নয়াদিল্লি: মাত্র ষোলো বছর বয়সে হারিয়েছেন বাবাকে । সেই যে জীবন যুদ্ধে নেমেছেন, আর থামেননি। বিমান পরিষেবায় কাজ পেয়েও, চাকরি ছেড়েছেন তিনি। আজ্ঞে হ্যাঁ, এই অজমেঢ় কন্যার নাম সুফিয়া সুফি। যার মুকুটে রয়েছে ৫ বারের গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ! তিনিই হলেন এইমুহূর্তে দেশের অন্যতম অ্যাথলিট। দৌড়বিদ। আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে যিনি আপনার স্বপ্নের উড়ান নিতে, অনুপ্রেরণা যোগাবে।
IANS-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘যখন আপনার মধ্যে কোনও কিছু করার প্যাশন থাকবে, সেই প্যাশানই আপনার অনেকদূর নিয়ে যাবে। যতই চড়াই উতরাই হোক রাস্তা, মাঝে কী বাধা এল, কোন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে, আদৌ এসব চোখে পড়বে না। নাইবা এনিয়ে চলবে চিন্তা। তখন পাখির চোখ একটাই, কীভাবে লক্ষ্য পৌঁছনো যায়। তবে হ্যাঁ এখানে প্যাশন এবং লক্ষ্য পৌঁছনোর জন্য উন্মাদনাটা থাকতে হবে। যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কোন ফিল্ডে থাকতে চান, সেটা বড় বিষয় নয়, আপনাকে লক্ষ্যে পৌঁছতে গেলে, আপনাকে সেই পরিমাণ ইচ্ছাশক্তিও ভিতরে রাখতে হবে।’
সাল ২০১৮। নিজের সুপ্রতিষ্ঠিত বিমান পরিষেবার চাকরি ছেড়ে দেন অজমেঢ় কন্যা সুফিয়া সুফি। নেন বিশ্রাম। মানসিক চাপ কমাতে আর নিজের প্যাশনে শান দিতে শুরু করেন দৌড়। সেই শুরু। আর থামেননি। তারপর থেকে ৫ বার গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড জিতেছেন সুফিয়া সুফি। বলার অপেক্ষা রাখে না, যা ভারতে Ultrarunning -র জন্য মানদণ্ড তৈরি করে দিয়েছে।
চাকরি ছাড়ার ঠিক পর বছরেই রেকর্ড গড়েন তিনি। সাল ২০১৯। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পাড়ি দিয়ে দ্রুততম মহিলা হিসেবে রেকর্ড গড়েছিলেন। তারপর ২০২১ সালে সব থেকে কম সময়ে অজমেঢ় কন্যা সুফিয়া, সোনালি চতুর্ভুজ অতিক্রম করে রেকর্ড গড়েছিলেন। ২০২২ তিনি মানালি-লে, পায়ে হেঁটে অতিক্রম করার রেকর্ডও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে ! এখানেই শেষ নয়, তিনি কার্গিল যুদ্ধের সেনাদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানিয়ে ট্রিবিউট রানেও অংশ নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন, টানা ২ মাস ধরে বছর ১৪ এর দলিত নাবালিকাকে ‘গণধর্ষণ’ ! অ্যাসিড দিয়ে চামড়া পুড়িয়ে লেখা হল ‘ওম’ ট্যাটু..
একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি আরও একটি মূল্যবান কথা বলেছেন, ‘ কোনও আবেগের বশবর্তী হয়ে, আমি আমার যাত্রা শুরু করিনি। আমি শুধুই কর্পোরেট জীবন থেকে বেরিয়ে এসে পৃথক কিছু করতে চেয়েছিলাম। বিমান পরিষেবার চাকরি ছেড়ে দেবার পর আমি দৌড়নো শুরু করি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি আমার প্যাশনে পরিণত হয়।’ সুফিয়ার সংযোজন, যখন নতুন কোনও কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন, তখন সেখানে যেনও কোনও দ্বন্দ্ব বা সন্দেহ জায়গা না পায়। তবে এর পাশাপাশি যে প্রশ্নটা সবার মনে উঁকি দিচ্ছে যে চাকরি ছেড়ে নিজের ইচ্ছেপূরণ কীকরে সম্ভব, তা নিয়েও মন খুলেছেন তিনি। সুফিয়া জানিয়েছেন, ‘আমার জীবন সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ ছিল আর্থিক দিকটাই। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমি সমর্থন পেতে শুরু করি। আমি কোনও দিন নিজের উপর বিশ্বাস হারায়নি।’
আরও দেখুন
+ There are no comments
Add yours