স্টুটগার্ট: দুই শক্তিধর দলে প্রতিভার কমতি নেই। তাই ম্যাচটা যে হাড্ডাহাড্ডি এবং বেশ উপভোগ্য হবে, তেমনটার সম্ভাবনা ছিলই। তবে টুর্নামেন্ট ইতিহাসে সর্বাধিক নয় গোলের ম্যাচ হবে ফ্রান্স বা স্পেন (Spain vs France), কোনও দলের সমর্থকরাই হয়তো আশা করেননি। তবে তেমনটাই হল। দুই দলের টানটান লড়াইয়ে জয়ের হাসি হাসল স্পেনই। রবিবার (ভারতীয় সময় হিসাবে সোমবার) ফের একবার নেশনস লিগ (UEFA Nations League) জয়ের আশায় পর্তুগালের বিরুদ্ধে নামবে লামিন ইয়ামালের (Lamine Yamal) স্পেন।
হ্যাঁ, ইয়ামালের স্পেনই বলা বাহুল্য। তার বয়সটা যে এখনও মাত্র ১৭ সেটা তার খেলা দেখে বোঝা যায়। আর লিওনেল মেসির সঙ্গে তুলনা, ব্যালন ডি’অর জয়ের দাবিদার, তাও এবার এই বয়সে, চোখধাঁধানো প্রতিভা না থাকলে সম্ভব নয়। ইয়ামালের সেটাই রয়েছে। চোখধাঁধানো প্রতিভা। স্পেনের ইউরোজয়ী দলের হয়ে তিনি আগেই বিশ্ব ফুটবলের নজর কেড়েছে। এ বারের ক্লাব মরশুমে বার্সোলোনার লিগ জেতায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এবার স্পেনের জার্সিতেও দুরন্ত ফুটবল খেলল ইয়ামাল।
টিনএজ তারকা ফ্রান্সের বিরুদ্ধে স্টুটগার্টে আয়োজিত ম্যাচে বল পায়ে পেলে গ্যালারি থেকে উঠছিল জনরোল। প্রত্যাশা অভূতপূর্ব কিছু দেখার। ইয়ামাল হতাশ করল না। স্পেনের জয়ের রাতে দুইটি গোল এল তার বুট থেকে। তবে শুরুটা করেছিলেন ইয়ামালের বন্ধু নিকো উইলিয়ামস। ২২ মিনিটে তিনিই স্পেনকে এগিয়ে দেন। শুরু থেকেই ম্যাচে দুরন্ত আক্রমণ শানাচ্ছিল দুই দল। এমবাপে এবং উইলিয়ামস স্বয়ং গোল পাওয়ার আগে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষকদের বিরুদ্ধে ভাল শট মেরে তাঁদের পরীক্ষা নেন। ফ্রান্সের ফুলব্যাক থিও হার্নান্ডেজ বল বারে মারেন।
প্রথম গোলের ক্ষেত্রে মিকেল ওয়ারাজ়াবালের হোল্ড আপ প্লে দুরন্ত ছিল। তিন মিনিট পরেই তিনি মিকেল মেরিনোকে লা রোহার দ্বিতীয় গোলের জন্য অ্যাসিস্ট বাড়ান। প্রথমার্ধ স্পেনের পক্ষে ২-০ শেষ হয়। গোটা প্রথমার্ধে ইব্রাহিমা কোনাটেদের রক্ষণকে বারংবার চাপে ফেললেও গোল পায়নি ইয়ামাল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে সে জ্বলে উঠে। তার গতিতে পরাস্ত হয়ে রাবিও তাকে ফাউল করে বসে। পেনাল্টি পায় স্পেন। মাথা ঠান্ডা রেখে সে বল জালে জড়িয়ে দেয়। ফ্রান্সের হকচকিয়ে যাওয়া রক্ষণকে ফের বোকা বানিয়ে দুরন্ত ফিনিশে লা রোহার হয়ে স্কোর ৪-০ করেন ইয়ামালের বার্সা সতীর্থ পেদ্রি।
এ সময়ই স্পেনের ম্যাচ জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল! একদমই না। ফ্রান্স দলেও তারকাদের কমতি নেই। প্রত্যাবর্তনের লড়াইটা তাই তাঁরা না করে হাল ছাড়তেন না। সেই শুরুটা করেন এমবাপে। পেদ্রো পরোর বিরুদ্ধে পেনাল্টি বক্সে ফাউল জিতে পেনাল্টি থেকে গোল করেন এমবাপে। তবে ফের ইয়ামাল এক দুরন্ত ফিনিশে স্পেনের চার গোলের লিড পুনরুদ্ধার করে। এমন সময়েও মাথা নত করতে নারাজ ফ্রান্স হু হু করে আক্রমণ করে। এদিনই বহু প্রতীক্ষার পর আন্তর্জাতিক অভিষেক ঘটানো রায়ান ছেরকি এক দুরন্ত গোলে স্কোরলাইন ৫-২ করেন।
পরিবর্ত হিসাবে মালো গুস্তো ও বারকোলা নামার পরেই ফ্রান্সের আক্রমণের ঝাঁঝও বাড়ে। গুস্তোর ঠিকানা লেখা পাস থেকে কোনওভাবে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের জালেই জড়িয়ে দেন ভিভিয়ান। এরপর ইনজুরি টাইমে ছেরকির ক্রস থেকে রান্ডাল কোলো মুয়ানি স্কোর ৫-৪ করেন। শেষমেশ চেষ্টা করেও পঞ্চম গোলটা করতে পারেনি ফ্রান্স। দেম্বেলেরা এদিন প্রচুর সুযোগ তৈরি করেছিলেন, সেই সুযোগ কাজে না লাগানোরই খেসারত দিতে হল দিদিয়ের দেঁশর দলকে।