NOW READING:
‘সরকার পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিক, নাহলে ওরম জায়গায় কাউকে যেতে দেওয়াই উচিত নয়’, ক্ষুব্ধ পহেলগাঁওয়ে
April 24, 2025

‘সরকার পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিক, নাহলে ওরম জায়গায় কাউকে যেতে দেওয়াই উচিত নয়’, ক্ষুব্ধ পহেলগাঁওয়ে

‘সরকার পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিক, নাহলে ওরম জায়গায় কাউকে যেতে দেওয়াই উচিত নয়’, ক্ষুব্ধ পহেলগাঁওয়ে
Listen to this article


Kashmir Terror Attack: পহেলগাঁও হামলায় জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে শৈলেশ কালাথিয়ার। মুম্বইয়ের স্টেট ব্যাঙ্কে ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। ছুটিতে স্ত্রী, ছেলে এবং মেয়েকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন কাশ্মীরে। আর সেখানেই ঘটে গেল মর্মান্তিক ঘটনা। 

নিহতের ছেলে সংবাদসংস্থা এএনআইকে জানিয়েছে সেদিনের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। ছোট্ট ছেলেটি বলেছে, ‘জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে মিনি সুইৎজারল্যান্ডে গিয়েছিলাম আমরা। গুলি চলার শব্দ শুনতে। জঙ্গি হামলা হয়েছে বোঝার পর লুকিয়ে পড়ি আমরা। কিন্তু ওরা আমাদের খুঁজে পেয়ে যায়। আমরা ২ জন জঙ্গিকে দেখেছিলাম। আমি শুনেছিলাম তাদের মধ্যে একজন নির্দেশ দিয়েছিল মুসলমান এবং হিন্দুরা আলাদা হয়ে যাও। তারপর সব হিন্দুদ পুরুষদের গুলি করে মেরেছিল। জঙ্গিরা তিনবার কলমা পড়তে বলেছিল। যারা বলতে পারেনি তাদের গুলি করেছিল। জঙ্গিরা চলে যাওয়ার পর স্থানীয়রা এসে বলেন যাঁরা বেঁচে গেছেন তাড়াতাড়ি নীচে নেমে যান। সেনা এসেছিল এক ঘণ্টা মতো পরে। আমরা ওই জায়গা থেকে নীচে নেমে এসেছিলাম। জঙ্গিরা বাবাকে কিছুই বলতে দেয়নি। আমার মাকেও কিছু বলেনি। একজন জঙ্গি ফর্সা ছিল। তার দাড়ি ছিল। মাথায় ক্যামেরা লাগানো ছিল। মহিলা এবং বাচ্চাদের ছেড়ে দিয়েছিল ওরা।’ 

এই ভয়াবহ ঘটনা সাক্ষী ছিলেন শৈলেশের স্ত্রী শীতল। সংবাদসংস্থাকে এএনআই- কে তিনিও জানিয়েছেন সেদিনের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা। শীতল বলেছেন, ‘গুলির শব্দ শুনেই আমরা দৌড়ে লুকোতে যাই। কিন্তু ওই এলাকা একটা সীমানা দিয়ে ঘেরা ছিল। তাই লুকোনোর কোনও জায়গা ছিল। হঠাৎ আমাদের সামনে এসে পড়ে এক জঙ্গি। সে আদেশ দেয় হিন্দুরা একদিকে চলে যাও, আর মুসলমানরা আরেক দিকে। এরপর যখন সকলকে কলমা পড়তে বলেছিল ওই জঙ্গি, মুসলমানরা সাড়া দিয়েছিল। এরপর ওই জঙ্গিকে হিন্দু পুরুষদের আলাদা করে এবং সবাইকে গুলি করে। লম্বা একটা বন্দুক ছিল ওই জঙ্গির হাতে। উপরে লাগানো ছিল ক্যামেরা। যাঁদের গুলি করেছে তাঁদের মরে যাওয়া পর্যন্ত ওখানেই দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল ওই জঙ্গি। আমাদের সামনেই ৬ থেকে ৭ জনকে গুলি করেছিল ও। এত কাছ থেকে গুলি করেছিল যে লোকগুলো ২-৩ মিনিটের বেশি বাঁচতে পারেনি। আমার কোলে ছিল আমার স্বামীর মাথা। আমি কিচ্ছু করতে পারিনি।’ 

পহেলগাঁওয়ের বৈসারন উপত্যকা বরাবরই পর্যটকদের ‘মাস্ট ভিজিট’ তালিকায় থাকে। সবসময়েই সেখানে পর্যটকদের ভিড় হয়। অথচ সেখানেই ছিল না কোনও নিরাপত্তা। না সেনাবাহিনী, না পুলিশ, জঙ্গি হামলার সময় ওই এলাকায় ছিলেন না কেউই। এই ঘটনাতে হতবাক শীতল। তিনি বলেছেন, ‘আমি অবাক যে এত পর্যটক থাকার পরেও ওখানে না একজন সেনা, না একজন পুলিশ, কেউ ছিল না। আমরা কাশ্মীরে কোনও হিন্দু-মুসলমান দ্বন্দ্ব দেখিনি। ওখানে সেরকম পরিবেশ নেই। আমার মনে হয় শুধুমাত্র পাকিস্তানিরাই এইসব হিন্দু-মুসলমানের বিভেদের কথা বলেছে বিতর্ক তৈরির জন্য। সরকারের উচিৎ এই রকম এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। নাহলে মানুষকে ওরকম বিপজ্জনক এলাকায় যেতে দেওয়াই উচিৎ নয়। কিচ্ছু নেই ওখানে। না হাসপাতাল, না নিরাপত্তা, না কোনও সাহায্য।’ 

অন্যদিকে স্বামীর শেষকৃত্যের দিন নেতা-মন্ত্রীদের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন শীতল। স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘আপনাদের জীবনটা জীবন। আর যে কর দেয় তাঁর জীবনটা জীবন নয়? আমি ন্যায় বিচার চাই। আমার সন্তানদের ভবিষ্যৎ খারাপ হতে দেব না। সব জায়গায় আমাদের থেকে কর নেন আপনারা। আর আমার বাড়ির লোকের যখন দরকার ছিল তখন কেউ কোথাও ছিল না। আমি ন্যায় চাই।’ 

আরও দেখুন





Source link