শিবাশিস মৌলিক, অনির্বাণ বিশ্বাস,কলকাতা: দলেরই মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। এবার ক্ষমা চাইলেন। তবে বক্তব্যে অনড়ই রইলেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, কয়েকজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। দলের ভিতরে তা জানাবেন। তৃণমূলের অন্দরের এই চাপানউতোর নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিরোধীরা।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, আইনজীবী ও তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ বলেন, দিদি আছে বলে আছি, না হলে নেই। দিদির মন্ত্রীদের চালচলন দেখলে আর থাকতে ইচ্ছে করে না।কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য ঘিরেই এখন তোলপাড় তৃণমূলের অন্দরে। আইনজীবী ও তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দু-তিন জন মন্ত্রী এমন বোঝায় না, মাঝে মাঝে মুশকিল হয়ে যায় আমাদের। সঙ্গে সঙ্গে যারা থাকে, ও তুমিও বোঝো, আমিও বুঝি। হাফহার্টেড ফ্যাক্টস বলে তারা। যাঁরা মন্ত্রী-তন্ত্রী হয়ে যায়, তাঁরা আবার চুপচাপ হয়ে যায়। যেমন আর জি কর তাঁদের একটাকেও মুখ খুলতে দেখা যায়নি। দিদির মন্ত্রিসভার সবাই, কোনটা নেই? দিদির মন্ত্রিসভার সবাই, দিদির মন্ত্রিসভার মন্ত্রীরা ভীষণ ভাল। বাপ রে বাপ…বাবা…বিরাট সব মন্ত্রী।’
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দিষ্ট করে কোনও মন্ত্রীর নাম না বললেও, শুক্রবার এ নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল নেতা ও পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাকে যদি বলে আমার চালচলন দেখলে, তাঁর দলে থাকতে ইচ্ছে করে না, তখন আমি দল ছেড়ে দেব। আমার চালচালনে যদি খারাপ লাগে বা অন্য কেউ যদি প্রভাবিত হয় তাহলে আমি থাকব না। আমি নিজেকে সংযত বলে মনে করি। মাটির সঙ্গে চলি।’ এই প্রেক্ষাপটে এক্স হ্যান্ডেলে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘সমস্ত মন্ত্রীকে একগোত্রে ফেলে মন্তব্য করায় আমি ক্ষমা চাইছি। আমি বুঝতে পারছি যে, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং অন্য নেতারা আমার মন্তব্যে দুঃখ পেতে পারেন। তবে সেটা আমার উদ্দেশ্য ছিল না। শোভনদেব দা এবং সিনিয়র নেতাদের আমি খুব সম্মান করি। কেউ দুঃখ পেলে আমি তারজন্য অনুতপ্ত।’
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমা চাইলেও তিনি যে তাঁর মূল বক্তব্যে অনড় তাও নিজের পোস্টে স্পষ্ট করে দিয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। লিখেছেন, কয়েকজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ রয়েছে। আমি দলের ভিতরে গঠনমূলকভাবে সেগুলো জানাব।’ কিন্তু সেই মন্ত্রী কারা? কাদের আচরণে ক্ষুব্ধ শ্রীরামপুরের চারবারের তৃণমূল সাংসদ? পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘দলের সবারই উচিত একটু ভাবনাচিন্তা করে কথা বলা। যতই হোক সহকর্মী বলে কথা তো। কিছু বলার থাকলে প্রেসের সামনে কি বলব? শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি সম্পর্কে আমি কিছু বলব না প্রেসের সামনে। দলের অন্দরে বলব।’রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন,’ মুখ্যমন্ত্রীকে গিয়ে বলা উচিত এক নেতা অন্য নেতার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিচ্ছেন, আপনার অবস্থান স্পষ্ট করুন। একটা দল ক্ষমতা থেকে যখন চলে তখন এই ধরনের হতে থাকে।’
আরও পড়ুন, পদ্মশ্রী নিতে দিল্লিতে মছলন্দপুরের ঢাকি গোকুলচন্দ্র দাস ! স্ত্রী বললেন, ‘তিনি ফিরলেই আসল উৎসব..’
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের অনুগামী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ও আইনি লড়াইয়ের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই প্রশ্ন উঠছে, তিনি কোন মন্ত্রীদের আচরণে বিরক্ত, তা নিয়ে সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কি অভিযোগ জানাবেন? জানালে কী ব্যবস্থা নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
আরও দেখুন
+ There are no comments
Add yours