নয়াদিল্লি: ভারতীয় ক্রিকেটের বিশ্বজয়ী দলের কোচ তিনি, হালে দলের কোচ হিসাবে জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও। তবে কোচ গৌতম গম্ভীরের (Gautam Gambhir) আমলে দীর্ঘ সময় পরে ঘরের মাঠে পরাজয়, ভারতীয় দলের অজ়িভূমে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে হার, ব্যর্থতাও কিন্তু কম নেই। আর ব্য়র্থতার সঙ্গেই এসেছে তীব্র সমালোচনা। এবার ABP Network India at 2047-এর সম্মেলনে সেইসব সমালোচনার জবাব দিলেন ভারতীয় দলের প্রধান কোচ গম্ভীর।
গৌতি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন তিনি যে সমালোচিত হবেন, তা দলের যখন দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তখনই জানতেন। সেই সমালোচনা নিয়ে তাঁর কোনও সমস্য়া নেই। তিনি বলেন, ‘এই চড়াই উতরাইটা তো কাজের অংশ। আমি যখন ১৪০ কোটি দেশবাসীর হেড কোচ হওয়ার দায়িত্ব নিয়েছিলাম আমি জানতাম যে এটা হবে। ১০ মাস দলের প্রতিটা পারফরম্যান্স যখন আতস কাচের তলায় রাখা হয়, তখন সমালোচনা বা বাহবা, দুটোই আসবে। সবসময় সাফল্যের গ্রাফ যে উপরের দিকে থাকবে না, সেটা তো আমি ভালভাবেই জানতাম। আর এই নিয়ে আমার সমস্যা নেই। আমার কাজ দলের সকল ক্রিকেটারদের সঙ্গে মিলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করা এবং সেটা আমার কোচিং কেরিয়ারের শেষ দিন পর্যন্ত এমনই থাকবে।’
তবে দেশবাসীর সমালোচনায় তাঁর কোনও সমস্যা না থাকলেও, গম্ভীর কিন্তু প্রাক্তন ক্রিকেটারদের অহেতুক সমালোচনা নিয়ে একেবারেই সন্তুষ্ট নন। বিস্ফোরক ভারতীয় কোচ বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নিয়েছি মাত্র আট মাস হয়েছে। বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে হার, অন্যান্য সিরিজ়ে হারের পর সমালোচনায় আমার কোনও সমস্যা নেই আগেই বলেছি। লোকজনের কাজ সমালোচনা করা এবং সে করতেই পারেন তাঁরা। কিন্তু কেউ কেউ ২০-২৫ বছর ধরে ধারাভাষ্য দেওয়ার বক্সে বসে আমার প্রতিটা বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ওঁরা ভাবেন যে ভারতীয় ক্রিকেট ওঁদের জমিদারি। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটটা কারুর জমিদারি নয়, ১৪০ কোটি ভারতবাসীর গর্ব এটা এবং এটা এমনই থাকবে। ওঁরা আমার রেকর্ড থেকে পরিসংখ্যান থেকে কনকাসন, এমনকী পুরস্কারপ্রাপ্ত অর্থ নিয়ে পর্যন্ত প্রশ্ন তুলেছেন।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি সমালোচকদের জবাব দেওয়ার জন্য কিন্তু কোচ হয়নি, না জবাব দেওয়ার কোনও প্রয়োজন আছে বলে মনে করি। আমি কোচ হয়েছি ওই ১০ বছরের ছেলেটার জন্য যে রোদের মধ্যে ছয়, সাত ঘণ্টা বসে ম্যাচ দেখতে আসে। ও যদি খুশি খুশি বাড়ি ফেরে তাহলে সেটা আমার সাফল্য। কমেন্ট্র বক্সে কে কী বলল, ইউটিউবে কে আমার বিষয়ে কী বললেন, ব্রডকাস্টার, মিডিয়া কী বলল, সেটা নিয়ে ভাবা আমার কাজ নয়। ওদের ভুল প্রমাণ করার কোনও দায় নেই আমার। আমার কাজ সকলের মুখে হাসি ফোটানো।’
গম্ভীর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের অর্থদান না করার জন্যও অনেকে তাঁর দিকে আঙুল তুলেছিলেন। তাঁদের উদ্দেশে চাঁচাছোলা গৌতি বলেন, ‘দেশবাসীকে আমি এই টাকা নিয়ে কী করেছি, তা বলার দরকার নেই। কিন্তু দেশবাসীর এটা জানার দরকার যারা এমন বলছে, তাঁরা দেশে কাজ করে, টাকা কামিয়ে বাইরে নিয়ে যায়। কত বছর ধরে এনআরআই হয়ে বসে আছেন। আমি ভারতবাসী এবং ভারতবাসীই থাকব। কর বাঁচানোর জন্য এনআরআই হবে। যাঁরা নিজেরা এমন তাঁদের অন্যদের দিকে আঙুল তোলার আগে লক্ষবার ভাবা উচিত।’
আরও দেখুন