ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা : কসবার ল’কলেজের ক্যাম্পাসে ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই দায়ের হয়েছে এফআইআর। আর সেখানে অভিযুক্তদের নামের জায়গায় অক্ষর লেখা হয়েছে। এই নিয়ে শাসকদল এবং পুলিশের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে বিরোধী দল। ‘এটা কি বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করতে কলকাতা পুলিশ ও তৃণমূলের যৌথ ষড়যন্ত্র?’ কসবাকাণ্ডে FIR-এ অভিযুক্তদের নামের অক্ষর আক্রমণ বিজেপির। FIR-এ মনোজিৎ মিশ্রর নাম বোঝাতে ব্যবহার হয়েছে ‘J’, জেব খানের নাম বোঝাতে ব্যবহার হয়েছে ‘M’, প্রমিত মুখার্জির নাম বোঝাতে ব্যবহার হয়েছে ‘P’, নির্যাতিতার কাছে বিভ্রান্তি তৈরি করতেই এই ধরনের অক্ষর ব্যবহার, অভিযোগ বিজেপির। সওয়াল জবাবের সময়েও বিভ্রান্তি তৈরির জন্যই এমন অক্ষর, অভিযোগ বিজেপির।
🚨🚨Isn’t this a deliberate and sinister ploy by the TMC and Kolkata Police to manipulate the judicial process?
➡️In the FIR, J is used for Manojit Mishra, M is assigned to Zaib Ahmed, and P is given to Pramit Mukherjee.
➡️This kind of initial manipulation seems designed to… pic.twitter.com/snsAyqw6hA
— BJP West Bengal (@BJP4Bengal) June 29, 2025
অন্যদিকে পুলিশের তরফে বলা হচ্ছে, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার নতুন ধারা অনুযায়ী নামের অক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে, এমনটাই খবর পুলিশ সূত্রে। ধর্ষণ, পকসোর মতো স্পর্শকাতর মামলার ক্ষেত্রে FIR-এর দু’টি কপি তৈরি হয়, খবর পুলিশ সূত্রে। আদালতে দু’টি কপি পাঠানো হয়, একটিতে অভিযুক্তের পুরো নামই থাকে, খবর পুুলিশ সূত্রে। দ্বিতীয় FIR কপিতে নামের জায়গায় সাদা কালি দিয়ে মুছে অক্ষর ব্যবহার করা হয়, খবর পুলিশ সূত্রে। অভিযোগকারী বা অভিযুক্তদের নাম প্রকাশের সম্ভাবনা কমাতেই এই নিয়ম, খবর পুলিশ সূত্রে।
পুলিশের তরফে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে, সেনসিটিভ এফআইআর অর্থাৎ স্পর্শকাতর মামলা যখন করা হয়, যেমন এখানে গণধর্ষণের এফআইআর করা হয়েছে, এছাড়াও পকসো কেসের এফআইআর যদি করা হয়, সেক্ষেত্রে অভিযোগকারীর নাম তো থাকে, অভিযুক্তদের নামও থাকে, এমনকি অনেকসময় ঠিকানাও থাকে। তার সঙ্গে ফরোয়ার্ডিং কপি, কমপ্লেন লেটার সবকিছুই আদালতে যায়। এখানে নাম-ঠিকানা সবই লেখা থাকে। আদালতে জমা পড়ে যাওয়ার পরে, একটা সময়ের পর যে কেউ এটার সার্টিফায়েড কপি তুলতে পারে। এই কপি তোলা হয়ে গেলে, তার ফলে অভিযুক্ত, অভিযোগকারী সকলের নাম, ঠিকানা প্রকাশ্যে চলে আসার সম্ভাবনা থাকে বা চলে আসে।
এই বিষয়টি এড়ানোর জন্যই গণধর্ষণ, পকসো এইসব স্পর্শকাতর মামলার ক্ষেত্রে পুলিশের তরফে দুটো কপি ব্যবহার করা হয়। একটি অরিজিনাল কপি, যেখানে সকলের নাম থাকে। অন্যটি এই অরিজিনালের ফটোকপি। এই আরেকটি কপি বা দ্বিতীয় কপি নিয়েই অভিযোগ যে সেখানে বিভিন্ন অক্ষর লেখা হয়েছে অভিযুক্তদের নামের জায়গায়। এক্ষেত্রে পুলিশের বক্তব্য, অরিজিনালের ফটোকপি করার আগেই হোয়াইটনার দিয়ে অভিযুক্তদের নামের জায়গায় অক্ষর লেখা হয়েছে। তারপর ফটোকপি করা হয়েছে। এই দ্বিতীয় এফআইআর কপি থেকে যাতে কোনওভাবে অভিযোগকারী এবং অভিযুক্তদের পরিচয় প্রকাশ্যে চলে না আসে, তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে।