কলকাতা: মহেশতলার ঘটনাকে ঘিরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। আর সেই আবহেই প্রচুর বোমার মশলা উদ্ধার করল পুলিশ। এই ঘটনায় নবীনচন্দ্র রায় নামের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে, যিনি RSS এবং বিজেপি-র কর্মী বলে জানা গিয়েছে। ধৃত নবীনচন্দ্র রবীন্দ্রনগরেরই বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। মহেশতলার ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই বোমার মশলা মজুত করা হয়েছিল বলে অভিযোগ পুলিশের। সবমিলিয়ে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এই ঘটনায়। (Kolkata News)
গতকাল গোষ্ঠী সংঘর্ষে তেতে ওঠে শহরতলির মহেশতলা। সেই ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ। সেখানে জানানো হয়, বজবজ থানায় গতকাল ১৬৮/২৫ একটা মামলা হয়েছে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গতকাল রাত পৌনে ৯টা নাগাদ আমাদের বজবজ থানা প্রচুর পরিমাণ বোমার মশলা উদ্ধার করে। তিনটি মোটরসাইকেলে চাপিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর পরিমাণ সোডিয়াম পাওডার, ১০ কেজির উপর অ্যালুমিনিয়াম পাওডার, ফসফরাস ডাস্ট, রেড সালফার এবং আয়রন ডাস্ট উদ্ধার হয়। এগুলি বোমা তৈরির কাজে লাগে বলে জানানো হয়েছে। ওই পরিমাণ মশলা দিয়ে কত বোমা তৈরি করা যেত, তা হিসেব করা হচ্ছে। (Maheshtala Incident)
গোটা ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যার মধ্যে নবীনচন্দ্র সক্রিয় RSS ও বিজেপি কর্মী বলে নিজের পরিচয় দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। শুধু তাই নয়, রামনবমীতে বাটা মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড দেওয়া ঘিরে যে অশান্তি হয়, সেখানে নবীন উপস্থিত ছিলেন, পুলিশের ব্যারিকেড ছুড়ে ফেলতে দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু কোথা থেকে বোমার মশলা এল, ঠিক কী উদ্দেশ্য ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গতকাল মহেশতলায় যে অশান্তি বাধে, তার সঙ্গে এই বোমার মশলা উদ্ধারের ঘটনার সংযোগ পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল রাতে বজবজ থেকে ওই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও এতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর বক্তব্য, “পুলিশকে বলতে চাই, রাজনীতি করতে চাইলে উর্দি খুলে ফেলুন। তৃণমূলের নেতাদের মতো হাওয়াই চটি হাতে নিয়ে রাজনীতি করুন। ক্ষমতা থাকলে রাস্তায় নেমে রাজনীতি করুন, পুলিশের উর্দি পরে নয়। তুলসি গাছ উৎপাটিত RSS-এর লোক করেছে? তুলসিমঞ্চ RSS তুলেছে? তুলেছে পুলিশ। RSS যদি মনে করে, আমি বলব, পুলিশের বিরুদ্ধে মানহানির মামলার করুন। রাহুল গাঁধীকেও কোর্টে ক্ষমা চাইতে হয়েছে। পুলিশকেও ক্ষমা চাইতে হবে।”
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে ব্যর্থতার কথাও কার্যত মেনে নেন পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার মিতুন দে। হিন্দু-মুসলিম ধর্মান্ধদের বাড়াবাড়ি, পুলিশের ব্যর্থ, এই তিনের জেরেই গতকাল মহেশতলায় অশান্তি হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, “নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এতগুলো মামসা হয়েছে, গ্রেফতার হয়েছে। নীচুস্তরের পুলিশের বিরুদ্ধে ব্য়বস্থা নেওয়া হচ্ছে। হিন্দু ধর্মান্ধ, মুসলিম ধর্মান্ধদের বাড়াবাড়ি আছে। সবকিছুর ফলশ্রুতি এটা।” যথেষ্ট সংখ্য়ক পুলিশও ছিল না বলে মানেন তিনি।