রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি : বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নিপীড়নের শেষ নেই। অনবরত অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন সংখ্যালঘু হিন্দুরা। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই বাংলাদেশ ছেড়ে এদেশে পালিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। সীমান্তে তাই সক্রিয় রয়েছে বিএসএফ। এই আবহেই ওপার বাংলায় মৌলবাদীদের হামলা থেকে প্রাণ বাঁচাতে এপারে ‘আশ্রয়’ নেওয়ার চেষ্টা করলেন এক হিন্দু যুবক। সেই লক্ষ্যে নদী সাঁতরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন তিনি। জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে যখন নদী সাঁতরে এপারে ঢোকেন, তখন তাঁকে আটক করে BSF। নদী পেরিয়ে বাংলাদেশের রংপুর থেকে জলপাইগুড়িতে আশ্রয়ের চেষ্টা। রংপুর জেলার ঠাকুরগাঁও গ্রামে বাড়ি যুবকের। এদিন BSF তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পাকড়াও যুবক বলেন, “হিন্দুদের ওপর অনেক অত্য়াচার হচ্ছে। যার জন্য আমি বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসি।”
এমনই আরও একটি ঘটনা সামনে এসেছে। পরিবার ইসকনের ভক্ত, বাংলাদেশে সেটাই অপরাধ। তাই বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছিল মৌলবাদীরা। নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে অসুস্থ মা-বাবাকে ফেলেই ভারতে আশ্রয়ের খোঁজে এসেছিল বছর ১৫-র কিশোরী। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার ফতেপুর সীমান্তে তাকে আটক করে BSF। বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার বাসিন্দা ওই নাবালিকাকে হোমে পাঠানো হয়।
মা-বাবার একমাত্র মেয়ে বছর ১৫-র কিশোরী। তার অভিযোগ, পরিবার ইসকনের ভক্ত হওয়ায় তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। প্রাণভয়ে ভারতে চলে আসে নাবালিকা। জলপাইগুড়ির বেলাকোবায় থাকেন নাবালিকার আত্মীয়। পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে গতকাল তিনি চোপড়া থানায় আসেন। ওই আত্মীয় জানিয়েছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ও হিন্দুদের ওপর নিপীড়ন চলছেই। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন নাবালিকার আত্মীয়।
এই পরিস্থিতিতে ইউনূস সরকারের প্রেস সচিবের দেওয়া সাম্প্রতিক তথ্যে বড় চমক দেখা গেছে। সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে হিংসা হয়েছে, বলে মানল বাংলাদেশ সরকার। এই সব ঘটনায় ৭০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, ৮৮টি মামলা দায়ের হয়েছে। ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর অবশেষে হামলার কথা স্বীকার করলেন ইউনূস সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। যদিও এই সমস্ত হিংসার মামলা গত অক্টোবর পর্যন্ত বলে জানিয়েছেন তিনি। নভেম্বর জুড়ে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় সন্ত্রাসের এখনও কোনও হিসাব নেই ইউনূস সরকারের কাছে। অথচ সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে নতুন নতুন মামলায় জড়াতে অতি তৎপরতা। হিংসাকাণ্ডে গ্রেফতারের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশ্বাস দিয়েছেন ইউনূস সরকারের প্রেস সচিব। সুনামগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ঢাকার তুরাগ থানা, নরসিং এলাকায় কিছু হিংসার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন শফিকুল আলম। ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর চাপে পড়ে হামলার কথা স্বীকার বাংলাদেশের ? উঠছে প্রশ্ন।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে
আরও দেখুন