জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ওবেবকুপার অনুষ্ঠানকে ঘিরে ধুন্ধুমার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। বাম ছাত্রদের বিক্ষোভের জেরে ফের অশান্ত হয়ে উঠল বিশ্ববিদ্যালয়। অনুষ্ঠানে ঢোকা ও বের হওয়ার মুখে তুমুল বিক্ষোভ দেখানো হয় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে ঘিরে। গাড়ির কাচ ভাঙে শিক্ষামন্ত্রীর। কাচ ভেঙে এসে লাগে মন্ত্রীর মুখে। তাঁর বাঁ হাতে আঘাত লাগে। চিকিত্সা করাতে ব্রাত্য বসুকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। এনিয়ে এবার বাম ছাত্রদের কড়া ভাষায় নিশানা করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর সাফ কথা যারা ওই বর্বরতা করেছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে।
আরও পড়ুন-অশান্তির JU! ব্রাত্যর গাড়ি ভাঙচুর, অসুস্থ শিক্ষামন্ত্রী SSKM-এ…
এদিন, ব্রাত্য বসুকে দেখতে এসএসকেএম হাসপাতালে যান তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সেখানেই তিনি বলেন, গাড়ির মধ্যে মন্ত্রী বসে। আর গাড়ির মধ্যে যদি হামলা হয় তাহলে এটা একেবারে আহত করার মত টার্গেট করে করা। মন্ত্রী বলেছেন তিনি কথা বলবেন। তার পরেও আমাদের অধ্যাপকদের মারধর করা হয়। এরা কী চায়? এই বামেরা ৩৪ বছর ধরে লন্ডভন্ড করেছে। মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাব যে তিনি সংযম দেখিয়েছেন। আমাদের টিম কোনওরকম প্ররোচনায় পা দেননি। এটা যেন তৃণমূলের দুর্বলতা বলে ভাবা না হয়। যে ভাবে গাড়ির কাচ ভাঙা হয়েছে তাতে যে কোনও সময়ে বড় কোনও ঘটনা ঘটে যেতে পারত। এদের চিহ্নিত করা হোক।
কুণাল ঘোষ আরও বলেন, আমরা প্রতিহিংসা পরায়ণ নই। তাহলে সেটা সেই ভাষায় বুঝে নিতাম। আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা যেন না নেওয়া হয়। শিক্ষামন্ত্রীর যে কুত্সিত অভিজ্ঞতা হয়েছে তার বিরুদ্ধে দল ও প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। আমাদের ছেলেদেরও তো আবেগে লাগছে। মন্ত্রী গাড়িতে বসে, আর আমাদের মন্ত্রীকে মারবে! উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ব্রাত্য বসুকে টার্গেট করা হয়েছে। একাধিক অধ্যাপককে মারা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে একেবারে প্রাণঘাতী হামলা। লাল পতাকা নিয়ে যেসব অতৃপ্ত আত্মারা এসেছিলেন তাদের মধ্যে কোনটা এসএফআই, কোনটা মাও তা তো বোঝা মুসকিল। পশ্চিমবঙ্গের মতো একটা গণতান্ত্রিক রাজ্যে থেকে এরকম বর্বর আক্রমণ করবে তা চলতে পারে না। এরপর যদি মহম্মদ সেলিমের কোনও প্রোগ্রামে তৃণমূলের ছেলেরা যদি জল-বাতাসা নিয়ে যায় তাহলে তা সেলিম মেনে নেবেন তো! সেলিম একটা দলের রাজ্য সম্পাদকের পদে থেকে বলছেন ব্রাত্য বসু নাটক করছেন! আমাদের ছেলেরা যদি আপনার প্রোগামে জল বাতাসা নিয়ে যায় তাহলে তিনি মেনে নেবেন তো!
এদিকে, এসএসকেএম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ব্রাত্য বসু বলেন, কিছুটা ভালো আছি। প্রাথমিক চিকিত্সা করা করানো হল। বাঁ হাতে লেগেছে। সামনে বসেছিলাম। ইট ও ঘুঁসি গাড়ির কাচে লাগে। সেই কাচের গুঁড়ো আমার মুখে লাগে। ফলে ওরা শারীরিকভাবে আমার একটা পরীক্ষা করলেন। হাতে একটা এক্স রে করা হয়েছে। আমার থেকে বেশি চিন্তিত আমাদের অধ্যাপকদের নিয়ে যাদের ধরে পেটানো হয়েছে। আমি ওদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। এসএফআই আমার কাছে ডেপুটেশন দিয়েছে। উগ্র বাম ছাত্রদেরও বললাম আমাকে ডেপুটেশন দিন। ওরা বললেন ৪০ জনের সঙ্গে আমাকে কথা বলতে হবে। ওয়েবকুপার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওখানে গিয়েছি। ওদের সঙ্গে আমার দেখা করার কথা নয়। তার পরেও ৪ জনের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হলাম। আমাদের অধ্যাপকদের মারছে, ব্যানার ছিঁড়ে দিচ্ছে। এটা কোন ধরনের বামপন্থা! অধ্য়াপকদের মারা হয়েছে, উপাচার্যকে হেনস্থা করা হয়েছে। এটা কী জাতীয় গণতন্ত্র জানি না। আমি আবারও বলেছি এভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে আটকানো যাবে না। আমরা ফের কনভেনশন করব। তিন হাজার অধ্যাপক এসেছিলেন। রাজ্যের কেউ ঢুকতে গেল, কেন্দ্রের কেউ ঢুকতে গেল আটকে দেওয়া হয়। এর আগে বাবুল সুপ্রিয়কে আটকানো হয়েছিল। ওরা বলছেন এক্ষুনি আমাদের আলোচনার তারিখ বলতে হবে। এরকম ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। আমার গাডি় ভেঙেছে, আমার সিকিউরিটিদের মেরেছে। উপাচার্য বারবার বলেছিলেন পুলিস ডাকতে। আমি রাজি হয়নি। এরা আলোচনা চান না। এরা নৈরাজ্য চান। এসএফআই আমার সঙ্গে দেখা হয়েছে। তারা ডেপুটেশন দিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেস যাদবপুর যেতে পারবে না! তৃণমূল সংগঠন করতে পারবে না! ওদের হিম্মত আছে, বিজেপি শাসিত কোনও রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে অধ্যাপকদরে গায়ে হাত দেওয়ার?
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
+ There are no comments
Add yours