গুয়াহাটি: ১৫২ রানের লক্ষ্য খুব একটা কঠিন ছিল না। রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে একেবারে দাপুটে মেজাজে ১৫ বল ও আট উইকেট বাকি রেখেই ম্যাচ জিতে নেল কলকাতা নাইট রাইডার্স (RR vs KKR)। বোলিংয়ে টিম পারফরম্যান্সের পর নাইটদের হয়ে ব্যাট হাতে শাসন করলেন কুইন্টন ডি কক (Quinton de Kock)। শেষের ওভারগুলিতে ওয়াইড না হলে হয়তো প্রোটিয়া তারকা সেঞ্চুরিও হাঁকিয়ে ফেলতেন। তবে শেষমেশ ৯৭ রানেই অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়লেন তিনি।
সুনীল নারাইনের অনুপস্থিতি এদিন ডি ককের সঙ্গে ওপেন করতে নেমেছিলেন মঈন আলি (Moeen Ali)। তবে গত ম্যাচে নারাইনের মতো ঝোড়ো ইনিংস খেলতে পারলেন না মঈন। তবে একদিকে যেখানে মঈন ব্যাট বলে করতে সমস্যায় পড়ছিলেন, সেখানে ডি কক অবলীলায় বড় শট খেলছিলেন। পাওয়ার প্লে ৪০ রান খুব বেশি না হলেও, নাইটরা কোনও উইকেট না হারিয়েই এই রান তোলে। তবে তার পরপরেই ভুল বোঝাবুঝির জেরে পাঁচ রানে মঈন আলিকে সাজঘরে ফিরতে হয়।
এরপরে ডি কককে সঙ্গ দিতে মাঠে নামেন অজিঙ্ক রাহানে। তিনি এদিন অবশ্য খুব বেশি রান করতে পারেননি। ১৮ রানেই তাঁকে সাজঘরে ফিরতে হয়। তবে ডি কক নিজের ইনিংস চালিয়ে যান। গত ম্যাচে বড় রান না করতে পারার হতাশা হয়তো তাঁর মধ্যে রানের খিদেটা আরও বাড়িয়ে তোলে। ৩৬ বলে পাঁচটি চার ও তিনটি ছক্কার সুবাদে অর্ধশতরান পূরণ করেন ডি কক। যে পিচে মিডল ওভারে রাজস্থান রান তুলতে নাকানি চোবানি খাচ্ছিল, সেখানে ডি কক অবলীলায় ব্যাটিং করে যান। তাঁকে কোনও রাজস্থান বোলার তেমন সমস্যায়ও ফেলেননি।
প্রোটিয়া তারকাকে যোগ্য সঙ্গ দেন তরুণ অঙ্গকৃষ রঘুবংশী। জয় প্রায় নাগালে বুঝতে পেরে একেবারে শেষের দিকে ডি কক পরপর বড় শট হাঁকিয়ে নাইটদের জয় সুনিশ্চিত করে ফেলেন। তবে এই ম্যাচে কেকেআরের জয়ের ভিতটা রেখেছিলেন বোলাররা। আরও ভাল করে বলতে হলে কেকেআরের দুই স্পিনার মঈন আলি ও বরুণ চক্রবর্তী (Varun Chakravarthy)।
এদিন টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কেকেআর অধিনায়ক রাহানে। যশস্বী জয়সওয়াল এবং সঞ্জু স্যামসন শুরুটা মন্দ করেননি। রানের গতি বাড়াতে গিয়ে ১৩ রানে বোল্ড হন সঞ্জু স্যামসন। তা সত্ত্বেও পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৫৪ রান তোলে রয়্যালস।
কিন্তু স্পিন বোলিং আক্রমণে আসতেই বদলায় ছবিটা। বরুণ চক্রবর্তীর বলে রিয়ান পরাগকে সাজঘরে ফিরতে হয়। ঘরের মাঠে বেশ ভাল ছন্দে দেখাচ্ছিল রিয়ান পরাগকে। তবে ২৫ রানে তাঁকে সাজঘরে ফিরতে হয়। এরপর তো কেবল আসা আর যাওয়ার পালা। পরপর তিন ওভারে আরও তিন উইকেট পড়ে। তিন উইকেটই মঈন আলি ও বরুণ চক্রবর্তী ভাগাভাগি করে নেন। হাসারাঙ্গাকে পিঞ্চ হিটার হিসাবে মাঠে নামানোর কৌশলও কাজে লাগেনি। নাইট প্রাক্তনী নীতীশ রানার সংগ্রহ মাত্র চার।
নিরন্তর উইকেট হারিয়ে কখনই ইনিংসে গতি পায়নি রাজস্থান। একমাত্র ধ্রুব জুরেলই খানিকটা লড়ছিলেন। তবে তাঁকেও ৩৩ রানে ফিরতে হয়। স্পিনারদের পরে সাফল্য পান ফাস্ট বোলাররা। এক ওভারে জুরেল ও হেটমায়ারকে ফেরান হর্ষিত রানা। শুভম দুবেকে আউট করেন বৈভব। শেষের দিকে জোফ্রা আর্চার ১৬ রানের ছোট্ট ইনিংস খেলেন। তার ইনিংসের সুবাদেই ১৫০ রানের গণ্ডি পার করতে সক্ষম হয় রাজস্থান। তবে ইনিংসের শেষ ওভারে তাঁকে ফেরান স্পেনসার জনসন। ১৫১ রানে থামে রাজস্থান। জবাবে সহজেই ম্যাচ জিতে নিল কেকেআর।
আরও দেখুন