<p><strong>সত্য়জিৎ বৈদ্য়, সৌরভ বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ও রাজীব চৌধুরী, কলকাতা:</strong> কেউ টিকিট কেটেও ট্রেনে উঠতে পারলেন না। কেউ কোনওমতে উঠলেও মাঝপথে নেমে পড়তে বাধ্য় হলেন! সংরক্ষিত কামরায় কুম্ভে যেতে গিয়ে এমনই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে এরাজ্য়েরই একাধিক বাসিন্দাকে। স্টেশনে গিয়ে ট্রেন না পাওয়ায়, শ্রীরামপুরের এক পরিবারকে তো ৭৫ হাজার টাকা খরচ করে, গাড়িতে বাড়ি ফিরতে হল! </p>
<p>লক্ষ্য় ছিল কুম্ভ!সঙ্গমে ভক্তির-ডুব। কিন্তু জীবন শেষ হয়ে গেল নয়াদিল্লি স্টেশনে প্রথমে কুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে ৩০ জনের মৃত্য়ু। তারপর কুম্ভ যাওয়ার পথে স্টেশনে ১৮জনের মৃত্য়ু। নড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে! সুব্য়বস্থা তো দূর অস্ত, অব্য়বস্থার জেরে লক্ষ লক্ষ মানুষকে যে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে ট্রেনে, তাতে বেজায় ক্ষুব্ধ তারা। সোশ্যালে ট্রেনযাত্রী মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা রঞ্জন ঘোষ বলেছেন,কুম্ভে এতজন হতাহত হয়েছে শুধু আপনাদের প্রশাসনিক ভুলের জন্য়। হাতে কনফার্ম রিজার্ভেশন টিকিট রয়েছে ,অথচ অবস্থা দেখুন! শোওয়া-বসা তো দূরস্ত! কুম্ভে যাওয়ার পথে ট্রেনে দাঁড়াবার জায়গাটুকুও নেই! বাধ্য় হন ট্রেন থেকে নেমে পড়তে! </p>
<p>আরেকজনের তো আরও নির্মম অভিজ্ঞতা! টিকিট থাকা সত্ত্বেও, ভিড়ের ঠেলায় ট্রেনে উঠতে না পেরে, ৭৫ হাজার টাকা খরচ করে, পরিবার নিয়ে গাড়ি করে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়েছেন! হুগলির শ্রীরামপুরের বাসিন্দা, দীপক ঘোষাল। বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। ৯ তারিখ ৩০ জনের একটি দলের সঙ্গে বেনারস, অযোধ্য়ার উদ্দেশ্য়ে রওনা দেন। কথা ছিল, কুম্ভ ঘুরে, আবার বেনারস থেকে ফিরতি ট্রেন ধরবেন। ট্রেন ধরবেন বলে ২ ঘণ্টা আগেই বেনারস স্টেশনে পৌঁছেও যান। <br /> <br />কুম্ভ ফেরত রাজ্য়ের বাসিন্দা দীপক ঘোষাল বলেন, ভাবতে পারেননি এরকম অভিজ্ঞতা হবে। দুঃস্বপ্নের মতো লাগছে। কীভাবে ফিরবে। রেল কিছু করতে পারেনি। প্রত্য়েক মাসে রেলে যাতায়াত করেন ,আগে জানলে যেতাম না। বাংলার জন্য় কিছু করতে পারত রেল। ওখান থেকে বিহারে যাওয়ার অনেক স্পেশাল ট্রেন আছে। বাংলা থেকে সেখানে বেশি ট্রেন নেই। আমরা জানতাম দিল্লিতে এটা হয়েছে। খুব ভয় পেয়েছি। কুম্ভ ফেরত রাজ্য়ের বাসিন্দা গৌরী বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, ৭২ বছর বয়স। ভিড়ের চাপে, ঠেলাঠেলিতে হাত কেেটে গেছে। লেগেছে। সারা জীবন অনেক বেড়াতে গেছি। বেনারস, অযোধ্য়া। এরকম হবে ভাবিনি। সব শক্তি চলে গেছে।</p>
<p>একইরকমভাবে, হয়রানির মুখে পড়তে হয়েছে, মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার বাসিন্দা রঞ্জন ঘোষকে। ১০ তারিখ, ফরাক্কা এক্সপ্রেসে চেপে প্রয়াগরাজের উদ্দেশ্য়ে রওনা হয়েছিলেন তাঁরা। হাতে বৈধ টিকিট। অথচ রিজারভেশন কামরার অবস্থাটা এইরকম!মাঝপথে, মাঝপথে পাটনায় নেমে যান ফরাক্কার এই বাসিন্দা। সেখান থেকে গাড়িতে মহাকুম্ভ।</p>
<p>আরও পড়ুন, <a title="কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলেই ‘র‍্যাগিং’! কাঠগড়ায় সিনিয়র, ২ সহপাঠী.." href="https://bengali.abplive.com/district/kolkata-medical-college-ragging-allegation-accused-senior-student-and-committee-starts-investigation-1121005" target="_self">কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলেই ‘র‍্যাগিং’! কাঠগড়ায় সিনিয়র, ২ সহপাঠী..</a></p>
<p>ট্রেনযাত্রী মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা রঞ্জন ঘোষ বলেন, দেখুন ভালো করে, যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটবে…তার দায়িত্ব কে নেবে? পাবলিককে সেফটি দেওয়ার জন্য় সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে। আমরা বাধ্য় হয়ে পাটনা জংশনে নেমে যাচ্ছি। বাধ্য় হচ্ছি আমরা নেমে যাওয়ার জন্য়। সরকার একটু দেখুক। দিল্লি পেয়েছে, আরও সবকিছু পাবে। ট্রেনের জানলা ভাঙা হচ্ছে। হুড়মুড়িয়ে ভিড় ট্রেনে উঠে পড়ছে। এই সব ছবি দেখার পর প্রশ্ন একটাই, এত দিন ধরে, এত মাস ধরে তাহলে কি ব্য়বস্থা করল সরকার? </p>
Source link
কুম্ভে যেতে গিয়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা, ৭৫ হাজার টাকা খরচ করে, গাড়িতে বাড়ি ফিরল শ্রীরামপুরের পরিবার
