কলকাতা : মঙ্গলবার সকালে গা শিউরে ওঠা ঘটনা কলকাতায় । আহিরিটোলে-কুমোরটুলির মতো জনবহুন গঙ্গার ঘাটে গিয়ে খুন করা দেহ লোপাট করে দিতে গিয়েছিল মা-মেয়ে। পরিকল্পনা ভেস্তে যায় স্থানীয়দের চোখে পড়ে যাওয়ায়। দেহভর্তি ট্রলি ব্যাগ সহ গঙ্গার ঘাটে পৌঁছায় তারা। ভারী ট্রলি টেনে আনতে পারছিল না। চারিদিকে পচা-দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছিল। সন্দেহ হতেই ঘিরে ধরেন স্থানীয়রা , খবর দেওয়া হয় পুলিশে। এরপরেই হয় ঘটনার পর্দাফাঁস।
পুলিশ সূত্রে খবর, আটক আরতি ঘোষ ও ফাল্গুনি ঘোষ সম্পর্কে মা-মেয়ে।মৃতের নাম সুমিতা ঘোষ। সুমিতা আরতির মেয়ে ফাল্গুনির পিসি শাশুড়ি। তাঁরা কিছুদিন ধরেই ভাড়া থাকতেন মধ্যমগ্রামের বিদেশপল্লিতে। তবে পড়শিদেরও তাদের সম্পর্কে ধারণা ভাল নয়। মা-মেয়ে দুজনেরই ‘হাঁটা-চলা, হাব-ভাব, স্বভাব-গতিক ভাল ছিল না’ বলেই জানালেন কয়েকজন প্রতিবেশী। পুলিশের দাবি, অসমের জোড়হাটের বাসিন্দা বছর ৫৫-র সুমিতা স্বামীর সঙ্গে থাকেন না। অন্যদিকে, ফাল্গুনিরও স্বামীর সঙ্গে বনিবনা নেই। তাই মাকে নিয়ে থাকেন মধ্যমগ্রামের বীরেশপল্লিতে দেড় বছর হল ভাড়া থাকা শুরু করেন ফাল্গুনি। ১১ ফেব্রুয়ারি ফাল্গুনির ভাড়াবাড়িতে আসেন পিসি শাশুড়ি সুমিতা। অভিযোগ, সোমবার পারিবারিক বিবাদের জেরে পিসি শাশুড়িকে ধাক্কা মারেন ফাল্গুনি। কিছুক্ষণের জন্য অচৈতন্য হয়ে পড়লেও সুমিতার জ্ঞান ফেরার পর, ফের বচসা শুরু হয়। তখন পিসি শাশুড়ির মুখে ইট দিয়ে মারেন ফাল্গুনি। সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে সুমিতাকে ট্রলি ব্যাগে পুরে ফেলেন ফাল্গুনি ও তাঁর মা আরতি। এরপর ট্যাক্সিতে করে সুমিতার দেহ নিয়ে আসা হয় কুমোরটুলি ঘাটে। প্রমাণ লোপাটে গঙ্গায় দেহ ফেলার ছক ছিল। তার আগেই স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে যান মা-মেয়ে।
পড়শিদের অভিযোগ, ফাল্গুনি মাঝে মধ্যে বেরোতেন বাড়ি থেকে। কী করতেন, তা জানা নেই। বাড়িতে নানারকমের লোকজনের আনাগোনা ছিল। তা নিয়ে আপত্তির কথাও জানান পড়শিরা। তবে তাতে কর্ণপাত করেননি মা-মেয়ে, দাবি এমনটাই। এছাড়া মা-আরতির স্বভাব নিয়েও পড়শিদের অভিযোগ রয়েছে। তাদের হাতটান ছিল। লোকের বাড়ি ঢুকে পড়া, চুরি করার অভ্যেস ছিল তার, দাবি এক প্রতিবেশীর। মোটের উপর মা-মেয়েকে নিয়ে কেউ ভাল কথা বলেননি।
আরও পড়ুন : সাতসকালে দুলে উঠল কলকাতা সহ বিস্তীর্ণ এলাকা, ভূমিকম্প বঙ্গোপসাগরের গভীরে
আরও দেখুন