<p><strong>কলকাতা: </strong>খাস কলকাতায় ল’ কলেজেই ছাত্রীকে ‘গণধর্ষণের অভিযোগ। এবার স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ গ্রহণ করল NCW। কসবাকাণ্ডে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের রিপোর্ট তলব করল জাতীয় মহিলা কমিশন। ৩ দিনের মধ্যে সিপির রিপোর্ট চাইল তারা। </p>
<p>আর জি করকাণ্ডের বছর ঘোরার আগেই আইন কলেজে গণধর্ষণের অভিযোগে তোলপাড়। নিজের কলেজেই ধর্ষণের শিকার আইনের ছাত্রী। অভিযুক্ত প্রাক্তন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা, তৃণমূল কর্মী এবং এই কলেজেরই অস্থায়ী কর্মী। রুবি থেকে বালিগঞ্জের মাঝে কে এন সেন রোড এই কলেজ। রাস্তা ধরে রুবি মোড়ের দিকে এগোলে বাঁদিকে কসবা থানা। থানা থেকে মাত্র ২৫০ মিটার দূরে রাস্তার ডানদিকে সাউথ ক্যালকাটা ল’কলেজ। শহরের বুকে এই রকম জায়গায় অবস্থিত কলেজের ভয়ঙ্কর ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে শহরের নারী নিরাপত্তা। এই পরিস্থিতিতে ফের সরব হয়েছে সব মহল। উদ্বেগের কথা জানিয়ে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের। যেখানে তারা তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট তলব করেছে।</p>
<p>এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে, মূল অভিযুক্ত, প্রাক্তন TMCP নেতা ও এবং কলেজের অস্থায়ী কর্মী মনোজিৎ মিশ্র (৩১) এবং কলেজের দুই পড়ুয়া প্রমিত মুখোপাধ্যায় (২০) এবং জেব আহমেদকে (১৯)। ঠিক কী ঘটেছিল বুধবার রাতে? FIR-এ তিন অভিযুক্তকে J, M ও P বলে উল্লেখ করেছেন অভিযোগকারিণী। তিনি লিখেছেন, "বুধবার বেলা ১২টা ৫-এ পরীক্ষার ফর্ম ফিলআপের জন্য কলেজে যান। কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর অন্যদের সঙ্গে তিনি ইউনিয়ন রুমে বসেছিলেন। সেই সময় কলেজের প্রাক্তনী এবং কর্মী J আমাদেরকে অপেক্ষা করতে বলেন। প্রাক্তনী হলেও J কলেজের TMCP-র ইউনিট প্রেসিডেন্টের ভূমিকা পালন করেন। কলেজে তাঁর প্রবল প্রতাপ। সবাইকে তাঁর কথা শুনে চলতে হয়। তিনিই পড়ুয়াদেরকে TMCP-র নানা পদে বসান। সেভাবেই আমাকে গার্লস সেক্রেটারি করেন। বাকিরা চলে গেলে, বিকেল ৪টে নাগাদ আমিও বাড়ির দিকে পা বাড়াই। তখনই আমাকে বাধা দেওয়া হয়, এবং ইউনিয়ন রুমে বসিয়ে রাখা হয়। অভিযোগপত্রে নির্যাতিতা লিখেছেন, সন্ধে ৬টা নাগাদ J আমাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে বলেন, প্রথম দিন থেকে তিনি আমাকে পছন্দ করেন এবং তাঁর গার্লফ্রেন্ড থাকা সত্ত্বেও আমাকে ভালবাসেন। এমনকী বিয়ের প্রস্তাবও দেন। আমি বলি, আমার বয়ফ্রেন্ড রয়েছে, আমি তাঁকে ভালবাসি, তাঁকে ছাড়া সম্ভব নয়।”<br /><br />অভিযোগকারিণীর দাবি, এরপর কলেজের মেন গেট বন্ধ করে দিয়ে P ও M ফের তাঁকে জোর করে ইউনিয়ন রুমে নিয়ে যান। আমি J-এর পায়েও ধরি। কিন্তু আমাকে ছাড়েননি। J আমাকে নিরাপত্তারক্ষীর ঘরে নিয়ে যেতে বলেন, এবং রক্ষীকে বাইরে বের করে দিতে বলেন। P ও M জোর করে আমাকে গার্ডের রুমে নিয়ে যান। সেখানে J আমার পোশাক খুলে দেন, ধর্ষণ করেন। সেই সময় P ও M দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিল। বাধা দিতে চাইলে আমার বয়ফ্রেন্ডকে খুন ও বাবা-মাকে গ্রেফতারের হুমকি দেন। তারপরেও বাধা দিতে চাইলে ধর্ষণ করার সময় তুলে রাখা ২টি ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করা হয়। হুমকি দেওয়া হয়, যখনই ডাকা হবে, তখনই না এলে ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়া হবে। সেই সময় আমি একটা মৃতদেহের মতো পড়েছিলাম। ঘটনার পর ফের ইউনিয়ন রুমে নিয়ে গিয়ে কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেওয়া হয়।</p>
<p>বৃহস্পতিবার ন্য়াশনাল মেডিক্য়াল কলেজের স্ত্রী রোগ বিভাগে অভিযোগকারী তরুণীকে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে তাঁর মেডিক্য়াল টেস্ট হয়। ন্য়াশনাল মেডিক্য়াল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে খবর, তরুণীর গলার পাশে ও বুকে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তাঁর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, নির্যাতিতার বয়ানের ভিত্তিতে মেডিক্য়াল রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৫ জুন অর্থাৎ বুধবার সন্ধে সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা ৫০ অবধি তাঁকে আটকে রাখে মূল অভিযুক্ত ও আরও দু’জন। একজন তরুণীকে যৌন নির্যাতন করে। বাকি দুজন তা দেখছিল। এই ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর, বৃহস্পতিবার রাত ১০ নাগাদ, কসবা থানার পুলিশ তাঁকে মেডিক্য়াল পরীক্ষা করাতে নিয়ে যায় ন্য়াশনাল মেডিক্য়াল কলেজ হাসপাতালে।</p>
Source link
কলেজের মধ্য়েই আইনের ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ, রিপোর্ট তলব জাতীয় মহিলা কমিশনের
