NOW READING:
কেরলের স্কুলে বিশেষ জুম্বা ক্লাস, সকলের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক, সরকারি সিদ্ধান্তে বিতর্ক
June 28, 2025

কেরলের স্কুলে বিশেষ জুম্বা ক্লাস, সকলের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক, সরকারি সিদ্ধান্তে বিতর্ক

কেরলের স্কুলে বিশেষ জুম্বা ক্লাস, সকলের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক, সরকারি সিদ্ধান্তে বিতর্ক
Listen to this article


নয়াদিল্লি: মাদক বিরোধী সচেতনতা গড়ে তুলতে নয়া পদক্ষেপ। স্কুলে জুম্বা শেখানোর সিদ্ধান্ত কেরল শিক্ষা দফতরের। কিন্তু সেই নিয়ে তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। বিশেষ করে সংখ্যালঘু সংগঠনগুলি ছেলেমেয়েদের জুম্বা শেখানোর তীব্র বিরোধিতা করছে। স্কুলে এভাবে ছেলেমেয়েরা ‘স্বল্পবসনে’ নাচগান করবে, তা মেনে নেওয়া যায় না বলে মত তাদের। (Kerala News)

অল্পবয়স থেকে ছেলেমেয়েদের মধ্যে মাদক বিরোধী সচেতনতা গড়ে তুলতে উদ্যত হয়েছে কেরল সরকার। সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে স্কুলে স্কুলে জুম্বা শেখানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলেই চলছে জুম্বা ক্লাস। স্কুলের একেবারে শেষ পিরিয়ডে জুম্বা ক্লাস হচ্ছে। এই জুম্বা ক্লাস বাধ্যতামূলক সকলের জন্য। কিন্তু সংখ্যালঘু সংগঠনগুলি এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। রাজ্য শিক্ষা দফতরের এই পদক্ষেপ ব্যক্তি স্বাধীনতার পরিপন্থী বলে মত তাদের। (Zumba Class in Kerala Schools)

উইসডম ইসলামিক অর্গানাইজেশনের  জেনারেল সেক্রেটারি টিকে আশরফ জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে জুম্বা ক্লাসে অংশ নেবে না। ফেসবুকে তিনি লেখেন ‘এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমার ছেলে এতে অংশ নেবে না’। প্রভাবশালী মুসলিম সংগঠন Samastha-র নেতা নাসের ফইজি কুডাথায় জানিয়েছেন, শরীরচর্চার নামে স্কুলে অশ্লীলতার পাঠ দেওয়া হচ্ছে। 

কেরল সরকারের সমালোচনা করে নাসের বলেন, “স্কুলে জুম্বা ক্লাস চালু করেছে কেরল সরকার। জুম্বা আসলে এক ধরনের নাচ, যাতে স্বল্পবসন পরে যোগ দিতে হয়। বড় বড় ছেলেমেয়েদেরও যদি সরকার এই নির্দেশ দিয়ে থাকে, তা অত্যন্ত অপত্তিজনক। শরীরচর্চার যে রীতি রয়েছে, তার উন্নতি করা উচিত। এভাবে অশ্লীলতা চাপিয়ে দেবেন না। এতে ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং মৌলিক অধিকারও খর্ব হয়।”

যদিও কেরলের শিক্ষামন্ত্রী ভি শিবনকুট্টি জুম্বা ক্লাসকে শরীরচর্চার আদর্শ উপায় এবং মাদক বিরোধী সচেতনতা অভিযানের অংশ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেন, যাতে মুসলিম পড়ুয়াদেরও জুম্বা ক্লাসে অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। তবে স্বল্পবসনে নয়, স্কুলের ইউনিফর্মেই। শিবনকুট্টি লেখেন, ‘শিশুদের খেলতে দিন, মজা করতে দিন, সুস্থ হয়ে বেড়ে উঠতে দিন’।

শিবনকুট্টি যে ভিডিওটি পোস্ট করেছেন. সেটি কাসারাগড়ের Thanbeehul Islam Higher Secondary School-এর। সংখ্য়ালঘু গোষ্ঠীর আপত্তি নিয়ে তিনি জানান, এই ধরনের বিরোধিতা সমাজে আরও বিষ ঢালছে, যা মাদকের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর। তিনি বলেন, “শিশুদের মোটেই স্বল্পবসন পরতে বলা হয়নি। স্কুলের ইউনিফর্ম পরেই ক্লাসে যোগ দিচ্ছে।”

শিবনকুট্টি জানিয়েছেন, শিক্ষার অধিকার আইনে সরকার নির্দেশিত শিক্ষা প্রক্রিয়ায় যোগদান বাধ্যতামূলক সকলের। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের হাতে কোনও বিকল্প নেই। তাঁর কথায়, “মাদক বিরোধী সচেতনতা গড়ে তুলতে এই ধরনের ক্লাস হচ্ছে। মানুষকে এটা বুঝতে হবে। এভাবে আপত্তি জানালে সমাজে বিষ ঢুকবে। সাম্প্রদায়িকতা মাথাচাড়া দেবে, শিক্ষার মানোন্নয়ন হবে না।”

পড়াশোনার যে চাপ, অল্পবয়সিরা যেভাবে মাদকাসক্ত হয়ে উঠছে, তা থেকে পড়ুয়াদের বের করে আনতেই জুম্বা ক্লাসের সূচনা বলে জানায় কেরল সরকার। ছেলেমেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্য যাতে ভাল থাকে, শারীরিক ভাবে তারা যাতে চাঙ্গা থাকে, স্কুলে আসতে যাতে উৎসাহ পায়, হাসিখুশি থাকে যাতে, তার জন্যই এই উদ্যোগ বলে জানানো হয়।

এই বিতর্ক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সিপিএম-এর সাধারণ সম্পাদক MA Baby বলেন, “১৮০টির বেশি দেশে এই নাচের প্রচলন রয়েছে। মানসিক সচেতনতা, শারীরিক সক্রিয়তা অত্যন্ত জরুরি। সমালোচনার মধ্যে কোনও সত্যতা নেই। আমি কিছু ভিডিও দেখেছি, জামাকাপড় পরেই অংশ নিয়েছেন সকলে। শিক্ষাক্ষেত্রে ধর্মীয় রক্ষণশীলতার জায়গা নেই।”





Source link