জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মধ্যপ্রাচ্যে ফের শুরু উত্তেজনা। এক রাতের ব্যবধানে ইরান-ইসরায়েলের (Israel-Iran War) পুরোনো শত্রুতা রূপ নিয়েছে সরাসরি সামরিক সংঘাতে। পারমাণবিক কর্মসূচি, ছায়াযুদ্ধ, সাইবার হামলা থেকে শুরু করে একে অপরের জোটভুক্তদের ওপর হামলা-সব মিলিয়ে উত্তেজনার পারদ এখন তুঙ্গে। শুক্রবার ভোর রাতের দিকে প্রথমে ইরানের তেহরানে পরমাণু ঘাঁটি (Iranian military and nuclear sites) লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। ইরানের বিরুদ্ধে পুরোদস্তুর যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ইসরায়েল (Israel strikes Iran)। ইসরায়েলের উদ্দেশে পালটা ড্রোন হামলা চালিয়েছে তেহরান। ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকা টার্গেট করে ১০০টি ড্রোন নিয়ে হামলা চালিয়েছে তেহরান। ইজরায়েল বনাম ইরানের এই যুদ্ধে সামরিক শক্তিতে এগিয়ে কে?
আরও পড়ুন- Ahmedabad Plane Crash: অবিশ্বাস্য! ভয়ংকর বিস্ফোরণে জীবন্ত ঝলসে গিয়েছে ২৪১ জন, অথচ ধ্বংসস্তূপে অক্ষত পবিত্র ‘গীতা’…
ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু শক্তি
ইরানের অন্যতম বড় শক্তি তাদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ‘শাহাব’ এবং ‘সিজিল’ সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তারা ইসরায়েলের যেকোনো শহরে হামলা চালাতে সক্ষম। ইসরায়েল যদিও পরমাণু শক্তির কথা কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি, তবুও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তাদের হাতে রয়েছে ৮০ থেকে ৯০টি পরমাণু ওয়ারহেড।
বিমান প্রতিরক্ষা
ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় শক্তি এর এয়ারফোর্স। তাদের হাতে রয়েছে মার্কিন তৈরি অত্যাধুনিক এফ-৩৫ জেট, যেগুলোর সাহায্যে তারা শত্রুর এলাকায় প্রবেশ করেই টার্গেট ধ্বংস করতে সক্ষম। অন্যদিকে, ইরানের বিমানবাহিনী তুলনামূলকভাবে পুরনো সোভিয়েত ও চিনা বিমানে নির্ভরশীল। তবে তারা নিজেদের প্রযুক্তিতে তৈরি কিছু ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সক্ষমতা বাড়িয়েছে।
জনবল ও সামরিক গঠন
ইরানের রয়েছে প্রায় ৬ লাখ সক্রিয় এবং ২ লাখ ৫০ হাজার রিজার্ভ সেনা। অন্যদিকে, ইসরায়েলের সক্রিয় সেনা সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার এবং রিজার্ভ মিলিয়ে মোট প্রায় ৫ লাখ। অর্থাৎ জনবল ও সংখ্যায় ইরান এগিয়ে। তবে ইসরায়েলের সেনারা অনেক বেশি প্রশিক্ষিত এবং আধুনিক সরঞ্জামে সজ্জিত।
আরও পড়ুন- Meghalaya Honeymoon Case: রাজকে দিয়ে রাজাকে খুন, তৃতীয় ব্যক্তির সঙ্গে পালানোর পরিকল্পনা সোনমের! ইন্দোরে কেনেন ফ্ল্যাটও…
প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা
ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’ বিশ্বের অন্যতম উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা শত্রুর ছোড়া রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করতে সক্ষম। এ ছাড়া মোসাদ ও শিন বেট-এর মতো গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও তাদের বড় শক্তি। ইরানও ‘বাসিজ’ ও রেভল্যুশনারি গার্ড (IRGC) ব্যবহার করে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে রেখেছে।
ছায়াযুদ্ধ ও জোট
ইরান সরাসরি যুদ্ধের চেয়ে ছায়াযুদ্ধে বেশি পারদর্শী। লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতি এবং সিরিয়ার সরকারপন্থি মিলিশিয়াদের মাধ্যমে তারা ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। অন্যদিকে, ইসরায়েলের পাশে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় জোট- যা সরাসরি সংঘাতে বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।
দুই দেশেরই রয়েছে আধুনিক সেনাবাহিনী, শক্তিশালী গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক এবং কৌশলগত জোট। তবে পরিসংখ্যান বলছে, ইসরায়েল প্রযুক্তি ও আধুনিকতায় কিছুটা এগিয়ে, আর ইরান এগিয়ে জনবল ও ছায়াযুদ্ধের সক্ষমতায়। সব মিলিয়ে, প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ইসরায়েল এগিয়ে থাকলেও, ইরানের ছায়াযুদ্ধের কৌশল এবং ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা যুদ্ধকে বহু মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)