নয়াদিল্লি: জম্মু-কাশ্মীরে ভারী বর্ষণ জেরে এবার চেনাব নদীর বাগলিহার বাঁধের গেট খুলল ভারত (Indus Waters Treaty)। রিয়াসির সালাল বাঁধও খুলে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে পাকিস্তানে বন্যার আশঙ্কা করা হয়েছে।
বাগলিহার বাঁধের গেট খুলল ভারত: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনার পরই, সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। চেনাবও চুক্তিরই অংশ। কেন্দ্রীয় সরকার বৃহস্পতিবার রামবানের চেনাব নদীর উপর বাগলিহার জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাঁধের দুটি গেট খুলে দিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জলস্তর বেড়ে চলেছে। তা নিয়ন্ত্রণের জন্য গেটগুলি খোলা হয়েছে বলে জানা গেছে। পাকিস্তানের ৮০ শতাংশ কৃষিকাজই সিন্ধুর জলের উপর নির্ভরশীল। করাচি, লাহৌর, মুলতানে বস্ত্র, চিনি উৎপাদনকারী সংস্থাগুলো সরাসরি সিন্ধুর জল ব্যবহার করে। গত কয়েকদিন ধরে জম্মু-কাশ্মীর ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। তাতে বাড়ছে নদীর জলস্তর। এই আবহে খুলে দেওয়া হল বাঁধের গেট। ফলে পাকিস্তানে হতে পারে বন্যা।
সিন্ধু জলচুক্তি অনুযায়ী, ইরাবতী, শতদ্রু এবং বিপাশা নদীর জলের উপর ভারতের নিয়ন্ত্রণ কায়েম হয়। অন্য দিকে, সিন্ধু, ঝিলম এবং চন্দ্রভাগা জলের উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম হয় পাকিস্তানের। পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণাধীন নদী থেকে জল ব্যবহার করা গেলেও, বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া সেখানে কোনও নির্মাণ বা সংরক্ষণ প্রকল্প ভারত গড়ে তুলতে পারবে না বলে সাফ জানানো হয় চুক্তিতে। যদিও জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণে ছাড়পত্র দেওয়া হয় শর্তসাপেক্ষে। সেশেত্রে প্রকল্পের স্থান, নকশার উপর সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে বলে জানানো হয়। পাকিস্তানকে নিজের মতামত জানানোর অধিকার পায়। দুই দেশের সম্মতিতেই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল যদিও, কিন্তু চুক্তি নিয়ে কম অনুযোগ ছিল না। ভারতের তরফে অভিযোগ তোলা হয়, চুক্তিতে বিশেষ পরিস্থিতিতে জল সংরক্ষণে ছাড়পত্র দেওয়া হলেও, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার বৈরিতার দরুণ তাতে বাধা সৃষ্টি করে পাকিস্তান। জম্মু ও কাশ্মীরের বিতর্কিত এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত নদীর জল নিয়েও ঝামেলা বাধে দুই দেশের মধ্যে। চন্দ্রভাগা নদীর উপর সালাল জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, টুলবুল প্রকল্প এবং কিষেণগঙ্গার উপর জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়েও সংঘাত দেখা দেয়।
পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার প্রত্যাঘাতে অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য এসেছে। এবার ভারতীয় বায়ুসেনাকে ফ্রি হ্যান্ড দিল মোদি সরকার। সন্দেহজনক কোনও কিছু দেখলে তা প্রতিহত করতে প্রয়োজনে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাহলে কি সীমান্তে কোনও কিছুর আশঙ্কা করছে কেন্দ্রীয় সরকার? এর মধ্যেই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। পহেলগাঁওকাণ্ডের পর নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর লাগাতার গোলাগুলি বর্ষণ করছে পাক সেনা। অপারেশন সিঁদুুরের পর তারা মরিয়া চেষ্টা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা। সেই কারণেই ভারতের আকাশসীমায় সন্দেহজনক কোনও কিছু দেখলে তা প্রতিহত
করার জন্য বায়ুসেনাকে ফ্রি হ্যান্ড দিল কেন্দ্র।
আরও দেখুন