জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: একের পর এক ইসরায়েলি মিসাইল উড়ে এসে পড়েছে ইরানে। উলটো দিকেও একই অবস্থা। ইরানি মিসাইল আছড়ে পড়েছে আইডিএফ, মোসাদের দফতরে। এর মধ্যেই যুদ্ধবিরতি যুদ্ধবিরতি খেলা শুরু করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানের উপরে হামলা নিয়ে ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন ট্রাম্প। তার পরেও একে অপরের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ইসরায়েল ও ইরান। তার পরেও ইরান বলছে তাদের হারানো ইসরায়েলের পক্ষে একপ্রকার অসম্ভব। কেন?

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েল একবারেও ভাবেনি যে এভাবে ইরানের কাছ থেকে প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে হবে তাদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ৭ কারণ রয়েছে যার জন্য ইরানকে তুড়ি মেরে হারিয়ে দেওয়া ইসরায়েলের পক্ষে খুবই কষ্টকর। 

হরমুজ প্রণালী

দক্ষিণ ইরানে সীমান্ত ঘেঁষা এই প্রণালী বিশ্বের উল্লেখযোগ্য জলপথ। মাত্র ৩৩ কিলোমিটার চওড়া এই জলপথ দিয়েই বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ তেল পরিবহণ হয়। গুরুত্ব বিবেচনায় বিশ্লেষকরা এটিকে পৃথিবীর রক্তনালী বলে থাকেন। এই প্রণালীর আশপাশের সাতটি দ্বীপ ইরানের নিয়ন্ত্রণে, যা সে দেশের অনন্য ভূ-রাজনৈতিক শক্তি। ইতোমধ্যে ইরান এই জলপথ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত পশ্চিমারা।

ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন

মুসলিম বিশ্বে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ২০০০ কিলোমিটার। শুধু ইসরায়েল নয়, ইউরোপের যে কোনো লক্ষ্যবস্তুতেও আঘাত হানতে পারে ইরানি মিসাইল। এছাড়া সস্তায় শক্তিশালী কার্যকর ড্রোন বানিয়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে ইরান। ইউক্রেন যুদ্ধে প্রমাণ হয়েছে ইরানি ড্রোনের ক্ষমতা। 

পাহাড়- মরুভূমি

প্রকৃতিক বৈচিত্রে ভরপুর ইরান। পশ্চিম ও দক্ষিণ সীমান্তজুড়ে জাগরোস পর্বতমালা দেশটিকে দুর্গের মতো রক্ষা করে। এই পাহাড় এতটাই দুর্গম যে ওইদিক থেকে হামলা প্রায় অসম্ভব। উত্তরেও রয়েছে প্রতিরক্ষামূলক আলবোর্জ পর্বতমালা। অন্যদিকে ইরানের রয়েছে মূল্যবান খনিজ- ইউরেনিয়াম, সোনা, রুপা আর দস্তা। পাহাড় পেরিয়ে কেউ ইরানে ঢুকতে পারলেও সামনে লুত মরুভূমি, যা পৃথিবীর ভয়ানক গরম জায়গাগুলোর একটি। তাই এই অঞ্চল দিয়ে সৈন্য ও রসদ পাঠানো অসম্ভব।

মিত্র 

ইরানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাশিয়া ও চিনের। ইসরায়েলের সঙ্গে লড়াই শুরু থেকেই দুই দেশের সমর্থন পেয়ে আসছে ইরান। রুশ গোয়েন্দা বাহিনী ইরানকে অনেকটাই সাহায্য দেয়। চিনও এবার মুখ খুলেছে।

তেল

বিশ্বে মোট উত্পাদিত তেলের অনেকটাই উত্পান করে ইরান। ইরানের তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদের পরিমাণ যথাক্রমে বিশ্বের মোট রিজার্ভের ১০ ও ১৫ শতাংশ। এর ফলে অন্য অনেক দেশের থেকে রাজৈনিতকভাবে এগিয়ে। 

আরও পড়ুন-বিজয় মিছিলে প্রাণহানি! বোমার আঘাতে মৃত্যু চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীর…

আরও পড়ুন-রাজ্যে রাজ্যে বিপন্ন বাঙালি! বাংলা বলায় রাজস্থানে বন্দি ইটাহারের ৩০০, ক্ষুব্ধ মমতা জানাবেন মোদীকে…

ছায়াযুদ্ধ

ইরানের একটি বড় শক্তি তার প্রক্সি জাল। ফিলিস্তিনে হামাস, লেবাননে হিজবুল্লাহ, সিরিয়ায় ফাতেমিয়ুন ব্রিগেড, ইরাকে আল বদর মিলিশিয়া এবং ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়ে থাকে ইরান। এই নেটওয়ার্কের উপরে ভর করে ইসরায়েলের মতো দেশের উপরে চাপ বাড়াতে পারে ইরান।

তিনটি মহাদেশে মিলনস্থল

ইউরোপ, এশিয়া এবং আফ্রিকা-র সংযোগস্থলে ইরান। দেশটির রয়েছে ৩ গুরুত্বপূর্ণ জলসীমা। উত্তরে কাস্পিয়ান সাগর এবং দক্ষিণে পারস্য উপসাগর ও ওমান উপসাগর। গত ৫০০ বছর ধরে একই সীমান্ত নিয়ে টিকে রয়েছে দেশটি। পৃথিবীর এমন কোনো শক্তি নেই, যারা ইরানকে দখল করতে চায়নি, কিন্তু বারবারই ব্যর্থ হয়েছে এই ভৌগলিক অবস্থানের জন্যই।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)