জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো:
যুদ্ধ পরবর্তী পাকিস্তানের রাজনীতিতে পালাবদল। ভারতের অপারেশন সিঁদুরের পর পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। নড়েচড়ে বসেছে পাক প্রশাসন। ভারত, পাকিস্তানের সবথেকে শক্তিশালী নূর এয়ারবেসে আঘাত হানার পর, কার্যত রণে ভঙ্গ দিয়েছে পাক সেনা ও পাক প্রশাসন। ক্ষমতায় এবং কূটনীতিতে পেরে উঠতে না পেরে অবশেষে নিজেদের প্রশাসনিক রদবদলের জন্য জেলবন্দি ইমরান খানের শরণাপন্ন হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেহওয়াজ।
যুদ্ধ আবহে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ভুয়ো মৃত্যুর খবর সারা বিশ্ব কাঁপিয়ে দিয়েছিল। এমনকি খোদ পাক প্রশাসন এই খবরে সিলমোহর দিয়েছিল। কিন্তু পরে জানা যায় যে, ইমরানের জেলে অত্যাচারিত হয়ে মৃত্যুর খবরের কোন সত্যতা নেই। কারণ বর্তমান ও প্রাক্তন দুই প্রধানমন্ত্রীই একে অপরের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান।
আরও পড়ুন: Fact Check on Imran Khan Death in Jail: আশঙ্কাই সত্যি! জেলেই খুন হয়ে গেলেন ইমরান খান! যদিও…
এর আগে জেলে বসেই পাকিস্তান সরকারকে সাবধান করেছিলেন ইমরান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পহেলগাঁও হামলা যে সহজে মেনে নেবেন না, তা আগেই সতর্ক করেছিলেন দেশবাসীকে।
মূলত শেহবাজের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়ার পর তা গ্রহণ করেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পাকিস্তানের রাজনীতিতে নাটকীয় মোড় দেখা দিয়েছে। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা এবং কারাবন্দি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের দেওয়া আলোচনার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন।
দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল বলছে, গত সোমবার আদিয়ালা জেলে দলের বর্তমান চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গওহর আলী খান ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সরকারের আলোচনার প্রস্তাব পৌঁছে দেন এবং ইমরান খান সেসময় আলোচনার অনুমতি দেন বলে বিশ্বস্ত বেশ কিছু সূত্র জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: Ahmed Sharif Chaudhry in Operation Sindoor: রক্ত চরিত্র! পাক সেনাবাহিনীর প্রধানের লাদেন-সম্পর্ক, তাঁর বাবাও জঙ্গি!
তবে ইমরান খান পরিষ্কার করে দিয়েছেন, আলোচনাটি গোপনীয়ভাবে ও গণমাধ্যমের উপস্থিতি বা নজরের বাইরে হওয়া উচিত, যাতে ফলপ্রসূ সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়। ইমরানের প্রতিষ্ঠিত দল পিটিআই বলছে- এইবার আলোচনা হবে বেশ কৌশলী ও নিরবভাবে। দলটির ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, পিটিআই এখন সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় এগোনোর জন্য অনুরোধ জানাবে। তাদের অভিমত, অতীতে আলোচনার প্রয়াস গণমাধ্যমে অতিরিক্ত প্রচারের কারণে ব্যর্থ হয়েছে। তাই এবার তারা চান, টেকসই পরিবেশে এই আলোচনা হোক।
দ্য নিউজ পত্রিকাকে ব্যারিস্টার গওহর জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব ইমরান খানের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। তবে আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। তার ভাষায়, “আমাদের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে তা আমি বলে দিতে পারি না।”
দলের ভেতরের সূত্রগুলো বলছে, ইমরান খান চান আলোচনায় সেনাবাহিনীর পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ সমর্থন থাকুক। এমনকি একটি সূত্র দাবি করেছে, প্রয়োজনে তিনি সেনাবাহিনীর একজন প্রতিনিধি সঙ্গেও বৈঠকে বসতে রাজি।
এদিকে এই আলোচনার উদ্যোগ এমন এক সময় এসেছে, যখন ভারতের সাম্প্রতিক আগ্রাসনের পর পাকিস্তানে রাজনৈতিক ঐক্যের ডাক উঠেছে। দেশজুড়ে মিলিটারি-সিভিলিয়ান সম্পর্ক, জাতীয় নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা দিন দিন বাড়ছে। তবে এই পর্দার আড়ালের আলোচনা সত্যিই কতদূর এগোবে এবং আদৌ কোনও বড় সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবে কি না সেটাই এখন দেখার বিষয়।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)