কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: অবসরের আগেই সরিয়ে দেওয়া হল যাদবপুরের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যকে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গন্ডগোলের জেরে অপসারণের সিদ্ধান্ত? রাজভবনের চিঠি পৌঁছল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে। ২০২৪-এর ২০ এপ্রিল ভাস্কর গুপ্তকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল। নিয়োগের সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নিল রাজভবন।
২০২৪ সালের এপ্রিলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদের দায়িত্ব পেয়েছিলেন ভাস্কর গুপ্ত। নথি অনুযায়ী চলতি মাসের ৩১ তারিখ অবসর গ্রহণ করার কথা তাঁর। তবে তার আগেই, ২৭ মার্চ অর্থাৎ গতকাল রাজভবনের তরফে উপাচার্যকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ভাস্কর গুপ্তের নিয়োগ সংক্রান্ত যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল তা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। তাৎক্ষণিক ভিত্তিতে এই নির্দেশ কার্যকর করার কথা বলা হয় চিঠিতে।
ওয়াকিবহল মহলের ধারণা, যাদবপুরের অশান্তির জেরেই এই পদক্ষেপ।
উল্লেখ্য, কিছু দিন আগে ওয়েবকুপার বৈঠককে কেন্দ্র করে চলতি মাসের শুরুতেই উত্তাল হয়ে ওঠে যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়। আক্রান্ত হন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও উপাচার্য। দুই ছাত্রনেতাও জখম হন। ঘটনার জল গড়ায় আদালতে। সেই মামলার শুনানিতে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানাল, যাদবপুরে কোনও রাজনৈতিক নেতা বা গুরুত্বপূর্ণ কাউকে নিয়ে কোনও সেমিনার বা মিটিং করা যাবে না। পাশাপাশি আদালতের প্রশ্ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয় জানা সত্ত্বেও কেন রাজনৈতিক নেতা সেখানে গিয়েছিলেন?
আদালতের নির্দেশ, পড়াশোনার বিষয় ছাড়া অন্য এমন কোনও অনুষ্ঠান বা সেমিনারের আয়োজন করা যাবে না বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেখানে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার বিষয়েও কর্তৃপক্ষের কাছে হলফনামা চেয়েছে আদালত। বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়ে তা জানাতে হবে। একই সঙ্গে উল্লেখ করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি সুস্থ এবং স্বাভাবিক রাখতে কর্তৃপক্ষ কী করেছেন। আদালতের নির্দেশ, পড়াশোনার বিষয় ছাড়া রাজনৈতিক ব্যক্তির উপস্থিতিতে কোনও ধরনের অনুষ্ঠান বা সেমিনার করা যাবে না যাদবপুরে।
আরও দেখুন