিতে জিন্দলদের দু’টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করছি। যত দিন যাচ্ছে, মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। অন্য রাজ্য থেকেও মানুষের সংখ্যা বাড়ছে এখানে। ফলে চাহিদা বাড়ছে বিদ্যুতের। তাই বিদ্যুৎ প্রকল্পের উপর জোর দিচ্ছি আমরা।” (West Bengal Power Plant Project)
মমতা আরও বলেন, “ছ’টি ইকোনমিক করিডর করছি আমরা। ডেউচা পাঁচামি হলে অন্তত ১০০ বছর আর বাংলার সমস্যা থাকবে না। এখন গোটা বিষয়টি একতরফা চলছে। CESE চালায়, তারা দাম বাড়ায়। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে বিদ্যুতের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে, ব্যবহারেও সুবিধা হবে। এসব মাথায় রেখেই তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের উপর জোর দিচ্ছি। শালবনিতে যেটা হচ্ছে, তা ভবিষ্য়তে চাহিদার জোগান দেবে। আরও অনেকগুলি প্রকল্প হচ্ছে।”
শালবনিতে জিন্দলরা যে দুটি তাপবিদ্যুৎ ইউনিট গড়ছে বলে জানিয়েছেন মমতা। তিনি জানিয়েছেন, ৮০০ মেগাওয়াট করে মোট ১৬০০ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে। এর জন্য ১৬০০০ কোটি টাকা খরচ করছেন জিন্দলরা। পাশাপাশি, তারা অনেকগুলি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কও গড়বে। প্রতিযোগিতামূলক টেন্ডারের মাধ্যমেই তারা বরাত পেয়েছে এবং চিঠিও দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মমতা। পূর্ব ভারতে এমন প্রকল্প আর নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। শিলান্যাসের পরই কাজ শুরু হয়ে যাবে।
এর পাশাপাশি, দুর্গাপুরে ৬৬০ মেগাওয়াটের, সাগরদিঘিতে ৯৬০ মেগাওয়াটের, বক্রেশ্বরে ৬৬০ মেগাওয়াটের, সাঁওতালডিহিতে ৮০০ করে ১৬০০ মেগাওয়াটের পাশাপাশি, বাংলা জুড়ে আরও কিছু তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার কাজও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মমতা। তাঁর আশা, এতে কর্মসংস্থান বাড়বে, অর্থনীতি মজবুত হবে, ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পরিষেবা থাকবে অক্ষুণ্ণ। মমতা বলেন, “আগে শুনতাম, ‘লোডশেডিংয়ের সরকার, আর নেই দরকার’। এখনকার জেনারেশন ভুলেই গিয়েছেন। ১২ ঘণ্টাই কারেন্ট থাকত না আগে। এখন পরিষেবা অনেক উন্নত, যার জন্য আমাদেরও অনেক খরচ হয়, জনস্বার্থে ভর্তুকি দিতে হয়।”
২১ তারিখের পর ২২ এপ্রিল বেলা ১২.৩০টায় গড়বেতায় সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পেরও উদ্বোধন করবেন মমতা। মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ে হচ্ছে প্রকল্পটি। জার্মানির একটি সংস্থা ৮০ শতাংশ খরচ করছে, রাজ্যের সরকার ২০ শতাংশ। সেখানে ৭৫৭ কোটি টাকা খরচে ১১২.৫ মেগাওয়াটের সবুজ বিদ্যুৎ প্রকল্প হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মমতা। এর পাশাপাশি, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজেও গতি আনার কথা বলেছেন তিনি।
আরও দেখুন