<p><strong>সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, হিন্দোল দে ও সত্যজিৎ বৈদ্য; খিদিরপুর :</strong> এক রাতেই পুড়ে খাক হয়ে গেল প্রায় ১৩০০ দোকান! দমকলের বিরুদ্ধে উঠল দেরিতে আসার অভিযোগ। রবিবার রাত ১টা নাগাদ খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ বাজারে ভয়াবহ আগুন লাগে। স্থানীয়দের দাবি, দমকল এসেছে প্রায় ২ ঘণ্টা পর। এমনকী ফোনও তোলেনি ওয়াটগঞ্জ থানা। কেউ কেউ আবার বলছেন, ‘প্ল্যানিং’ করে আগুন লাগানো হয়েছে। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিপূরণ ঘোষণার পরও আশ্বস্ত হলেন না একাংশ ব্যবসায়ী। কেউ বললেন, ‘টাকা দিচ্ছেন নাকি ভিক্ষা দিচ্ছেন?’ আবার কেউ অস্থায়ী দোকান নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন। নতুন করে মার্কেট তৈরির জন্য আপাতত অন্যত্র বাজার সরানোর কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ব্যবসায়ীরা জায়গা ছাড়তে নারাজ। </p>
<p>কলকাতায় ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। খিদিরপুরের অরফ্য়ানগঞ্জে বিধ্বংসী আগুনে এক রাতে পুড়ে ছাই হয়ে গেল প্রায় ১৩০০ দোকান। দমকলের বিরুদ্ধে দেরিতে আসার অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন ব্যবসায়ীরা। এক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী জানান, ১টার সময় আগুন লেগে যায়। দমকল এসেছে ৩টের সময়। </p>
<p>স্থানীয়দের দাবি, রবিবার রাত ১টা নাগাদ প্রথমে মাখন পট্টিতে আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যেই আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের দোকানে। মশলা, তেল-সহ বিভিন্ন দাহ্য বস্তু থাকায় গোটা বাজারই আগুনের গ্রাসে চলে যায়। </p>
<p>এক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর কথায়, "ওয়াটগঞ্জ থানা ফোন ধরেনি। অর্ধেক গাড়িতে জল নেই। গঙ্গায় জোয়ার ছিল। পাম্প লাগিয়ে জল তুলতে বললাম। পাম্পে তেল নেই অজুহাত দেখাল। পাম্প লাগিয়েছে তেল নেই। তারপর তেল আনতে দৌড়েছে। ভোর সাড়ে ৫টা-৬টার সময় তেল এনে তারপর পাম্পে জল তুলেছে।"</p>
<p>যদিও দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, "শহরে গাড়ি আসতে গেলেও জায়গা লাগবে তো। একটা গাড়ি আসতে গেলে সময় লাগবে তো। আমাদের তো ওয়াটগঞ্জ থেকে গাড়ি এসেছে, হেড অফিস থেকে গাড়ি এসেছে, গার্ডেনরিচ থেকে গাড়ি, যেখান থেকে পারা গেছে গাড়ি চলে এসেছে। আর আমাদের লোকেরা জীবন বিপন্ন করে কাজ করে কিন্তু।"</p>
<p>অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্যে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যবসায়ী বলেন, "প্ল্যানিং, প্ল্যানিং করে করা হয়েছে। কী মনে হয়, এই যে রড গলে গেছে পুরো, এটা কী এমনিই ছোটখাটো আগুনে হয়ে যাবে? কোথাও না কোথাও কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে। "</p>
<p>এ প্রসঙ্গ কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা বলেন, "কেন আগুন লেগেছে বা কী কারণে হয়েছে, কী অসুবিধা হয়েছে, সেগুলো নিশ্চয়ই দেখা হবে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।"</p>
<p>দুপুরে ঘটনাস্থলে যান মুখ্যমন্ত্রী। পুড়ে যাওয়া বাজার নতুন করে তৈরির জন্য আপাতত অন্য জায়গায় দোকান সরানোর কথা ঘোষণা করেন তিনি। কিন্তু, তাঁর সামনেও ক্ষোভ উগরে দেন ব্য়বসায়ীরা।</p>
<p>মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাস্থল ছাড়ার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন একাংশ ব্যবসায়ী। ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যবসায়ীর কথায়, "টাকা দিচ্ছে না ভিক্ষা দিচ্ছে?" অপর এক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী বলেন, "ওই দোকান আমরা কোনও শিফটিং নেব না। আমাদের ওই জায়গায় দোকান বানিয়ে দিতে হবে।"</p>
<p>এক রাতে ছাই হয়ে গেছে রোজগারের সম্বল। এবার ? ঘোর অনিশ্চয়তার মুখে হাজারের বেশি পরিবার।</p>
Source link
‘টাকা দিচ্ছেন না ভিক্ষা দিচ্ছেন ?’ মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাস্থল ছাড়তেই ক্ষোভ প্রকাশ খিদিরপুরে
