কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) হস্টেলে ফের ছাত্র নির্যাতনের অভিযোগ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সান্ধ্য বিভাগের ছাত্র। সূত্রের খবর, ‘নির্যাতিত’ ছাত্রের বিরুদ্ধে পাল্টা চুরির অভিযোগ এনেছেন পড়ুয়াদের একাংশ।

 ওই ছাত্রকে উদ্ধার করতে গেলে মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্টকে বাধা দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট দিয়েছেন মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট। অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।

গতকাল রাত ৮টা  নাগাদ হস্টেলে যান মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট। হাসপাতালের ভর্তি করতে গেলে প্রাথমিকভাবে বাধা দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরে তাঁকে নিয়ে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। আপাতত স্থিতিশীল ওই ছাত্র। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট মিতালি দেব বলেন, ‘আমি গিয়েছিলাম, ব়্যাগিং নয়। একটি ছেলে অসুস্থ এবং ভয় পাচ্ছে শুনে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি সত্যি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কোনও নিগ্রহ হয়নি। তবে ঘিরে ধরে বসেছিল বাকিরা। উত্তপ্ত আলোচনা চলছিল। আমি পরে অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে হাসপাতালে ভর্তি করাই’।  ল্যাপটপ চুরি যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও পরে পাওয়া গিয়েছে ওই ল্যাপটপ- এমনটাই দাবি। সূত্রের খবর, পুরুলিয়া থেকে আসা ওই ছাত্র মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। ওই ছাত্রের বাবা ও মা কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি ব়্যাগিং স্কোয়াডকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে গতবছর আগস্টে র‍্যাগিংয়ের জেরে এক ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল। বছর ঘোরার আগেই, সেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের মেন হস্টেলে এক ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠল। 

বুধবার রাতে ল্যাপটপ চুরির অভিযোগে কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং-এর স্নাতকোত্তরের এক ছাত্রের উপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠল আবাসিকদের বিরুদ্ধেই। হস্টেল থেকে গন্ডগোলের খবর আসার পর, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সেখানে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট। নির্যাতনের শিকার ছাত্রটিকে হাসপাতালে পাঠাতে গেলে, তাঁকে বাধার মুখে পড়তে হয় বলে দাবি মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্টের। এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। যেখানে এক মহিলার সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে দুই যুবককে। তাঁরা বলছিলেন, ‘ আপনি নিয়ে যাচ্ছেন। একটা লিখিত দিয়ে যান যে, সম্পূর্ণ দায়িত্ব আমরা নিয়ে যাচ্ছি। এ যদি বাইরে গিয়ে কিছু করে, এটা আমাদের হস্টেলের দায়িত্ব নয়।’ পাল্টা ওই মহিলা বলছেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক। আমার রেজিস্ট্রেশন নম্বর আছে এবং এটা আমার দায়িত্ব, এটা প্রত্যেকটা ছাত্রের জন্য। লিখিত দেওয়ার কাজ আমার নয়।’ মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট জানিয়েছেন কোনও ব়্যাগিং হয়নি। একই দাবি করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু।

মেডিক্য়াল সুপার থেকে রেজিস্ট্রারের এই দাবি নিয়েই, প্রশ্ন তুলছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অরণি ঘোষ বলেন, ‘আমরা জানতে চাই, কোন তদন্তটা হয়েছে যে, কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তে আসছে যে রাগিংটা হয়নি?’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অনুষ্ণা দাসের বক্তব্য়, ‘কোনও একটা জিনিস চুরি হলে সাধারণ মানুষ কী করবে? হয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানাব, অথবা থানায় জানাব। ওখানেই আমাকে কিছু একটা সুরাহা করতে হবে, এটা কী ধরনের বিচার? প্রচুর মানসিক চাপ দেওয়া হয় ছেলেটির উপর।’ এই ঘটনা নিয়ে ক্য়ামেরার সামনে মুখ খুলতে চাননি মেন হস্টেলের আবাসিকরা। তাঁদের একাংশের দাবি – যে ছাত্রটিকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে, তিনি নিজেও ল্যাপটপ চুরির কথা স্বীকার করেছিলেন। পরে সেটি পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় ছাত্রকে।

আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।

আরও পড়ুন: Budget 2024: বন্যা নিয়ন্ত্রণে ঢালাও বরাদ্দ বিহার-অসমে, বাজেটে বাংলার প্রাপ্তি শূন্য

আরও দেখুন



Source link

Shares:
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *