অয়ন ঘোষাল: মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা সুমিতা ঘোষের টুকরো দেহ পাওয়া যায় আহিরীটোলা ঘাটের কাছে। সেই দেহ বিশাল ট্রলি ব্যাগে ভরে গঙ্গার ঘাটে নিয়ে আসে ফাল্গুনী ঘোষ ও আরতি ঘোষ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে ভোঁতা কোনও অস্ত্র দিয়ে রবিবার বিকেল চারটে নাগাদ পিসি শাশুড়ি সুমিতাকে খুন করে ফাল্গুনী ঘোষ। তারপর দেহ ব্যাগে পুরে ফেলার তোড়জোড় শুরু করে। কিন্তু তার আগে দেহ মধ্যমগ্রামের ঘরে রেখেই সোমবার সারাদিন কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় রেইকি করে বেড়ায় ফাল্গুনী ও আরতি। কোথায় দেহ ফেলা হবে তা ঠিক করতেই সারাদিন ঘুরে বেড়ায় দুজন।
আরও পড়ুন-‘এক দেশ এক নির্বাচন’, এবার উত্তপ্ত যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠক!
খুন করে বিপাকে পড়ে যায় ফাল্গুনী আরতি ঘোষ। লাশের গন্ধে ভরে যায় ঘর। সেই গন্ধ ঢাকতে একটি পারফিউম কিনে এনে বাড়িতে ব্যবহার করে তারা। দেহ ট্রলিতে ঢোকানোর সময়ে পা বেরিয়ে থাকছিল। সমস্যা মেটাতে তারা প্রথমে সুমিতার গোড়ালি কাটতে চেষ্টা করে। গোড়ালির হাড় শক্ত বলে তারা তা কাটতে পারেনি। পরে বটির কাঠের অংশ দিয়ে গোড়ালিতে আঘাত করে তার আলাদা করে।
পুলিসকে ফাল্গুনী জানিয়েছে তাদের বাড়িতে প্রচুর বহিরাগতর যাতায়াত ছিল। এনিয়ে ওই বাড়িতে থাকা বৃদ্ধা সুমিতা আপত্তি তোলেন। সেটি আপত্তি থেকেই ফাল্গুনীর সঙ্গে সুমিতার একটি তীব্র বচসা শুরু হয়ে যায়। এনিয়ে তাদের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে যায়। এর পাশাপাশি পুলিসের কাছে খবর এসেছে একটি সম্পত্তি নিয়ে দুজনের মধ্যে বিবাদ চলছিল। কেন বহিরাগতরা আসত তা এখনও জানা যায়নি। গত ১১ ফেব্রুয়ারি ফাল্গুনীদের বাড়িতে আসেন সুমিতা। তার পর থেকে সমস্যার শুরু।
রবিবার বিকেলে ক্ষণিকের উত্তেজনার মাথায় সুমিতাকে খুন করে ফাল্গুনী। তারপর বাড়িতেই পড়েছিল মৃতদেহ। সেই দেহ কোথায় ফেলা হবে তা ঠিক করতে সোমবার কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় রেইকি করে বেড়ায় ফাল্গুনী ও আরতি। পরিকল্পনা ছিল গঙ্গার ভাসিসে দেওয়া।
গত বছর মার্চ মাসে মধ্যমগ্রামে ভাড়া থাকতে আসেন ফাল্গুনী ঘোষ ও মেয়ে আরতি ঘোষ। মা আরতি ঘোষ আয়ার কাজ করতেন। স্বামীর মৃত্য়ুর পর পেনশন পেতেন আরতি। তাতেই তাদের সংসার চলত। মেয়ে ফাল্গুনী বারাসত আদালতের মুহুরী বলে জানা যাচ্ছে। তিনি ডিভোর্সি। এই ফাল্গুনির পিসি শাশুড়ি হলেন সুমিতা ঘোষ। প্রতিবেশীদের দাবি রাতে তাদের বাড়িতে বহু অচেনা মানুষজন আসতেন। কেন তারা আসতেন তার কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। মহিলারা বলতেন তারা তাদের আত্মীয়। এনিয়ে স্থানীয় মানুষজন স্থানীয় কাউন্সিলরকেও জানিয়েছিলেন। সেই কারণেই আপত্তি করেছিলেন সুমিতা। তাতেই প্রবল রোষে খুন সুমিতা।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)